‘বদল করে যাদের নিয়ে আসছ, তারা আরও বেশি আমার লোক’, পুলিশি রদবদলে কমিশন-বিজেপিকে পাল্টা মমতার

"আমি খুশি, যে সব অফিসারদের বদলি করে আনা হয়েছে, তারা আমাদেরই লোক।" ভোটের (West Bengal Assembly Election 2021) আগে রাজ্যের একাধিক পুলিশ কর্তার বদলিতে এবার পাল্টা নির্বাচন কমিশনকেই চাপে রাখতে চাইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

'বদল করে যাদের নিয়ে আসছ, তারা আরও বেশি আমার লোক', পুলিশি রদবদলে কমিশন-বিজেপিকে পাল্টা মমতার
ছবি-পিটিআই
Follow Us:
| Updated on: Mar 25, 2021 | 3:44 PM

মেদিনীপুর: “আমি খুশি, যে সব অফিসারদের বদলি করে আনা হয়েছে, তারা আমাদেরই লোক।” ভোটের (West Bengal Assembly Election 2021) আগে রাজ্যের একাধিক পুলিশ কর্তার বদলিতে এবার পাল্টা নির্বাচন কমিশনকেই চাপে রাখতে চাইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পাশাপাশি বার্তা দিলেন বিজেপিকেও।

দাঁতনের সভামঞ্চ থেকে নির্বাচন কমিশন ও বিজেপিকে এক হাত নেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এদিনের সভায় তাঁর বক্তব্যের সিংহভাগই জুড়ে ছিল পুলিশি রদবদল প্রসঙ্গ। মমতা বলেন, “বিজেপি জানে ম্যাচটা হেরে গেছে। এখন জনগণের খেলা নয়, অফিসার বদলির খেলায় নেমেছে। যারা এসেছে, আমি খুশি, তারা সবাই আমার লোক।” বিবেক সহায়ের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মমতা বলেন, ” অফিসারকে বদল করে কী হবে? অফিসার কি ভোট দেয়? না একজন অফিসারকে বদল করে, অসম্মান করে, আরেক জন অফিসারকে সম্মান করছেন। মনে রাখবেন অফিসারদের মধ্যেও সংঘবদ্ধতা রয়েছে। তাঁরাও কিন্তু পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। যে কায়দায় আপনারা বিবেক সহায়কে সাসপেন্ড করেছেন, এটা ইতিহাসে লেখা থাকবে। ”

উল্লেখ্য, বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালের বাংলার একের পর এক উচ্চ পদস্থ পুলিশ কর্তাকে বদলি করেছে নির্বাচন কমিশন। তার মাঝেই নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে চোট লাগার ঘটনায় ডিএম-এসপি বিবেক সহায়কে অপসারিত করে কমিশন। রাজ্যকে লেখা কড়া ভাষায় চিঠি কমিশন উল্লেখ করে তার ব্যাখ্যাও। কমিশনের বক্তব্য, “মুখমন্ত্রীর নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ বিবেক সহায়। নিরাপত্তা অধিকর্তা-সহ ডিএম, এসপি ব্যর্থ। নন্দীগ্রামের মুখ্য়মন্ত্রীর সূচি জানতেন না বিবেক সহায়। মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচি জানতেন না ডিএম-এসপি। ব্যবহার করা হয়নি মুখ্যমন্ত্রীর বুলেটপ্রুফ গাড়িও।” এ দিনের সভা থেকে ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন মমতা। পাশাপাশি তোপ দাগেন বিজেপির বিরুদ্ধে।

নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে মমতা বলেন, “বিজেপি দলটা এমনভাবে নির্বাচন কমিশনে হস্তক্ষেপ করছে, যেন মনে হচ্ছে ওটা বিজেপি কমিশন হয়ে গিয়েছে। আরও অনেকগুলো ডিএম, এসপি বদলে দিয়েছে বিজেপির কথা মতো। আমি বললাম সবাইকেই বদলে দেও। কিচ্ছু হবে না। কারণ যাদের বদলে আনছ, তারাও আমাদের লোক। তোমরা ভুল করছ। যাদের বদলে আনছ, তারা আরও বেশি করে আমার লোক।”

কমিশনের কাছে মমতার আরও প্রশ্ন, “কেন্দ্রীয় সরকারের যখন নির্বাচন হয়, পুলিশ কেন আপনাদের আন্ডারে থাকে না। রাজ্যের নির্বাচনেও কেন্দ্রীয় সরকারের পুলিশ আপনাদের আন্ডারে থাকে না কেন? যারা বিজেপি বিরোধী দল তাদের প্রতি আপনারা বিমাতৃসুলভ আচরণ দেখাচ্ছেন।” কমিশনকে মমতা চ্যালেঞ্জ করেন, “আপনি আমাকে শোকজ করতে পারেন, ১০টা চিঠি দিতে পারেন। আমার যায় আসে না। আমি নির্ভীকভাবে লড়াই করি। বিজেপির লোকেরা যা বলবেন, তাই করতে হবে। বিজেপি কী দেয় আপনাদের?”

বিজেপিকে আর নির্বাচন কমিশনকে রীতিমতো এক পাল্লায় রেখে একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেন মমতা। এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক একটি বিষয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন দাঁতনে কথা বলছেন, তখন রাজ্য পুলিশে আবারও বড়সড় রদবদল হয়। নির্বাচন কমিশন চিঠি দিয়ে মুখ্য সচিবকে জানিয়েছে, পাঁচটি পদে বদল হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ‘যে সংখ্যালঘুর হয়ে বলছে, সে বিজেপির কাছ থেকে প্রচুর টাকা নিয়েছে’, নাম না করে আব্বাসকে তীব্র কটাক্ষ মমতার

এডিজি ওয়েস্ট জ়োন পদ থেকে বদলি হচ্ছে আইপিএস সঞ্জয় সিংয়ের। তার জায়গায় আসছেন আইপিএস ডাঃ রাজেশ কুমার। ডিইও ঝাড়গ্রামেও রদবদল হচ্ছে। আয়েশা রানির জায়গায় আসছেন আইএস জয়েশি দাস। ডায়মন্ড হারবারেরও এসপি বদলাচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে। তাঁর জায়গায় আসছেন আইপিএস অরিজিৎ সিনহা। দিনহাটার ঘটনার পর বদল হচ্ছে কুচবিহারের এসপি পদেও। আইপিএস কে কান্নানের জায়গায় আসছেন আইপিএস দেবাশীষ ধর। দক্ষিণ কলকাতারও ডিসিপি বদলাচ্ছে। সুধীর নিলকণ্ঠর জায়গায় আসছেন আইপিএস আকাশ মাঘরিয়া।