News9 Global Summit: ভারত-জার্মানি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক নিউজ৯ গ্লোবাল সামিট: টিভি৯ নেটওয়ার্কের এমডি ও সিইও বরুণ দাস
News9 Global Summit: এদিন জার্মানির শিল্পনগরী স্টুটগার্টের ফুটবল গ্রাউন্ড এমএইচপি অ্যারেনায় হয়ে গেল নিউজ৯ গ্লোবাল সামিটের সূচনা। এদিনের উদ্বোধনী ভাষণের শুরুতেই বরুণ দাস বলেন, “সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের সবথেকে বড় নিউজ নেটওয়ার্ক এখন স্টুটগার্টে। আমাদের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য জার্মানিকে ধন্যবাদ জানাই।”
অবশেষে অপেক্ষার অবসান। নিউজ৯ গ্লোবাল সামিটের জার্মানি সংস্করণে স্টুটগার্ড শহরে বসল চাঁদের হাট। রাজনীতি থেকে বিনোদন, বাণিজ্য থেকে তথ্য-প্রযুক্তি এবং খেলার দুনিয়ার রথী-মহারথীদের উপস্থিতিতে টিভি ৯ নেটওয়ার্কের এই আয়োজন এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে চলেছে। এই শীর্ষ বৈঠকে বক্তব্য রাখতে চলেছেন খোদ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফের একবার ‘বিকশিত ভারতের’ কথা উঠে আসবে আন্তর্জাতিক আঙিনায়। শুধু তাই নয়, ২১ থেকে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত চলা এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে চলেছেন ভারত ও জার্মানির তাবড় রাষ্ট্রনেতারা। এই প্রয়াস দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড় ছাপ ফেলতে চলেছে বলে মনে করছেন টিভি৯ নেটওয়ার্কের এমডি ও সিইও বরুণ দাস। এদিন তাঁর উদ্বোধনী ভাষণেও শোনা গেল সেই প্রত্যয়ের ধ্বনি। শুরুতেই ভারতের বৃহত্তম নিউজ নেটওয়ার্ক টিভি৯-কে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য জার্মানিকে বিশেষ ধন্যবাদও জানিয়েছেন তিনি।
এদিন জার্মানির শিল্পনগরী স্টুটগার্টের ফুটবল গ্রাউন্ড এমএইচপি অ্যারেনায় নিউজ ৯ গ্লোবাল সামিটের সূচনা হয়েছে। উদ্বোধনী সম্ভাষণে বরুণ দাস বলেন, “সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের সবথেকে বড় নিউজ নেটওয়ার্ক এখন স্টুটগার্টে। আমাদের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য জার্মানিকে ধন্যবাদ জানাই। এটা টিভি৯ নেটওয়ার্ক এবং আমাদের সমস্ত সহ-আয়োজকদের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।”
বঙ্গসন্তানের কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ…
রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধৃত করে বঙ্গসন্তান বরুন দাস বলেন, “জীবন এক মহাযাত্রা। আমি প্রায়ই আমার পরিবার এবং বন্ধুদের বলি আমাকে যদি বসবাসের জন্য ভারত ছাড়া অন্য কোনও দেশ বেছে নিতে হয়, তাহলে সেটা হবে জার্মানি।” তিনি আরও বলেন, “আমি নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেশ থেকে এসেছি। রবি ঠাকুরের নাম জার্মানিতে বিশেষভাবে পরিচিত।”
রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে বলতে গিয়ে বরুণ দাস এদিন বলেন, ১৯২০ থেকে ১৯৩০ সালের মধ্যে দশ বছরে তিনবার জার্মানি সফর করেছিলেন কবিগুরু। গিয়েছিলেন ১৯২১, ১৯২৬ এবং ১৯৩০ সালে। তাঁর রচনাগুলি জার্মান লেখক মার্টিন কাম্পচেন অনুবাদও করেছেন। মার্টিন তো বলেছেন, যেখানেই তিনি রবি ঠাকুরকে নিয়ে কথা বলতেন সেখানেই হলগুলিতে তিল ধারণের জায়গা পর্যন্ত থাকত না। এমনকী, হলে ঢুকতে না পেরে হাতাহাতি-মারামারিতেও জড়াতে দেখা গিয়েছে বহু মানুষকে। জার্মান মিডিয়া বিশ্বকবিকে ‘প্রাচ্যের জ্ঞানী মানুষ’ বলে উল্লেখ করেছে, তাও প্রায় এক শতাব্দী আগে।
