Dancer Cancer Death: নিঃশব্দে ক্যানসারে মৃত্যু নৃত্যশিল্পী দোয়েলের, ঐন্দ্রিলার মৃত্যুদিনেই শহর সাক্ষী আরও এক নিখাদ বন্ধুত্বের

Aindrila Sharma Death: একবিংশ শতকে এসে এই ধারণার বিপরীতে গিয়ে ঐন্দ্রিলা শর্মার প্রয়াণে যখন কাঁদছে আমজনতা, তখন আরও এক 'ঐন্দ্রিলা'কেও (Aindrila Sharma)  হারানোর শোকে বিহ্বল তাঁর কাছের মানুষেরা। আমজনতা জানে না সে লড়াইয়ের গল্প।

Dancer Cancer Death: নিঃশব্দে ক্যানসারে মৃত্যু নৃত্যশিল্পী দোয়েলের, ঐন্দ্রিলার মৃত্যুদিনেই শহর সাক্ষী আরও এক নিখাদ বন্ধুত্বের
গ্র্যাফিক্স- অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 01, 2022 | 4:15 PM

বিহঙ্গী বিশ্বাস ও মেঘা মণ্ডল 

কবি লিখেছিলেন, ‘বিংশ শতাব্দীতে মানুষের শোকের আয়ু বড়জোর এক বছর…’ একবিংশ শতকে এসে এই ধারণার বিপরীতে গিয়ে ঐন্দ্রিলা শর্মার প্রয়াণে যখন কাঁদছে আমজনতা, তখন আরও এক ‘ঐন্দ্রিলা’কেও (Aindrila Sharma)  হারানোর শোকে বিহ্বল তাঁর কাছের মানুষেরা। আমজনতা জানে না সে লড়াইয়ের গল্প। জানে না সারা দেহে কর্কট রোগ, সঙ্গে বাঁচার আকুতি, কেমোয় ঝাঁঝরা শরীর, চুল উঠে যাওয়ার নির্মম যন্ত্রণা নিয়েও হাসিমুখে জীবন কাটানো এক লড়াকু মানুষের কথা। নাম দোয়েল চৌধুরী। পেশায় নৃত্যশিল্পী। মাঝখানে সালোঁ (Salon)-র ব্যবসাও করেছিলেন। মূলত নাচ শেখাতেন, পরিবেশনও করতেন। ২০ নভেম্বর হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে দুপুরবেলা যখন স্তব্ধ হয় ঐন্দ্রিলার লড়াই, ওই একই অভিশপ্ত দিনে আর এক বেসরকারি হাসপাতালে থেমে গিয়েছিল দোয়েলের হৃদস্পন্দনও। ঐন্দ্রিলাকে আগলে ছিলেন তাঁর প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরী, আর দোয়েলকে আঁকড়ে ছিলেন বন্ধু অরুন্ধতী দাশগুপ্ত। শহর নিঃশব্দে সাক্ষী থেকেছিল এক আশ্চর্য বন্ধুত্বের। সে গল্পই অরুন্ধতী তুলে ধরলেন TV9 বাংলার কাছে… এই গল্প—যা ‘গল্প হলেও সত্যি’—পড়ার আগে একটা ছোট্ট তথ্য: আজ, ৩০ নভেম্বর, ‘ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন ক্লাব’-এ দোয়েল (ঝুম্পা)র স্মরণসভা।

