‘ঘুম ভেঙে দেখি চারপাশে তালিবানের পতাকা’, দখলে জালালাবাদ, বেঁচে আছে শুধু কাবুল

আফগানিস্তানের মূল শহরগুলির প্রায় সবকটিই চলে গিয়েছে তালিবানের দখলে। এবার জালালাবাদেরও দখল নিল তালিবান।

'ঘুম ভেঙে দেখি চারপাশে তালিবানের পতাকা', দখলে জালালাবাদ, বেঁচে আছে শুধু কাবুল
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 15, 2021 | 10:26 AM

কাবুল: পেন্টাগনের তরফ থেকে আগেই আঁচ করা হয়েছিল আফগানিস্তানের পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে। তবে এত দ্রুত একের পর এক শহর সন্ত্রাসবাদীদের দখলে চলে যাবে, তা ভাবেনি আফগান সরকার। একাধিক প্রাদেশিক রাজধানী সহ আফগানিস্তানে বড় শহরগুলি পরপর চলে গিয়েছে তালিবানদের দখলে। এ বার তালিবানদের শাসন শুরু জালালাবাদেও। দেশের বড় শহর বলতে পড়ে রইল শুধুই রাজধানী কাবুল, যেখানে এখনও আফগান সরকারের শাসন জারি রয়েছে।

রবিবারই আফগানিস্তানের পূর্বের শহর জালালাবাদের দখল নিয়েছে তালিবান। মাজার-ই-শরিফ দখল করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জালালাবাদ চলে গিয়েছে তালিবানের দখলে। আহমেদ ওয়ালি নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘ঘুম ভেঙে উঠে দেখি শহর জুড়ে তালিবানের সাদা পতাকা। সোশ্যাল মিডিয়ায় জালালাবাদ দখলের যে ঘোষণা তারা করেছিল, সেটাই সত্যি প্রমাণিত হয়েছে। কোনও যুদ্ধ ছাড়াই শহর দখল করেছে তারা।’

আপাতত আফগান সরকারের হাতে পড়ে রই শুধুমাত্র কাবুল। এবার হয় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পথে যেতে হবে আফগান সরকারকে, নাহলে নির্বিবাদে তালিবানদের হাতে তুলে দিতে হবে রাজধানী শহর। কাবুল থেকে ঘণ্টাখানেকের পথ পেরলেই অপেক্ষা করছে তালিবান। রাজধানী যেন তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়, এমনটাই দাবি সন্ত্রাসবাদীদের। জানা গিয়েছে, খুব কম সময়ের মধ্যেই মাজার-ই-শরিফ দখল করেছে তালিবান। সেখানে শহর জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তাদের গাড়ি, বাইক। শূন্যে গুলি চালাচ্ছে তারা।

গতকালই  আফগান প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি আফগানবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, বিগত ২০ বছরে ফিরে পাওয়া গৌরব হারাতে দেবেন না তিনি। দেশের সেনাবাহিনীকে নিজেদের অবস্থানে ফেরানোই যে মূল লক্ষ্য, সে কথাও সাফ জানিয়েছেন ঘানি। যুদ্ধ বন্ধ করার জন্যআফগান সরকার উদ্যোগী বলেও জানিয়েছেন তিনি। যখন তালিবান একেবারে রাজধানীর দরজায় এসে কড়া নাড়ছে, সেই পরিস্থিতিতে আসরাফ ঘানি বলেন, ‘আমাদের কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সেনাবাহিনীকে নিজেদের অবস্থানে ফিরিয়ে আনা। আমি কখনও যুদ্ধ হতে দেব না, যাতে আফগানিস্তানের আরও মানুষের মৃত্যু হয়।’

এই পরিস্থিতিতে সব দেশই আফগানিস্তানের বসবাসকারী নাগরিকদের ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে। আমেরিকার তরফে জানানো হয়েছে, তাদের প্রায় কয়েক হাজার নাগরিককে এয়ারলিফ্ট করে উদ্ধার করে আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আমেরিকার তরফে ইতিমধ্যেই তিন হাজার সেনা পাঠানো হয়েছে কাবুলে মার্কিন দূতাবাসে আটকে থাকা আধিকারিকদের উদ্ধারের জন্য। অন্যদিকে, ব্রিটেনের তরফেও ৬০০ সেনা পাঠানো হচ্ছে ব্রিটিশ নাগরিকদের উদ্ধারের জন্য। আরও পড়ুন: জনবহুল শহর এক নিমেষে যেন ধ্বংসস্তূপ! ভূমিকম্পে ৩০০ ছাড়াল মৃতের সংখ্যা