ভোটের ময়দানেই নেই শোভন, বেহালা পূর্বে জিতে রত্নার মনে এখন প্রশান্তির ‘বৈশাখী হাওয়া’

রত্না লিখলেন, 'আজ মনের খোলা জানালায় খুশির বৈশাখী হাওয়া ফেলে আসা অতীতের কিছু ধূসর ক্ষতের উপর প্রশান্তির প্রলেপ দিয়ে গেল'

ভোটের ময়দানেই নেই শোভন, বেহালা পূর্বে জিতে রত্নার মনে এখন প্রশান্তির 'বৈশাখী হাওয়া'
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: May 04, 2021 | 9:30 AM

কলকাতা: এতদিন যে কেন্দ্রে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের (Sovan Chatterjee) দাপট ছিল। আগামী পাঁচ বছরের জন্য সেই বেহালা পূর্ব রত্না চট্টোপাধ্যায়ের। কার্যত শোভনের কাছ থেকে কেন্দ্রটা ছিনিয়েই নিলেন রত্না। নিঃসন্দেহে এই জয় তাঁর রাজনৈতিক জীবন ও ব্যক্তিগত জীবনে এক মাইল ফলক। এই জয়ের জন্য আনন্দে গদগদ রত্না সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ভোটারদের জানালেন ধন্যবাদ। একইসঙ্গে লিখলেন, এখন তাঁর মনের জানলায় ‘খুশির বৈশাখী হাওয়া’ চলছে।

গত কয়েক বছর ধরে ব্যক্তিগত জীবনে নানা টানাপোড়েন চলেছে শোভন-জায়া রত্না চট্টোপাধ্যায়ের। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের মামলা, শোভনের ‘ঘনিষ্ঠ বান্ধবী’ হিসাবে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার বার শিরোনামে উঠে আসা, বিভিন্ন সময় শোভন-বৈশাখী ও রত্নার বাকযুদ্ধে একেবারে ফালা ফালা তিনি। শোভনের হয়ে তাও জনসমক্ষে বৈশাখী মুখর হন, কিন্তু রত্না একাই লড়ে চলেছেন তাঁর ‘যুদ্ধ’।

আরও পড়ুন: ভোর থেকেই মেঘের গুরু গুরু, আলো ফুটতেই সঙ্গী বৃষ্টি! আজ শহরে রয়েছে কালবৈশাখীর পূর্বাভাসও

এরইমধ্যে শোভন বিজেপি ছাড়ার পর তৃণমূল বাড়তি গুরুত্ব দিতে শুরু করে রত্নাকে। বেহালা পূর্ব নিশ্চিন্তে তাঁর হাতে তুলে দেয় দল। এরপর বিধানসভা ভোটেও তিনিই এ কেন্দ্রে দলের মুখ হয়ে ওঠেন। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপির তারকা প্রার্থী পায়েল সরকার লড়াইয়েই আসতে পারেননি। ১,১০,২৯৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন রত্না।

এরপরই সোমবার ফেসবুকে রত্না লেখেন, ‘আজ মনের খোলা জানালায় খুশির বৈশাখী হাওয়া ফেলে আসা অতীতের কিছু ধূসর ক্ষতের উপর প্রশান্তির প্রলেপ দিয়ে গেল। বেহালা পূর্ব থেকে যে বিপুল পরিমাণ সমর্থন পেয়েছি, সেটা মানুষের ভালোবাসারই প্রতিফলন। এই জয়কে আমি বেহালা পূর্বের সর্বস্তরের মানুষের জয় বলেই চিহ্নিত করলাম।…।’

আজ মনের খোলা জানালায় খুশির বৈশাখী হাওয়া ফেলে আসা অতীতের কিছু ধূসর ক্ষতের উপর প্রশান্তির প্রলেপ দিয়ে গেল। বেহালা পূর্ব…

Posted by Ratna Chatterjee on Monday, May 3, 2021

নিঃসন্দেহে এই ধন্যবাদবার্তার শুরুটাই নজরকাড়া। যে ‘বৈশাখী’ ঝড়ে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে এসেছে চড়াই উতরাই, এবার সেই বৈশাখী হাওয়ায় তিনি ‘প্রশান্তি’ খুঁজে পেয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন, বৈশাখ মাসে বৈশাখী হাওয়া তো বইছেই। এর ব্যাখ্যা আর আতস কাচ দিয়ে খোঁজার কী প্রয়োজন। কারও আবার মত, অত্যন্ত সচেতনভাবেই এই শব্দচয়ন রত্নার। ভোটে জয়ী আত্মবিশ্বাসী রত্না এখন আর এসব ‘ছোটখাটো’ বিষয়ে নিজেকে জড়িয়ে রাখতে চান না। বৃহৎ সংসারের কাজ করাই এখন তাঁর একমাত্র লক্ষ্য।

সে কারণেই পোস্টে রত্নার উল্লেখ, ‘বাংলার উন্নয়ন, বাংলার সংস্কৃতি যে ওই বাংলার মেয়ে ‘মমতা’য় সুরক্ষিত সেই আস্থার ফলশ্রুতি এই জয়—আর তা রক্ষা করাই হবে আগামীর সম্পাদন। সাথে সাথে করোনা কালে যারা মানুষের পাশে আছেন এবং দলের এই জয়কে সুনিশ্চিত করতে আমার সকল কর্মী সমর্থক আঞ্চলিক নেতৃত্ব যাঁরা সাথে আছেন তাঁদের সবাইকে জানাই বিজয়ের কুর্নিশ। সব শেষে আত্মতৃপ্তি এই ভেবে যে বাংলা বাংলাই রইল—আর এই বাংলাকে অবিকৃত রাখার শপথ নিয়ে বলি—“জয় বাংলা”।’