Bangladesh News: শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলায় ‘সুপ্রিম’ পরাজয় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের
Nobel Laureate Dr. Mohammad Yunus: বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা খেলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মহম্মদ ইউনুস। আজ ইউনুসের করা আবেদন নাকচ করে দেয় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগ।
ঢাকা: সব আবেদন খারিজের পর এবার বিচারের মুখোমুখি হতেই হচ্ছে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা ড. মহম্মদ ইউনুসকে। আজ ইউনুসের করা আবেদন নাকচ করে দেয় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগ। সুপ্রিম কোর্টেও পরাজিত নোবেল জয়ী ড. ইউনুস (Dr. Yunus)। আজ এই রায়ের ফলে ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে মামলা চালাতে আর কোনও বাধা থাকল না।
আজ সোমবার (৮ মে) আপিল বিভাগের বিচারপতি মহম্মদ নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের একটি বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ড. ইউনুসের করা আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন। বাংলাদেশ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। এছাড়া এই মামলার শুনানিতেও উপস্থিত ছিলেন সরকারের পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন। ২০২২ সালের ১৭ অগাস্ট বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ ইউনুসের আবেদনে নিম্ন আদালতের রায় খারিজ করে দেয়। এরপর ড. মহম্মদ ইউনুস আপিল বিভাগে আবেদন করেন।
গ্রামীণ ব্যাঙ্কের একটি শাখা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকম। এই গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেল বিজয়ী ড. মহম্মদ ইউনুস। সরকার নির্দেশ দিয়েছে, এই সংস্থার লভ্যাংশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে। কিন্তু ইউনুসের সংস্থা তা দেয়নি বলেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে বাংলাদেশ সরকারের একটি অধিদফতর। ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান ড. ইউনুস সহ চার জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। ওই মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন ড. ইউনুস। ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেয়। এরপর সরকারি পক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করলে আজ এই রায় দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, আওয়ামি লিগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা ড. মহম্মদ ইউনুসের সঙ্গে বিবাদ সৃষ্টি হয়। এই বিবাদের ফলে ড. ইউনুস গ্রামীণ ব্যাঙ্কের প্রধান নির্বাহী বা ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে থাকতে পারবেন না বলে আইন আনা হয়। সেই আইনের ফলে গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ওই পদও ছাড়তে হয় আলোচিত এই অর্থনীতিবিদকে। বিভিন্ন সময়ে বর্তমান সরকার ও গ্রামীণ ব্যাঙ্ককে বিভিন্ন ইস্যুতে মুখোমুখি অবস্থানে দেখা গিয়েছে। বর্তমান সরকার উৎখাতে ড. ইউনুস চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয় আওয়ামি লিগের তরফে। পদ্মা সেতু থেকে বিশ্ব ব্যাঙ্কের অর্থ প্রত্যাহারের পিছনে ড. ইউনুসের হাত রয়েছে বলেও অভিযোগ করে থাকে বর্তমান সরকার। অন্যদিকে, ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে ড. ইউনুসকে হয়রানি ও গ্রামীণ ব্যাঙ্ককে বর্তমান সরকার ধংস করতে চায় বলে পাল্টা অভিযোগও উঠেছে। সব মিলিয়ে দু’পক্ষই এখন মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। সম্প্রতি জাতিসঙ্ঘের প্রাক্তন মহাসচিব বান কি মুন, প্রাক্তন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোর এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টনসহ ৪০ বিশ্ব নেতা নোবেল জয়ী ড. ইউনুসকে হয়রানি না করতে বাংলাদেশ সরকারকে খোলা চিঠি লেখেন। এই সময় তাঁরা ড. ইউনুসের প্রাপ্তিকে স্বীকৃতি দিতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। যা বাংলাদেশে সহ বিভিন্ন দেশে ব্যাপক আলোচিত হয়।