অরুন্ধতীর বয়ানে…

“দোয়েল আমার ছোটবেলার বন্ধু নয়। ওকে ২০০৮ থেকে চিনলেও ২০১৮ থেকেই হঠাৎ করে কেমন যেন কাছের হয়ে গেল ও। ভীষণ হাসিখুশি, স্টাইলিশ, প্রাণবন্ত। একসঙ্গে একটা ব্যবসা করতাম আমরা। দোয়েল ভীষণ ভাল নাচ করত। ২০১৯-এ হঠাৎই একদিন ওর শরীর খুব খারাপ হল। জ্বর-কাশি, পেট ফুলে যাওয়া… যা হয়। আমরা ভেবেছিলাম ঠান্ডা লেগেছে। ডাক্তার দেখানো হল। বেশ কিছু টেস্ট করতে দিলেন উনি। জানা গেল, দোয়েলের ক্যানসার। শুধু ক্যানসার নয়, স্টেজ ৪-এ, মেটাসথিসিস। অর্থাৎ ওভারিতে প্রথম ক্যানসার সেল দেখা গেলেও সারা দেহে তা ছড়িয়ে গিয়েছে। ভাবতে পারিনি, জানেন… কেমো শুরু হল। ওর নাচ বন্ধ হয়ে গেল। ভেঙে পড়েছিল খুব। কিন্তু বুঝতে দিত না কিচ্ছু।

এখনও মনে আছে, ১২ ঘণ্টার একটা সার্জারি হয়েছিল। বাইপাস সার্জারির ক্ষেত্রে যেমন লম্বা করে কাটা হয় শরীর, ঠিক তেমনই দোয়েলেরও বুক থেকে পেট অবধি কেটে অপারেশন করতে হয়েছিল। ৫০টা স্টিচ হয়েছিল। আসল জার্নিটা শুরু হল এর পর… দোয়েল বাড়ি ফিরে এল ঠিকই, কিন্তু পাঁচ দিনের বেশি বাড়ি থাকতে পারত না। ইনফেকশন (সংক্রমণ) হচ্ছিল ঘনঘন। ও দিকে, ওর স্বামী মেরিনার, মেয়ে কানাডায় পড়ছে… ওদের পক্ষেও সব সময় দেশে থাকা সম্ভব হত না।

এমন করেই ২০২০ চলে এল। সেলাই কাটার জন্য ওকে নিয়ে হাসপাতালে যাই। গায়ে জ্বর ছিল। টেস্ট হল। ডাক্তারেরা জানালেন, পেটে ফ্লুইড জমেছে। পরীক্ষা করে দেখতে হবে তা ম্যালিগন্যান্ট কি না। ছুঁচে খুব ভয় পেত দোয়েল। যে দিন প্রথম ওই পরীক্ষা করবে বলে নিয়ে যাওযা হল, সেদিন ঘটে এক কাণ্ড। ও ভেতরে পরীক্ষা করতে গিয়েছে, আমি বাইরে। হঠাৎ করে ভিতর থেকে আমায় ডেকে পাঠানো হল। আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি থরথর করে কাঁপছে।

যাই-ই হোক, দেড় মাস ঝড় কাটিয়ে দোয়েল সুস্থ হল একটু। বাড়ি ফিরেও এল। মনে আছে, দ্বিতীয় কেমোর সময় যখন চুল পড়ছে তখন নিজেই গিয়ে ন্যাড়া হয়ে এসেছিল। ওর যে ক্যানসার মাকে জানাতে চায়নি। ওর দাদা মারা গিয়েছিলেন কিছু বছর আগে, মেয়েও এতটা অসুস্থ তা মা জানুক, চায়নি আমার বন্ধু। কেউ জিজ্ঞাসা করতে বলত, এই ন্যাড়াটাই নাকি ওর স্টাইল, ফ্যাশন ট্রেন্ড।

