Budget 2024: সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের টিকায় বড় পদক্ষেপ মোদী সরকারের, কীভাবে বাঁচবেন জেনে নিন
Cervical Cancer Vaccination: সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার বলতে বোঝায় জরায়ুর মুখের ক্যান্সার। এই ক্যান্সারের প্রধান কারণ হল, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (HPV)। মোট ২০০টি ভাইরাসের সংমিশ্রণ হল HPV। এই ভাইরাসের সংক্রমণ খুবই সাধারণ ব্যাপার। যৌন সম্পর্কের মাধ্যমেও HPV সংক্রমিত হয়। চিকিৎসকদের মতে, ভ্যাকসিনের মাধ্যমে সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়।
নয়া দিল্লি: লোকসভা ভোটের আগে এবারের অন্তর্বর্তী বাজেটে মহিলাদের স্বাস্থ্যের জন্য বড় ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। মহিলাদের একটি বড় সমস্যা হল সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার। প্রতি বছর এই রোগে আক্রান্ত হয়ে দেশে বহু মহিলার মৃত্যু হয়। তাই সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার প্রতিরোধে টিকাকরণের উপর জোর দিতে চলেছে কেন্দ্র। এদিন বাজেটের বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেন, ৯ বছর থেকে ১৪ বছর বয়সি মেয়েদের সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের টিকা দেওয়ার উপর জোর দেবে সরকার।
ভারতে সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার
বর্তমানে ভারতে ১৫ বছর ও তার বেশি বয়সি ৫১১.৪ মিলিয়ন মহিলা সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার কী?
সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার বলতে বোঝায় জরায়ুর মুখের ক্যান্সার। এই ক্যান্সারের প্রধান কারণ হল, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (HPV)। মোট ২০০টি ভাইরাসের সংমিশ্রণ হল HPV। এই ভাইরাসের সংক্রমণ খুবই সাধারণ ব্যাপার। যৌন সম্পর্কের মাধ্যমেও HPV সংক্রমিত হয়। হু-র মতে, HPV সংক্রমণ মানেই ক্যান্সার নয়। অনেক ধরনের সংক্রমণ হয়। শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকলে সেটা প্রতিরোধ করা যায়। চিকিৎসকদের মতে, ভ্যাকসিনের মাধ্যমে সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়।
সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের উপসর্গ
সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের উপসর্গ প্রাথমিকভাবে বোঝা যায় না। এই রোগ আরও ছড়ালে উপসর্গ দেখা দেয়। সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের সাধারণ উপসর্গগুলি হল, যোনি থেকে রক্তপাত, মেনোপজর পর রক্তপাত, যোনি থেকে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব বের হওয়া, তলপেটে অসহ্য যন্ত্রণা এবং সহবাসের পর যন্ত্রণা।
সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার প্রতিরোধ
বিশেষজ্ঞদের মতে, সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব এবং এটি নিরাময়যোগ্য। প্রথম ধাপে রোগ ধরা পড়লে সেটি নিরাময় সম্ভব। সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার প্রতিরোধের অন্যতম উপায় হল, ভ্যাকসিনেশন। নয়ডার নিউবার্গ ডায়গনস্টিকস ল্যাবরেটরির প্রধান ডা. বিজ্ঞান মিশ্র জানান, নিয়মিত ভ্যাকসিনেশনের মাধ্যমে সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার নিরাময় করা যায়। ভ্যাকসিনেশন ব্যাপকভাবে শুরু করা গেলে ভবিষ্যতে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিনেশনের নিয়ম
সার্ভাইক্যাল ক্যানসার ঠেকাতে ৯ বছর থেকে ২৬ বছর বয়সি মেয়েদের ভ্যাকসিনের ২-৩টি ডোজ দেওয়ার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ৯ বছর থেকে ১৪ বছর বয়সে এই রোগে সংক্রমণের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি থাকে। তাই এই সময়ের মধ্যেই ভ্যাকসিন নেওয়ার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এই বয়সের মধ্যে সাধারণত ভ্যাকসিনের ২টি ডোজ দেওয়া হয়।
ভারতে তৈরি ভ্যাকসিন
সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার প্রতিরোধে গত বছরের জানুয়ারিতে ভারতের প্রথম দেশি HPV ভ্যাকসিন বাজারে আসে। পুনের সিরাম ইনস্টিটিউ অফ ইন্ডিয়া এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছে। এবার জাতীয় স্তরে সার্ভিকাল ক্যান্সার প্রোগ্রাম চালু করার উদ্য়োগ নেওয়ার কথা ঘোষণা করল কেন্দ্র। সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি এই ভ্যাকসিনের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের থেকে কম হবে, ২০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যেতে পারে।
প্রসঙ্গত, ভারতে সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের স্ক্রিনিং খুব কম হয়। হু-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের পরীক্ষা করিয়েছেন এমন মহিলার হার কেবল তামিলনাড়তে ৭ শতাংশ। কেরল, মহারাষ্ট্র-সহ কয়েকটি রাজ্যে এই হার ১ শতাংশ এবং অন্য রাজ্যগুলিতে ১ শতাংশেরও কম হার। এবার কেন্দ্রের তরফে সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার ভ্যাকসিনেশনের উপর জোর দেওয়া হলে এই রোগের স্ক্রিনিং বাড়বে এবং রোগ প্রতিরোধ করা সহজ হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।