Anantkumar Hegde: ‘বিজেপিকে দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জেতালেই সংবিধান থেকে সরবে ধর্মনিরপেক্ষ’
Anantkumar Hegde: বিজেপি সাংসদের অভিযোগ, কংগ্রেস সংবিধানের প্রস্তাবনাকে বিকৃত করেছিল এবং এতে অপ্রয়োজনীয় সংযোজন করেছিল। অনন্তকুমার হেগড়ে জানিয়েছেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা সংশোধনের জন্য, সংসদের উভয় কক্ষে বিজেপির দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাগবে। তিনি জানিয়েছেন, এর জন্য বিজেপিকে ২০টিরও বেশি রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে হবে।
বেঙ্গালুরু: ছয় বছর পর আগেই অনন্তকুমার হেগড়ে বলেছিলেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দটি সরিয়ে দেবে বিজেপি। রবিবার (১০ মার্চ) ফের একবার এই প্রসঙ্গ তুললেন বিজেপি সাংসদ। এদিন, তিনি দেশের সকল ভোটারদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, সংবিধান বদল করতে চাইলে লোকসভায় বিজেপির দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিজেপি সাংসদের অভিযোগ, কংগ্রেস সংবিধানের প্রস্তাবনাকে বিকৃত করেছিল এবং এতে অপ্রয়োজনীয় সংযোজন করেছিল। অনন্তকুমার হেগড়ে জানিয়েছেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা সংশোধনের জন্য, সংসদের উভয় কক্ষে বিজেপির দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাগবে। তিনি জানিয়েছেন, এর জন্য বিজেপিকে ২০টিরও বেশি রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে হবে।
কর্নাটক থেকে ছয়বার লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন অনন্ত কুমার হেগড়ে। এদিন তিনি বলেন, “কংগ্রেস অমৌলিক অপ্রয়োজনীয় জিনিস জোর করে সংবিধানে যুক্ত করেছে। একে বিকৃত করেছে। বিশেষ করে হিন্দু সমাজকে দমন করার লক্ষ্যে আইন এনেছে। বর্তমানে বিজেপির যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, তাতে সংবিধান সংশোধন বা এই সব আইন পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। অনেকে মনে করে, লোকসভায় কংগ্রেস নেই এবং লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী মোদীর দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে বলেই এটা করা যেতে পারে। কিন্তু তা সম্ভব নয়। সংবিধান পরিবর্তন করার জন্য, লোকসভা এবং রাজ্যসভায় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা এবং দুই-তৃতীয়াংশ রাজ্যে বিজেপিকে জিততে হবে। প্রধানমন্ত্রী মোদী স্লোগান দিয়েছেন, ‘আব কি বার ৪০০ পার। ৪০০-র বেশি আসন চাই কেন? লোকসভায় আমাদের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, কিন্তু, রাজ্যসভায় আমাদের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। রাজ্য সরকারগুলিতেও, আমাদের পর্যাপ্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই।”
অনন্ত হেগড়ের মতে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ-কে ৪০০-র বেশি আসন জিতলে, রাজ্যসভাতেও একই রকমের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারবে বিজেপি। দুই-তৃতীয়াংশ রাজ্যেও ক্ষমতায় আসার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে এই ৪০০ আসনে জয়। কর্নাটকের সাম্প্রতিক রাজ্যসভা নির্বাচনের কথা উল্লেখ করেন তিনি। কংগ্রেস তিনটি আসন জিতেছিল, বিজেপি পেয়েছিল মাত্র একটি আসন। অনন্ত হেগড়ে বলেন, রাজ্যসভায় কংগ্রেসের সংখ্যা বাড়লে বিজেপি সরকারের কোনও সাংবিধান সংশোধনী আনলে, তা রাজ্যসভায় আটকে যাবে। নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন বা সিএএ-র উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, বিলটি লোকসভায় এবং রাজ্যসভায় পাস হলেও, বেশ কয়েকটি রাজ্যের সরকার এই আইনে অনুমোদন দেয়নি। তাই আইনটি কার্যকরও করা যায়নি।
২০১৭ সালে, দক্ষতা উন্নয়ন মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী পদে থেকে সংবিধান পরিবর্তনের বিষয়ে মন্তব্য করেছিলেন অনন্ত হেগড়ে। যার জেরে তীব্র বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন তিনি। তাঁর এদিনের মন্তব্য নিয়ে কর্নাটকের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ডিকে শিবকুমার জানিয়েছেন, বিজেপি যে সংবিধান বিরোধী, তা অনন্ত হেগড়ের মন্তব্যেই স্পষ্ট। তিনি বলেন, “ওদের এটা করতে দিন, সংবিধান সংশোধন করুক। এতেই বোঝা যায়, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং বিজেপি সাংসদরা বাবাসাহেব আম্বেদকর প্রণিত সংবিধানের বিরুদ্ধে। তাঁকে (অনন্তকুমার হেগড়ে) বলব, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আপনার মন্তব্যে স্ট্যাম্প লাগিয়ে নিন।”