শুধু করোনার টিকা নয়, বাংলায় চাল চোর, ত্রিপল চোরদেরও টিকা দেওয়া হবে: নাড্ডা

এদিন প্রকাশিত হল বিজেপির ‘লক্ষ্য সোনার বাংলা’র (Lakhya Sonar Bangla)। উদ্বোধন করেন জেপি নাড্ডা। আগামী ৩ মার্চ থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে ঘুরবে ‘লক্ষ্য সোনার বাংলা’ লেখা ট্যাবলো।

শুধু করোনার টিকা নয়, বাংলায় চাল চোর, ত্রিপল চোরদেরও টিকা দেওয়া হবে: নাড্ডা
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Feb 25, 2021 | 5:31 PM

উত্তর ২৪ পরগনা: নির্মাণ সংস্থার কাছ থেকে সরাসরি টিকা কেনার অনুমতি চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুরের আনন্দপুরী মাঠে পরিবর্তন যাত্রার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে তা নিয়েই চরম কটাক্ষ শানালেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা (JP Nadda)। তাঁর কথায়, “মোদী সরকার সাধারণ মানুষের জন্য টিকার ব্যবস্থা করছেন। কিন্তু এ রাজ্যের চাল চোর, ত্রিপল চোরদের জন্যও টিকার দরকার। মে মাসে সেই টিকাকরণও হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে উপড়ে ফেলবেন বাংলার মানুষ।”

এ রাজ্যে মেয়েদের কোনও নিরাপত্তা নেই: নাড্ডা

তৃণমূল ভোটের বাজারে স্লোগান তুলেছে ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’। এদিন সে স্লোগান নিয়েও এক হাত নেন নাড্ডা। প্রত্যেক সভাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে বাংলার মেয়ে বলে দাবি করলেন, তাঁর রাজত্বে এ রাজ্যে মেয়েরাই অত্যাচারিত, নিগৃহীত, দাবি বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির। নাড্ডা বলেন, “এ রাজ্যে ধর্ষণ, মানব পাচার, গার্হস্থ্য হিংসা সবথেকে বেশি। দিদি আপনি কী ভাবলেন এ নিয়ে? আমাদের মণীশ শুক্লা শহিদ হলেন, মায়ের কোল খালি হয়ে গেল, দিদি এটা নিয়ে কী ভাবলেন?”

‘চাল চোর, ত্রিপল চোরদের টিকাকরণ হবে’

ব্যারাকপুরের জনসভায় এদিন জেপি নাড্ডা তীব্র কটাক্ষ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁর কথায়, “শুনেছি গতকাল হুগলিতে মমতাজী বলেছেন বাংলার মানুষকে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। আমি বলি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজী ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ৬০ বছরের বেশি বয়সিরা ১ মার্চ থেকে বিনামূল্যে টিকা পাবেন। ৪৫ বছরের বেশি অথচ যাঁদের কোমর্বিডিটি রয়েছে তাঁদেরও বিনা খরচে টিকা দেওয়া হবে।” এরপরই নাড্ডার ধারাল তোপ, “এখানে তো আরও কিছু টিকা লাগবে। আয়ুষ্মান টিকা, কিষাণ সম্মান নিধির টিকা। এখানেই শেষ হয়। তোলাবাজির বিরুদ্ধে টিকা, সিন্ডিকেটরাজের বিরুদ্ধে টিকা, চাল চোরদের টিকা, কাটমানির টিকাও দেওয়া হবে। আমরা ব্যবস্থা করব।”

মমতার সরকারকে উপড়ে ফেলার ডাক

ব্যারাকপুর আনন্দপুরী মাঠে পরিবর্তন যাত্রার সমাপ্তি ঘোষণা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নাড্ডা বলেন, গ্রামে প্রান্তরে এই পরিবর্তন যাত্রার রথ ঘুরে মানুষের আশীর্বাদ, সমর্থন পেয়েছে। মানুষের লক্ষ্য সোনার বাংলা গড়ার। সে পথেই হাঁটছে বিজেপিও। এবার সময় এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে বাংলা থেকে উপড়ে ফেলার।

‘আরণ্যক’, মঙ্গল পাণ্ডে ঘাটে নাড্ডা

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নৈহাটির জন্মভিটার পর জেপি নাড্ডা পৌঁছন বাঙালির আরও এক আবেগকে ছুঁতে। কথা সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যারাকপুরের ‘আরণ্যক’ ঘুরে দেখেন তিনি। কথা সাহিত্যিকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে মঙ্গল পাণ্ডে ঘাটে যান নাড্ডা। সেখানে মঙ্গল পাণ্ডের স্মৃতি সৌধে সম্মান জানান।

JP Nadda launch Lakhya Sonar Bangla Manifesto at hestings

বহু বিতর্ক কাটিয়ে গন্তব্যে পৌঁছল বিজেপির ‘পরিবর্তন যাত্রা’

অবশেষে ব্যারাকপুর আনন্দপুরী খেলার মাঠে এসে পৌঁছল নবদ্বীপ জোনের পরিবর্তন যাত্রার রথ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রথ আনন্দপুরীতে আসা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বাতবিতণ্ডা শুরু হয় বিজেপির। এরপর তারা এই রথযাত্রা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার কথাও ঘোষণা করে। কিন্তু পরে ঘুরপথে সেই রথ এসে পৌঁছয় আনন্দপুরীতে। এখানেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা এই রথযাত্রার সমাপ্তি ঘোষণা করবেন। বিজেপির অভিযোগ, তাদের রুখতে তৃণমূল সরকার পুলিশকে ব্যবহার করলেও মানুষ সঙ্গে রয়েছে। তাই বহু বাধা রথের গন্তব্যে এসে পৌঁছন, সেটাই প্রমাণ করল।

আরও পড়ুন: ‘লক্ষ্য সোনার বাংলা’, রাজ্যজুড়ে ৩০ হাজার সাজেশন বক্স রাখছে বিজেপি

চটকল শ্রমিকের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির

নৈহাটি পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডেরই গৌরীপুরে বাড়ি চটকল শ্রমিক দেবনাথ যাদবের। হাজিনগর হুকুমচাঁদ জুটমিলের শ্রমিক তিনি। একইসঙ্গে এই ওয়ার্ডের ১৩১ নম্বর বুথের বিজেপি সভাপতি তিনি। এদিন তাঁর বাড়িতেই দুপুরের খাবার খান জেপি নাড্ডা। মেনুতে ছিল ভাত, ডাল, আলু ভাজা, করলা ভাজা, দু’রকম সবজি, আমের চাটনি, পাপড়, ক্ষীর, মিষ্টি। দেবনাথের পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেন নাড্ডা।

west bengal governor Jagdeep Dhankhar calls for violence free election in assembly vote

দেশপ্রেমের সঞ্জীবনী মন্ত্র ‘বন্দে মাতরম’-এর স্রষ্টার ভিটায় নাড্ডা

নৈহাটির বঙ্কিম-জন্মভিটায় দাঁড়িয়ে জেপি নাড্ডা বলেন, “এমন পবিত্রভূমিতে আসতে পেরে আমি ধন্য। বাংলার গর্ব, স্বাভিমানের সঙ্গে ভারতের স্বাভিমানকে উস্কে দিয়েছেন যিনি, তাঁর নাম বঙ্কিমচন্দ্র। আনন্দমঠ তার উদাহরণ। উনি যেখানে বসে জাতীয়তাবাদের মন্ত্র লিখেছিলেন সেই চেয়ার, ঘর দেখার সুযোগ পেলাম আমি। এমন পবিত্র স্থানে এসে আমি ধন্য।”