শুরু থেকেই গোটা অনুষ্ঠান সম্পর্কে রীতিমতো উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায় বরুণ দাসকে। তিনি বলেন, “সত্যিই এটা অবাক করা ঘটনা যে আমি আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাতে আজ এখানে দাঁড়িয়ে রয়েছি। ভারতের সংবাদমাধ্যমের গ্লোবাল সামিট হচ্ছে বিশ্বজনীন ভেন্যুতে। তাও আবার জার্মানির স্টুটগার্ট শহরে।” দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত আরও শক্ত করতে যে এই সামিট বড় ভূমিকা রাখতে চলেছে তাও এদিন বারবার মনে করান টিভি৯ নেটওয়ার্কের এমডি ও সিইও। তিনি সাফ বলেন, “নতুন একটা মিডিয়া উদ্যোগ, উন্নমূলক প্রচার, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পেরে আলাদা একটা অনুভূতি রয়েছে। ভারত এবং জার্মানির জাতীয় সঙ্গীত একসঙ্গে গাওয়ার স্মৃতিও আজীবন মনে থেকে যাবে।”
ভাষা বন্ধন…
বরুণ দাস এদিন কথা বলেন সংস্কৃত এবং জার্মান ভাষার সেতুবন্ধন নিয়েও। বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে যোগ ছাড়াও, ভারতের প্রাচীনতম ভাষা সংস্কৃত এবং জার্মানের মধ্যে বন্ধন দেখেও আমি অবাক হয়েছি। হেনরিক রথ হলেন প্রথম জার্মান নাগরিক যিনি সংস্কৃতে মাস্টার্স করেছিলেন। ভারত ভ্রমণও করেছিলেন। ভারতীয় সংস্কৃতির রহস্য দ্বারা মন্ত্রমুগ্ধ হয়েছিলেন। ফ্রেডরিখ শ্লেগেল এবং অগাস্ট শ্লেগেল সংস্কৃত ভাষার পেছনের বিশেষত্ব নিয়ে গভীর গবেষণা করেছেন। এখন জার্মানির বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সংস্কৃত পড়ানো হচ্ছে। এটি আসলেই এমন এক ডিএনএ যা ভারত ও জার্মানিকে জুড়ে রাখে।
বরুণবাবুর দাবি, এই সম্মেলন ভারত-জার্মানি সম্পর্ককে আরও নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি নতুন পথ নির্দেশিকা তৈরি করবে। তাঁর কথায়, “আমি আনন্দিত কারণ এই নিউজ ৯ গ্লোবাল সামিটে জার্মানি এবং ভারতের সম্পর্ক নতুন শিখরে পৌঁছনোর ব্রহ্ম মুহূর্তে আমাদের অনেক সুযোগ্য নেতাও উপস্থিত রয়েছেন এখানে। আমি রেল, তথ্য-সম্প্রচার, ইলেকট্রনিক্স-তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ ও উন্নয়ন মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। তাঁরা এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ভারত থেকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছেন। আমরা সৌভাগ্যবান যে জার্মানির দুই বিশিষ্ট নেতা তথা ফেডারেল মন্ত্রী সেম ওজডেমির এবং বাডেন-ভ্যুর্টেমবের্গর মন্ত্রী উইলফ্রেড ক্রেচম্যানও আগামী দুই দিনের বৈঠকে আমাদের সঙ্গে যোগ দেবেন।”
এরপরই টিভি ৯ নেটওয়ার্কের এমডি ও সিইও সোজা চলে আসেন মোদীর প্রসঙ্গে। বলেন, “এই সম্মেলনের সবচেয়ে বিশেষ মুহূর্ত দেখা যাবে আগামীকাল সন্ধ্যায়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মূল ভাষণ শুনতে পাবেন আপনারা।” এরপরই ফের একবার অনুষ্ঠানের সমস্ত জার্মান সহযোগী, সহ-আয়োজক এফএউ ইএফবি স্টুটগার্ট এবং বাডেন-ভ্যুর্টেমবের্গ প্রশাসনকে আন্তরিকভাবে পাশে থাকার জন্য বিশেষ ধন্যবাদ জানান তিনি। চমৎকার অংশীদারিত্বের জন্য ধন্যবাদ জানান রুভেনকেও। বাডেন-ভ্যুর্টেমবের্গের ফার্স্ট সেক্রেটারি ফ্লোরিয়ান হাসলারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা আজ সন্ধ্যায় আপনাদের কথা শোনার জন্য মুখিয়ে রয়েছি।” এর পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “বুন্দেসলিগা এবং ডিএফবি-পোকালের মতো সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ জার্মান ক্রিড়া প্রতিষ্ঠানকে আমাদের অংশীদার হিসেবে পেয়ে আমরা মুগ্ধ। আজকের এই মহাসমারোহের সন্ধ্যা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার বক্তৃতা দিয়েই শুরু হবে।”