Soumitra Chatterjee: সৌমিত্রর কাজ ও জীবনকে ডিজিট্যাল মাধ্যমে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করছে পশ্চিমবঙ্গ
সৌমিত্র কন্যা পৌলমী বসু বলেছেন, "আমি যখন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করলাম, তিনি আমাকে এগিয়ে যেতে বললেন। বাবার উপর তৈরি এই সাইটটি ইংরেজিতে তৈরি হচ্ছে। যাতে সারা বিশ্বের মানুষ দেখতে পান।"
তথ্য প্রযুক্তি ও বৈদ্যুতিন বিভাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা যেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কাজের ও তাঁর জীবনের যাবতীয় ডিজিট্যাল সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়। প্রাথমিক স্তরে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এ ব্যাপারে অভিনেতার কন্যা পৌলমী বসু বলেছেন, “বাবার কাজ সঠিকভাবে সংরক্ষিত হোক সেটাই আমি চেয়েছি বরাবর। সেই স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে দেখে ভাল লাগছে।”
বাংলা সিনেমা ও মঞ্চের কিংবদন্তিদের কাজ সেভাবে কখনওই সংরক্ষিত হয়নি বাংলায়। পুজোর পর কয়েকজন গবেষক সৌমিত্রর পরিবারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেছিল। আলোচনার পর ঠিক হয় ডিজিট্যাল মাধ্যমেই সৌমিত্রর কাজকে সংরক্ষিত করা হবে। সূত্র জানাচ্ছে, কয়েক মাস আগেই সৌমিত্রর কন্যা পৌলমী নিজে থেকে এগিয়ে এসে অভিনেতার কাজকে সংরক্ষণ করার আর্জি জানিয়েছিলেন সরকারের কাছে। গত সপ্তাহে সম্মতি মিলেছে।
সৌমিত্রর হাতে লেখা নাটক, কবিতা ও তাঁর ডায়েরি সংরক্ষিত হবে প্রথমে। পেইন্টিংয়ের ছবিও সংরক্ষিত হবে। বিগত কয়েক বছর ধরে লাগাতার ডায়েরি লিখে গিয়েছিলেন সৌমিত্র। সে সব অমূল্য লেখনিকেও সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রত্যেক পাতা যেন অক্ষত থাকে, নষ্ট যাতে না হয়ে যায়, সে ব্যাপারে বিশেষ লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। তথ্যের নিরাপত্তাও এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হয়েছে সৌমিত্র কন্যার। তিনি বলেছেন, “আমি যখন মাননীয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করলাম, তিনি আমাকে এগিয়ে যেতে বললেন। আমাকে শুভেচ্ছা জানালেন। বাবার উপর তৈরি এই সাইটটি ইংরেজিতে তৈরি হচ্ছে। যাতে সারা বিশ্বের মানুষ দেখতে পান।”
পৌলমী সকলকে আর্জি জানিয়েছেন, সৌমিত্রর দেওয়া কিছু যদি কারও কাছে থাকে, তা যেন তাঁকে সংরক্ষণের জন্য পাঠানো হয়। সৌমিত্র ও তাঁর স্ত্রী দীপা চট্টোপাধ্যায়ের বিয়ের আগের সময়কার চিঠিও সংরক্ষণ করার পরিকল্পনা চলছে। পৌলমী বলেছেন, “আমি ও আমার দাদা, আমরা দু’জনেই সারা বাড়িতে চিঠিগুলো খুঁজছি। সেগুলো কেবল প্রেমপত্র ছিল না। ছিল একটুকরো সাহিত্য। সেই কারণেই আমরা চিঠিগুলো আর্কাইভ করতে চাইছি।”
সৌমিত্রর প্রায় ১২টি হাতে লেখা নাটকের খসড়া আছে পৌলমীর কাছে। বলেছেন, “বাবা তাঁর কবিতা আমার সন্তানদের সঙ্গে শেয়ার করতেন। আমরা সেগুলো সংগ্রহ করছি। যদিও সেগুলো একান্ত ব্যক্তিগত কবিতা। কিন্তু পড়তে দারুণ লাগে। এই প্রথম ডিজিট্যাল মাধ্যমেই কবিতাগুলি প্রকাশ পাবে। প্রকাশকদের অফিশিয়াল সাইটে লিঙ্কগুলি এমবেড করে দেব আমরা।”
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় মৃণাল সেনের কাজের ক্যাটালগিং শেষ করেছেন। সেখানেই সংরক্ষিত হচ্ছে মৃণালের অধিকাংশ কাজ। এ দায়িত্ব কলকাতাও পালন করতে পারত, মনে করেন অনেকেই। কিন্তু সৌমিত্রর বেলায় সে গ্লানি থেকে মুক্তি থাকতে চেয়ে কলকাতা।