Vladimir Putin-Xi Jinping: অমরত্বের সন্ধান পেয়ে গেলেন জিনপিং আর পুতিন? তাঁদের ‘গোপন কথা’ ফাঁস
SCO Summit: ট্রাম্প-ও নিশ্চয় হোয়াইট হাউসে বসে এই আলোচনার ভিডিও দেখেছেন, শুনেছেন। কারণ, তিনি নিজেই জানিয়েছেন টিভিতে তিনি চিনা সেনার প্যারেড দেখেছেন।

বেজিং: “অমরত্বের প্রত্যাশা নেই, নেই কোনও দাবি-দাওয়া…” সেই কবেই লিখেছেন কবীর সুমন। কিন্তু কট্টর আমেরিকা বিরোধী দুই দেশ চিন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টরা এখন অমরত্বই চাইছেন। না, ঠাট্টা নয়, কোনও সায়েন্স ফিকশনের স্ক্রিপ্ট নয়। তিয়ানানমেন স্কোয়ারে চিনা সেনার বিজয় দিবসের প্যারেডের ফাঁকে ‘অমরত্ব’ নিয়েই কথা বলতে শোনা গেল চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে। দুজনের গায়ে লাগানো মাইকে সেই কথাবার্তা ধরা পড়েছে। যা দেখেশুনে একাংশের মার্কিন গণমাধ্যম বলতে শুরু করেছে, দুই রাষ্ট্রপ্রধানই আজীবন নিজেদের দেশে রাজত্ব (পড়ুন শাসন) চালিয়ে যেতে চান।
মার্কিন মিডিয়ার খোঁচা সরিয়ে রাখলেও বলতে হয়, পুতিন ও শি নিজেদের মধ্যে কিন্তু অমরত্বের বিষয়ে ঠাট্টা বা লঘু চালে গল্প করছিলেন না। ৭২ বছরের দুই রাষ্ট্রনেতাই যথেষ্ট সিরিয়াস মুডে এই কথা আলোচনা করছিলেন। শি জিনপিংকে বলতে শোনা যায়, ‘মেডিক্যাল সায়েন্সের যা উন্নতি হয়েছে তাতে এখন ৭০ বছর অবধিও শিশুর মতো বেঁচে থাকা সম্ভব। আগে তো ৭০ বছরে মানুষ মারা যাওয়ার বয়সে পৌঁছে যেত।’ মাইকে এই কথাবার্তা ধরা পড়ে, একইসঙ্গে ক্যামেরাতেও দুই নেতার কথা বলার ছবি দেখতে পাওয়া যায়। শি ও পুতিনের সঙ্গে থাকা ট্রান্সলেটররা একে অপরের কথাকে অনুবাদ করে দিচ্ছিলেন। সেই সময় সঙ্গে ছিলেন উত্তর কোরিয়ার খ্যাপাটে যুদ্ধবাজ নেতা কিম জং উন-ও। যিনি ৬ বছর পর শি-এর সঙ্গে দেখা করতে বেজিংয়ে পৌঁছেছেন। তাঁকে ম্যান্ডারিন ভাষায় শি বলেন, ‘এতদিন পর আপনাকে দেখে আমি সত্যি খুব খুশি হয়েছি।’
তবে আসল কথাটা এরপর বলে বসেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। তিয়ানানমেন স্কোয়ারের ফটকের সামনে দিয়ে শি ও পুতিন হেঁটে আসছিলেন। ক্যামেরা লং ফ্রেমে দুজনকে ধরেছে। সে সময় পুতিনকে বলতে শোনা যায়, ‘আর কয়েক বছরের মধ্যে বায়োটেকনোলজি এমন পর্যায়ে পৌঁছবে, অঙ্গ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে মানুষের আরও বেশিদিন সুস্থভাবে বাঁচতে পারবে। এমনকী অমরও হতে পারবে।’ শি উত্তর দেন, ‘খুব বেশিদিন নয়, এই শতাব্দীতেই মানুষের পক্ষে ১৫০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকা সম্ভব হবে।’ তাঁর অনুবাদক একথা পুতিনকে বলেন। মুহূর্তের মধ্যে দুই রাষ্ট্রনেতার এই কথোপকথন সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
পরে পুতিন নিজেও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই প্রসঙ্গে আলোচনার কথা স্বীকার করে নেন। বলেন, ‘মানুষের আয়ু বাড়ছে। সবটাই মেডিক্যাল সায়েন্সের কল্যাণে। অঙ্গ প্রতিস্থাপন মানুষকে বেশিদিন বাঁচার আশা দেখাচ্ছে।’ পুতিন ও শি-এর মধ্যে এই আলোচনার সময় সেখানেই ছিলেন কিম-ও। তিন রাষ্ট্রনেতার মধ্যেই মিল হল, এদের কেউ-ই পরবর্তী প্রজন্মের হাতে স্বেচ্ছায় নিজ নিজ দেশের শাসনভার তুলে দিতে কোনও পদক্ষেপই করতে চান না। চান, নিজেরাই একচ্ছত্র শাসন চালিয়ে যাবেন। তার জন্য এক এক নেতা এক একরকম পদক্ষেপ করেছেন ইতিমধ্যেই। ২০১৮-তে দেশের সংবিধান বদলে শি জিনপিং নিজেই আজীবন প্রেসিডেন্ট পদে থেকে যাওয়ার কানুন লাগু করেছেন। পুতিন-ও নির্বাচনের পাট আপাতত তুলে দিয়ে আপাতত ২০৩৫ পর্যন্ত নিজের গদি নিশ্চিত করেছেন। কিম নিজের পরিবারেরই যে যে সদস্যরা উত্তর কোরিয়ার মসনদে বসার চেষ্টা করেছে, সকলকে গুপ্তচর লাগিয়ে খতম করেছেন। এই তিনজনের মধ্যে অবশ্য তাঁর বয়স-ই সবচেয়ে কম, ৪১।
এখন প্রশ্ন হল, ট্রাম্প-ও নিশ্চয় হোয়াইট হাউসে বসে এই আলোচনার ভিডিও দেখেছেন, শুনেছেন। কারণ, তিনি নিজেই জানিয়েছেন টিভিতে তিনি চিনা সেনার প্যারেড দেখেছেন। নিশ্চয় ওই প্যারেডের ফাঁকেই এই আলোচনার খবরও তাঁর কাছে গেছে। ট্রাম্প কী প্রতিক্রিয়া দেবেন? ট্রাম্পের স্বাস্থ্য নিয়েও তো অনেক গুজব শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। তাঁর হাতে একটি গোল কালো স্থায়ী দাগ কী কারণে হয়েছে, কেন বারবার মেক-আপে সেই দাগ ঢেকে ট্রাম্পকে সাংবাদিক সম্মেলন করতে হচ্ছে, এই নিয়েও তো প্রশ্ন শুনতে হচ্ছে খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্টকে। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের দুই ‘শত্রু’ যদি অমরত্ব নিয়ে আলোচনা করে শিরোনামে আসেন, সেটা কি ট্রাম্পের মাথাব্যথা আরও বাড়াবে না?