২০২১-র ১ ফেব্রুয়ারি, ওর জন্মদিন ছিল। তার কিছু দিন আগে থেকেই বেশ অসুস্থ হয়ে পড়ে দোয়েল। কাশি, জ্বর। পরীক্ষা হল ওর। আর জন্মদিনের দিনেই খারাপ খবরটা আবারও এল: রোগটা আবার ফিরে এসেছে, এবার ফুসফুস জুড়ে। কেমো কাজ করছিল না ওর শরীরে। ওর ক্যানসারটা জিনগত। যাই-ই হোক, আবার শুরু চিকিৎসা। কেমো, ওষুধ… আবারও কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে এল ও। অসম্ভব মনের জোর। কেউ দেখলে বুঝতেই পারবে না যে, ওই শরীরে কেমো আর সার্জারির আঘাত এসেছে বহুবার। অক্টোবরের ৩০ তারিখ। বন্ধুর মেয়ের জন্মদিন ছিল। আমরা সবাই গিয়েছিলাম। দোয়েলও কী মজা করেছিল। কিন্তু বাড়ি ফিরেই আবার শরীর অসুস্থ। মারাত্মক বমি। শরীর ভীষণ খারাপ। হাসপাতালে আবারও ভর্তি করানো হল ওকে। এ বারটা যেন একটু বেশিই ক্লান্ত দেখাচ্ছিল।

৪ তারিখ আমার একটু দেশের বাইরে যাওয়ার ব্যাপার ছিল। যে দিন আমার যাওয়ার তারিখ, তার আগের দিন দেখা করতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ করেই বলল, ‘যাস না তুই’। তারপরেই নিজেকে সামলে নিল। যাওয়ার অনুমতি দিল আমায়। ওকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছিল না। হাসপাতালের দরজা দিয়ে দেখেছিলাম ও তাকিয়ে রয়েছে একভাবে।

১৮ নম্ভেবর। ততদিনে আমিও বাইরে থেকে ফিরে গিয়েছি। ওকে দেখে হাসপাতাল থেকে আমি আর ওর স্বামী বের হচ্ছি। দেখছি দোয়েলের শরীরটা কেমন আনচান করছে। আমরা থেকে যাওয়ার কথা বলতেই এক প্রকার জোর করে আমাদের বাড়ি পাঠিয়ে দিল। ১৯ তারিখ সকালে হাসপাতালে ফোন করে কেমন আছে জানতে চাইলেই ওরা জানিয়ে দিল, দোয়েল আর ভাল নেই। ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়েছে। অবস্থা খারাপ। হাসপাতালে গেলাম। ওর সারা দেহ তখন লাইফ সাপোর্টে চলছে। আমি যেতেই একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটে গেল। প্রায় ৪৫ ডিগ্রি সোজা হয়ে উঠে বারবার আমার হাতটা ধরার চেষ্টা করতে লাগল দোয়েল। আমি ওর হার শক্ত করে ধরেছিলাম। ঠিক যেমন ধরেছিলাম, ওর প্রথম বড় টেস্টের দিন। ইতিমধ্যে ওর মেয়েও কানাডা থেকে ফিরে গিয়েছে। ২০ নভেম্বর, রবিবার, সন্ধেবেলা আমি হাসপাতালে… ওর ঘরে বসে আছি। ডাক্তার-নার্সরা আমাকে হঠাৎই ঘর থেক চলে যেতে বললেন। আঁচ করতে পারছিলাম খারাপ কিছু। তাঁর কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার চোখের সামনে আমার বন্ধু, আমার দোয়েল… চলে গেল না ফেরার দেশে। চুপ করে পাশে বসেছিলাম। কী-ই বা করতে পারতাম সে দিন।

দোয়েল নেই, এক সপ্তাহ হয়ে গেল। রোজ রাতে দেড় ঘণ্টা কথা হত আমাদের। গত এক সপ্তাহে সেই ফোন বাজেনি, বাজবেও না কোনওদিন। দোয়েল আর ফিরবে না, যেমন ফেরেনি ঐন্দ্রিলা। সারাজীবন এই শোক লালন করেই কাটাব আমরা—আমি, ঐন্দ্রিলার পরিবার, দোয়েলের কাছের মানুষেরা।

