ভোটের মুখে নন্দীগ্রাম-মামলায় বড় খবর! একাধিক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারির নির্দেশ
২০০৭-এর নন্দীগ্রামে (Nandigram) জমি আন্দোলনকারীদের উপর থেকে রাজ্য সরকারের মামলা প্রত্যাহার করা নিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয়। সে মামলার ভিত্তিতেই এই নির্দেশ।
পূর্ব মেদিনীপুর: যত কাণ্ড নন্দীগ্রামে (Nandigram)! ভোটের মুখে বারবার শিরোনামে উঠে আসছে পূর্ব মেদিনীপুরের এই এলাকা। এবার জমি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তদের জামিন নাকচ করে দিল আদালত। উল্টে জমি আন্দোলনকারীদের একাধিক নেতাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিল হলদিয়া আদালত। ভোটের মুখে এই ঘটনায় তোলপাড় রাজনৈতিক মহল।
২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনকারীদের উপর থেকে রাজ্য সরকারের মামলা প্রত্যাহার করা নিয়ে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। এরপরই হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ গত ৫ মার্চ নতুন করে এই মামলা চালু করার নির্দেশ দেয়। সোমবার হলদিয়া আদালতে সেই মামলার শুনানি হয়। সন্ধ্যাবেলা এই মামলার রায় দেন বিচারক। অভিযুক্তদের জামিন নাকচ করে গ্রেফতারির নির্দেশ দেয় হলদিয়া আদালত। এই তালিকায় রয়েছেন আবু তাহের, শেখ সুফিয়ান, স্বদেশ দাসের মত নন্দীগ্রামের প্রথম সারির তৃণমূল নেতার নামও।
বিজেপি নেতা ও নন্দকুমার বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী নীলাঞ্জন অধিকারী এই মামলা করেছিলেন । তিনি বলেন, “যে ভাবে অভিযুক্তদের উপর থেকে মামলা তোলা হয়েছিল তা আইন মেনে হয়নি। হাইকোর্টের রায়ের পর হলদিয়া আদালত গ্রেফতারির নির্দেশ দিয়েছে।” তবে শেখ সুফিয়ান এই গ্রেফতারির নির্দেশকে গুরুত্ব দিতে রাজি নন। তাঁর কথায়, “আইন সকলের জন্যই সমান। আমরা আইন মেনেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
শেখ সুফিয়ানের দাবি, “বিজেপির আসল রূপ বের হতে শুরু করেছে। সিপিএম জমি আন্দোলনকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। আর এবার বিজেপি নন্দীগ্রামের মানুষকে অপমান করল। বিজেপি যে কোনওদিনই নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনকে সমর্থন করেনি এটা তার প্রমাণ।” একই সুর অপর তৃণমূল নেতা আবু তাহেরের গলাতেও। তিনি বলেন, “আইন মেনেই আমরা লড়ব। প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে যাব।”
আরও পড়ুন: পানীয় জল খেয়ে মৃত বন্দি, মুখ্যমন্ত্রীর ওয়ার্ডের পর এবার আলিপুর মহিলা জেল!
এ নিয়ে বিজেপির রাজ্যস্তরের নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “রাজ্য সরকার এই গ্রেফতারি প্রত্যাহারের চেষ্টা করেছিল। মামলা তুলে নিয়েছিল। পরে আবার আদালতের নির্দেশে মামলা বহাল থাকে। সেক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশ। আইন আইনের পথে চলবে। ভোটের সময় এর থেকে বেশি তো আমরা কিছু বলতে পারি না। এটা নিয়ে তৃণমূল বলতে পারে প্রতিহিংসার রাজনীতি, গভীর ষড়যন্ত্র। কিন্তু আদালতের বিরুদ্ধে কী বলা যাবে! আইন আইনের পথেই চলবে।”
অন্যদিকে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের প্রতিক্রিয়া, “এটা পুরনো পদ্ধতি। এরা গিয়ে জামিনের জন্য আবেদন করবে। এটা সব জায়গাতেই হচ্ছে।” একইসঙ্গে এই ঘটনা ভোটের মুখে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়াল, এ কথা মানতে নারাজ এই বর্ষীয়ান সাংসদ। যদিও হাইভোল্টেজ নন্দীগ্রামে ভোটের মুখে আদালতের এই নির্দেশ আরও খানিকটা তাপ বাড়াল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।