Ad Controversy: ‘জনতাকে চমকে দিতে হবে…’ তা বলে ধর্ষণকে অস্ত্র! কুরুচিকর, মত বিজ্ঞাপন নির্মাতার

Viral News: বিজ্ঞাপনের বিষয় যখন একটি মেয়ের চোখে মুখে ধর্ষণের ভীতি, তখন কি আদৌ তা দৃষ্টি আকর্ষণের মাধুর্য্য রাখে!

Ad Controversy: 'জনতাকে চমকে দিতে হবে...' তা বলে ধর্ষণকে অস্ত্র! কুরুচিকর, মত বিজ্ঞাপন নির্মাতার
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 06, 2022 | 1:07 PM

আলোচনার কেন্দ্রে যখন বিজ্ঞাপন। টিভির পর্দায় মাত্র কয়েক সেকেন্ডের উপস্থিতি, নয়তো খবরের কাগজের বিভিন্ন কলমে নির্দিষ্ট মাপের মাঝে হাজিরা দেওয়া। স্বল্প পরিসরে ‘জনতাকে শক দিতে হবে…’। এই কঠিন সত্যটা ‘গল্প হলেও সত্যি’ ছবিতে অভিনেতা রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তও মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। আর সেই শক দিতে গিয়েই এবার বিপাকে সুগন্ধী সংস্থা। দৃষ্টি আকর্ষণ করতে গিয়ে নিম্নরুচির পরিচয় দিয়ে ফেলল। যা ঘিরে গত দুদিনে তোলপাড় হচ্ছে সমাজের বিভিন্ন স্তর। এই শক-এর পরিমাণ ঠিক করেন কে! বিজ্ঞাপন নির্মাতা না সংস্থা! সেক্ষেত্রে কি সমাজের প্রতি কোনও দায়বদ্ধতাই কাজ করে না! বিজ্ঞাপনের চিত্রনাট্যে ধর্ষণকে অংশ করার প্রসঙ্গে এবার মুখ খুললেন বিজ্ঞাপন নির্মাতা সৌভিক মিশ্র

বিজ্ঞাপনের বিষয় যখন একটি মেয়ের চোখে মুখে ধর্ষণের ভীতি, তখন কি আদেও তা দৃষ্টি আকর্ষণের মাধুর্য্য রাখে! প্রশ্ন শোনা মাত্রই দুবার না ভেবে সৌভিক মিশ্র বললেন, ‘প্রথমেই বলব, অবশ্যই এই ধরনের বিজ্ঞাপন তৈরি করা উচিত নয়। বিশেষ করে যা সমাজের জন্য ক্ষতিকারক। আসলে এর সঙ্গে বিজ্ঞাপনদাতার রুচির প্রসঙ্গও থাকে জড়িয়ে। বিজ্ঞাপনের ব্যাপারটা হচ্ছে, আপাত দৃষ্টিতে যা করা যায় বা যা কিছু করতে পারেন, সবক্ষেত্রেই শেষ কথা বলে থাকে দর্শক বা জনতা। শেষ মতামতও জানান তাঁরাই। জনতা যদি মনে করেন এর গ্রহণ যোগ্যতা নেই, তার ফলও সঙ্গে সঙ্গে পেয়ে যান বিজ্ঞাপন নির্মাতা সংস্থা। এ ক্ষেত্রে ঠিক যেমনটা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন ঘিরে বিতর্কের বিষয় দুই, এক বিজ্ঞাপনের চিত্রনাট্য, দুই বিজ্ঞাপনের বিষয় বস্তু। সম্প্রতি তামাক জাতীয় দ্রব্যের বিজ্ঞাপন নিয়েও সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় হতে দেখা যায়। এই প্রসঙ্গে আলোকপাত করে সৌভিক আরও জানান, ‘অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন আমায়, আপনারা তো বিজ্ঞাপন করেন, তাহলে তামাক ও মাদক জাতীয় দ্রব্যের বিজ্ঞাপন কি সত্যি করা উচিত! না কি করা উচিত নয়! সেক্ষেত্রে সংস্থার প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই এগুলো করা হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হয়তো বিজ্ঞাপন সৃষ্টিকারীরা বেশ প্রথাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে নজরের কেন্দ্রে আসার চেষ্টা করে, এই যেমন বিধবা বিবাহ, নারী শক্তির বিকাশ প্রভৃতি। মূলত এগুলো করা হয় একটা সংস্থার সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই। সমাজে পজিটিভিটি ছড়ানোর জন্য। তবে সেখানেও একটা রুচির বিষয় রয়েছে। কোন জিনিসটা আমি করব, কোন জিনিসটা আমি করব না। এমন কিছুই করা উচিত নয়, যা কুরুচিকর বা বেআইনি। এই দুটো বিষয়কে এড়িয়ে যেতেই হবে।’

বিজ্ঞাপন বিতর্ক এই প্রথম নয়। কখনও নারীদের অঙ্গ থেকে পোশাক খুলতে থাকা, কখনও আবার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নারীদের ব্যবহার করা, এই ধরনের চিত্রনাট্য লেখার ক্ষেত্রেও সচেতনা প্রয়োজন বলেই জানান তিনি।  ‘এই বিজ্ঞাপন জগতে আগেও এমন অনেক প্রসঙ্গই সমালোচিত হতে দেখা দিয়েছে। যেখানে পরিশেষে বিজ্ঞাপনটিকে তুলে নেওয়া হয়েছে। আজকের মত সমাজে দাঁড়িয়ে প্রতিটা পদে পদে নেটিজ়েনরা সক্রিয়। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে সেলেবমহল, সাধারণ মানুষ, প্রতিটা বিষয় নিয়ে মুখ খুলতে দ্বিধাবোধ করেন না। সেখানে দাঁড়িয়ে এভাবে এক বিতর্কিত বিজ্ঞাপনকে অস্ত্র করে জনপ্রিয়তার কেন্দ্রে আসার চেষ্টার অর্থই হল বোকামো। জনতা ততক্ষণাৎ তা বাতিল করে দেয়’, অকপট সৌভিক। তাই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যে ধরনের বিজ্ঞাপন সামাজিক অবক্ষয়ের কারণ হতে পারে, তা কখনই তৈরি করা কাম্য নয়, এক কথায় ন্যায় নীতি বিরুদ্ধ।