Giorgia Meloni: বাবা কমিউনিস্ট, ‘গ্রুপ সেক্স’ বিতর্কে পার্টনার, জর্জিয়া মেলোনি কীভাবে হয়ে উঠলেন ‘ডানপন্থী’ প্রধানমন্ত্রী?

Giorgia Meloni: প্রায় দশ বছর টেলিভিশন সাংবাদিক আন্দ্রে জিয়ামব্রুনোর সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন মেলোনি। ২০১৪ সালে টিভি স্টুডিওয় প্রথম সাক্ষাৎ তাঁদের। সেই সাক্ষাৎ গড়ায় প্রেমে। তাঁদের এক কন্যা রয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে প্রায় দশ বছরের সম্পর্ক ভাঙে আন্দ্রের একাধিক বিতর্কিত ও যৌনগন্ধী মন্তব্যের পর।

Giorgia Meloni: বাবা কমিউনিস্ট, 'গ্রুপ সেক্স' বিতর্কে পার্টনার,  জর্জিয়া মেলোনি কীভাবে হয়ে উঠলেন 'ডানপন্থী' প্রধানমন্ত্রী?
জি-৭ সম্মেলনের ফাঁকে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সেলফি তুললেন জর্জিয়া মেলোনি
Follow Us:
| Updated on: Jun 15, 2024 | 6:56 PM

রোম: অতিথিদের স্বাগত জানাতে হাতজোড় করে নমস্কার। ভারতে এই প্রথা চিরাচরিত। কিন্তু, অন্য দেশের কোনও রাষ্ট্রপ্রধান যদি এমন করেন? হইচই শুরু হবে। তেমনই হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির হাতজোড় করে স্বাগত জানানোর ছবি এই মুহূর্তে ভাইরাল। কৌতূহল বেড়েছে জর্জিয়া মেলোনিকে নিয়ে। ভারতের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে কী করতেন মেলোনি? জেনে নিন খুঁটিনাটি।

১৩ জুন ইটালির আপুলিয়াতে শুরু হয় ৫০ তম জি-৭ সম্মেলন। ১৫ জুন পর্যন্ত এই সম্মেলন হচ্ছে। সেই সম্মেলনে যোগ দিতে ইটালি যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেই সম্মেলনেই আগত রাষ্ট্রপ্রধানদের হাতজোড় করে নমস্কার করে স্বাগত জানান ইটালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি। সেই ছবিই এখন ভাইরাল।

মেলোনির পরিবার ও রাজনীতিতে যোগদান-

এই খবরটিও পড়ুন

১৯৭৭ সালের ১৫ জানুয়ারি রোমে জন্ম মেলোনির। তাঁর বাবার নাম ফ্রান্সেসকো মেলোনি। তাঁর মায়ের নাম অ্যানা। মেলোনির যখন ১ বছর বয়স, তখন ফ্রান্সেসকো তাঁদের ছেড়ে স্পেনে চলে যান। এবং দ্বিতীয় বিয়ে করেন। মেলোনির বাবা ইটালিয়ান কমিউনিস্ট পার্টির সমর্থক ছিলেন। ১৯৯৫ সালে মাদক পাচারের অভিযোগে ৯ বছরের কারাদণ্ড হয় ফ্রান্সেসকোর। মেলোনির সঙ্গে তিনি শেষবার যোগাযোগ করেছিলেন ২০০৬ সালে।

১৯৯২ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে ইটালিয়ান সোশ্যাল মুভমেন্টের (MSI) ইউথ ফ্রন্টের সদস্য হন মেলোনি। ১৯৯৫ সালে দলটি তাদের অস্তিত্ব হারায়। রাজনীতির পাশাপাশি এইসময় পড়াশোনাও চালিয়ে যান মেলোনি। ১৯৯৬ সালে তিনি স্নাতক হন।

MSI বিলুপ্ত হওয়ার পর ন্যাশনাল অ্যালায়ন্সে যোগ দেন তিনি। ২০০৬ সালে ইটালির সাধারণ নির্বাচনে জিতে চেম্বার অব ডেপুটিজ নির্বাচিত হন। একইসঙ্গে ওই বছরই সাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০০৮ সালে, মাত্র ৩১ বছর বয়সে ইটালির যুব মন্ত্রকের মন্ত্রী হন তিনি। ইটালির ইতিহাসে দ্বিতীয় কনিষ্ঠতম মন্ত্রী তিনি। ২০১১ সালের নভেম্বরে ইটালির প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সিলভিও বার্লুসকোনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হলে পদ যায় মেলোনির। ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দ্য পিপল অব ফ্রিডম পার্টির সদস্য ছিলেন তিনি। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে দ্য পিপল অব ফ্রিডম পার্টি ভেঙে ব্রাদার্স অব ইটালি গঠন করেন মেলোনিরা। এই মুহূর্তে ডানপন্থী ব্রাদার্স অব ইটালি দলের প্রেসিডেন্ট মেলোনি। ২০২২ সালে ইটালির সাধারণ নির্বাচনে জোটসঙ্গীদের নিয়ে কামাল দেখায় মেলোনির ব্রাদার্স অব ইটালি। তারপরই ইটালির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ২০২২ সালের ২২ অক্টোবর শপথ গ্রহণ করেন। মেলোনি ইটালির প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী।

বিতর্কের কেন্দ্রে যখন পার্টনার-

প্রায় দশ বছর টেলিভিশন সাংবাদিক আন্দ্রে জিয়ামব্রুনোর সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন মেলোনি। ২০১৪ সালে টিভি স্টুডিওয় প্রথম সাক্ষাৎ তাঁদের। সেই সাক্ষাৎ গড়ায় প্রেমে। তাঁদের এক কন্যা রয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে প্রায় দশ বছরের সম্পর্ক ভাঙে আন্দ্রের একাধিক বিতর্কিত ও যৌনগন্ধী মন্তব্যের পর। আন্দ্রের এক অনুষ্ঠানের একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে মহিলা সহকর্মীর প্রতি অশ্লীল মন্তব্য করতে শোনা যায় আন্দ্রেকে। ওই মহিলা সহকর্মীকে আন্দ্রে বলেন, “কেন আপনার সঙ্গে আমার আগে দেখা হয়নি?”

শুধু এই ভিডিয়ো নয়। একটি অডিয়োও ছড়িয়ে পড়েছিল। যেখানে মহিলা সহকর্মীদের ‘গ্রুপ সেক্সের’ প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ ওঠে আন্দ্রের বিরুদ্ধে। তারপরই দশ বছরের পার্টনারের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেন মেলোনি। একইসঙ্গে জানান, আন্দ্রের মন্তব্য নিয়ে তাঁকে বিচার করা উচিত নয়। বিরোধীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ব্যক্তিগত বিষয়ে আক্রমণ করে যাঁরা তাঁকে দুর্বল করার কথা ভাবছেন, তাঁরা কখনই সফল হবেন না।

হাতজোড় করে নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানাচ্ছেন জর্জিয়া মেলোনি

বছর সাতচল্লিশের মেলোনি একজন খ্রিস্টান এবং কনজারভেটিভ। জি-৭ সম্মেলনে তাঁর হাতজোড় করে নমস্কারের ছবি এখন ভাইরাল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জি-৭ সম্মেলনের ফাঁকে মেলোনির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। প্রধানমন্ত্রীর অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য মোদীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মেলোনি। অন্যদিকে, জি-৭ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য মেলোনিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মোদী।