দোয়েল সম্পর্কে প্রাক্তন আরজে ও বর্তমানে টেলি-সিরিয়াল অভিনেত্রী শ্রী

“দোয়েলদির সঙ্গে আমার পরিচয় ২০১৫-২০১৬ সাল থেকে। আমরা একই ক্লাবের সদস্য (এই ‘ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন ক্লাব’-এই দোয়েলের স্মরণসভা)। দোয়েলদির সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা ২০১৮-১৯ থেকে। ক্লাবের বন্ধু, আত্মীয়, পারিবারিক সূত্রে বন্ধুত্ব… ইত্যাদির হাত ধরে আমার পরিবারের সঙ্গে দোয়েলদির পরিবারের ঘনিষ্ঠতা। আমি তাঁর সম্পর্কে কী বলব! দোয়েলদি হলেন একজন সম্পূর্ণ মহিলা। প্রথম যখন দোয়েলদির সঙ্গে আলাপ হল, আমার মনে হয়েছিল একটা মানুষ এতটা সুন্দর হয়! শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়, অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্যও। এত মিষ্টি স্বভাব, এত হেসে কথা বলে… মুখে সবসময় হাসি লেগে রয়েছে। কী অসম্ভব সুন্দর নাচত! আর তেমনই সুন্দর কোরিওগ্রাফি। ‘নাচতে পারত’ নয়, আমি মনে করি তিনি এখনও এখানেই রয়েছেন—নাচতে পারেন।

দোয়েলদি জানতেন, কীভাবে জীবন উপভোগ করতে হয়। দোয়েলদি আর আমার কিছু কমন বন্ধু রয়েছেন। আমি যখন দোয়েলদিকে দেখতাম বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে যেতেন, ঘুরতে যেতেন, থিম করে পোশাক পরতেন। জীবনটা প্রচণ্ড উপভোগ করতেন। দোয়েলদি একা থাকতেন। দোয়েলদির স্বামী অমিতদাকে পেশার স্বার্থে বছরের বেশিরভাগ সময়টাই জাহাজে কাটাতে হয়। মেয়ে কানাডায় পড়াশোনা করেন। কিছুটা এই একাকিত্ব কাটানোর জন্য এবং দোয়েলদি স্বভাববশতই মানুষজন, হইহুল্লোড় ভালবাসতেন। তাই একটা সময় পর্যন্ত তিনি আনন্দের সঙ্গে জীবন কাটিয়েছেন। তখন ২০১৯-এর প্রায় শেষ দিক, দোয়েলদির ওভারিয়ান ক্যানসার ধরা পড়ল। আমরা স্বামী (সপ্তর্ষি বসু) যেহেতু ডাক্তার, তিনি বললেন, খুব বেশি হলে আর ছ’মাস রয়েছে দোয়েলদির হাতে। দোয়েলদি আর ছ’মাসের বেশি থাকবে না, এটা ভাবাটাই আমাদের সবার কাছে অসম্ভব ছিল। ওরকম প্রাণবন্ত একটা মানুষ কীভাবে… এটা ভাবতে পারছিলাম না। কিন্তু আমি অদ্ভুতভাবে দেখলাম, একটা মানুষের প্রাণশক্তি ও জীবনীশক্তি থাকলে কী হয়। যেখানে ছ’মাস-আট মাস শুনেছিলাম, সেখানে সেই ২০১৯ থেকে আজ ২০২২, এই তিন বছর যে আমরা, ওঁর বন্ধুবান্ধব, পরিবার, কাছের মানুষেরা লড়াই করেছি, তা কিন্তু নয়। একা ওই মানুষটা কীভাবে এই রোগটার সঙ্গে লড়াই করেছে… পরিবার বলতে তো বাড়িতে কেউ নেই। কেউ মাঝ সমুদ্রে, কেউ কানাডায় বসে। বাড়িতে মা ছিলেন। কিন্তু মাকে তিনি জানতেও দেননি যে, তিনি ক্যানসার আক্রান্ত। কোভিডের সময় এই মারাত্মক পরিস্থিতির সঙ্গে তিনি একা লড়াই করে গেছেন। বন্ধুরা নিশ্চয়ই ছিল, কিন্তু তা-ও আমি বলব একাই লড়াই করে গিয়েছেন উনি। তাঁর প্রত্যেক বন্ধু তাঁর পাশে ছিল।

আমি বিশেষ করে অরুন্ধতী দাশগুপ্ত-এর কথা বলব। ঠিক যেভাবে ঐন্দ্রিলার পাশে সব্যসাচী ছিল, ২৪ ঘণ্টা, ঠিক একইভাবে অরুন্ধতী দাশগুপ্ত দোয়েল চৌধুরির পাশে ছিলেন। হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করতে নিয়ে যাওয়া, রাতে জাগা, প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে সবসময় অরুন্ধতীদি তাঁর পাশে ছিলেন। এমনকী দোয়েলদি চলে যাওয়ার সময়ও অরুন্ধতীদির হাতটা ধরেই বিদায় নিয়েছেন। এই যে মারাত্মক লড়াই, আমি কোনওদিন দোয়েলদির মুখে হাসি ছাড়া কিছু দেখিনি। কোনওদিন তাঁর মুখে তাঁর কষ্টের কথা বলতে শুনিনি। বরং নিজেকে নিয়ে মজা করতে দেখেছি।

এই যে নিজেকে নিয়ে মজা করা… আমার চুল উঠে গিয়েছে, এটার ভিতরে তো একটা কষ্ট রয়েছে, কিন্তু বাইরে নিজেকে নিয়ে মজা করা… এই বিষয়টা নিজের ফ্যাশন সেস্টমেন্টে বদলে দিয়েছিলেন দোয়েলদি।

সাজতে ভালবাসতেন দোয়েলদি। চুল উঠে যাওয়ার পর টার্বন পরা শুরু করে দিলেন। বিয়েবাড়িতে আমার সঙ্গে একটা ছবি পোস্ট করে ছিলাম। তিনি পুরো ক্লিন-শেভন ছিলেন এবং তাঁকে রানির মতো দেখাচ্ছিল। এমনও শুনেছি, সকালবেলা দোয়েলদি মারাত্মক অসুস্থ, বিছানা ছেড়ে উঠতে পারছে না। সন্ধ্যেবেলা আমার ছেলের জন্মদিন, আমায় দুপুরে ফোন করে বলছে, এবারে আমায় ছেড়ে দে, আমি যেতে পারব না।

যে দিন ঐন্দ্রিলা চলে যায়, সেদিন রাতেই দোয়েলদিও চলে যান। সে দিন দুপুরবেলা আমি শেষবারের জন্য দোয়েলদিকে দেখতে যাই। শরীরটা ভেন্টিলেশনে, সারা দেহ জুড়ে নল লাগানো, এ দিক-সে দিকে সেন্ট্রাল লাইন করা, তা সত্ত্বেও অরুন্ধতীদির হাতটা চেপে ধরে উঠে দেখার চেষ্টা করছেন যে কে এসেছে তাঁকে দেখতে। এটাই তো একটা মানুষের জীবনীশক্তি, প্রাণশক্তি। দোয়েলদি বলে গিয়েছিলেন, “আমি মারা যাওয়ার পর কেউ দুঃখ করবি না।” এগুলো অরুন্ধতীদির মুখেই শোনা। তিনি বলেছিলেন, “আমায় সাদা ফুল দিয়ে সাজাবি না। আমায় লাল-হলুদ গোলাপ দিয়ে সাজাবি। আমায় প্রচুর চকোলেট, আইসক্রিম দিবি। এগুলো আমি খেতে ভালবাসি।” দোয়েল দি যা-যা চেয়েছিলেন, অমিতদা, বন্ধুবান্ধব… সবাই চেষ্টা করেছেন সেসব কিছু পূরণ করার। আশা করছি, দোয়েলদি আরও ভাল জায়গায় রয়েছেন। ভাল থেকো, দোয়েলদি।