Chris Rock-Will Smith: মঞ্চ-সঞ্চালনার ক্ষেত্রে অনেকেই গ্র্যাভিটি গুলিয়ে ফেলেন: অস্কার-বিতর্কের দিন সঞ্চালনা প্রসঙ্গে আরজে অগ্নি
Chris Rock-Will Smith: অগ্নিজিৎ সেন, পেশায় রেডিও জকি এবং সঞ্চালকও বটে। তাঁকে দর্শকরা সদা সিঙ্গল অগ্নি হিসেবেই চেনে। নিউ এজ সঞ্চালক হিসেবে কী মত অগ্নির? TV9 বাংলার তরফে এই প্রশ্ন করা হলে, কী বললেন, তুলে ধরা হল এই প্রতিবেদনে।
৯৪ তম অ্যাকাডেমি পুরস্কারের মঞ্চ। পুরস্কারের মঞ্চে উঠে সঞ্চালককে সপাটে চড়। অস্কারের মঞ্চে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় সারা বিশ্ব। সঞ্চালক কমেডিয়ান ক্রিস রকের গালে সপাটে চড় কষালেন উইল স্মিথ। তাঁর অপরাধ, স্মিথের স্ত্রীকে নিয়ে চটুল মশকরা করেছেন তিনি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন মানুষ নিজেদের মত শেয়ার করছেন।
অগ্নিজিৎ সেন, পেশায় রেডিও জকি এবং সঞ্চালকও বটে। তাঁকে দর্শকরা সদা সিঙ্গল অগ্নি হিসেবেই চেনে। নিউ এজ সঞ্চালক হিসেবে কী মত অগ্নির? টিভিনাইন বাংলার তরফে এই প্রশ্ন করা হলে, কী বললেন, তুলে ধরা হল এই প্রতিবেদনে।
সঞ্চালনের অর্থ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। হস্ত সঞ্চালন, জীবন সঞ্চালন, মঞ্চ সঞ্চালন মানেটা একই। জীবনের ক্ষেত্রে যেমন বিষয়টা কঠিন, মঞ্চের ক্ষেত্রেও কঠিন। তা যে কোনও ধরনের মঞ্চ হতে পারে। থিয়েটার হতে পারে, অস্কার হতে পারে কিংবা হতে পারে কোনও রিয়্যালিটি শোয়ের মঞ্চ। যাঁরা সঞ্চালনা করেন, তাঁদের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে। কেন? কারণ, খুব খুঁটিয়ে বিষয়বস্তু সম্পর্কে না জানলে সঞ্চালনা করা সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করি না। শুধু তাই নয়, সঞ্চালনা করতে গেলে বেশ কয়েকটি পয়েন্ট মাথায় রাখতে হয়।
১.দর্শক কী রকম, তাদের মাতিয়ে রাখতে হবে। ২. শোয়ের গুরুত্ব বুঝে সঞ্চালনা করতে হবে ৩. শো-তে অংশগ্রহণ কারা করছেন? আপনি কি তাঁদেরও হোস্ট করছেন নাকি শুধুমাত্র শোয়ের শুরু এবং শেষেই আপনার কাজ? স্টেজে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে কথোপকথন থাকলে সেটাও মাথায় সাজিয়ে নিতে হয়।
তবে আমাদের সঞ্চালকদের কিছু কিছু ক্ষেত্রে কঠিন হয়ে যায়। কারণ, অনেকেই গুরুত্বটা বুঝতে পারেন না, গুলিয়ে ফেলেন। কোথায় কোন কথাটা বলতে হবে, তা তাঁরা বুঝতে পারেন না। এটা তাঁদের দোষ নয়। সঞ্চালনা এমন একটি পাঠ, যা পুঁথিগত বিদ্যা দিয়ে হয় না। নিজেকে সবসময় শিখিয়ে যেতে হয়। এবং আপনি মঞ্চে যত ভুল করবেন তত আপনি শিখবেন। মঞ্চ নির্দয় ভাবে ভাবে শেখায়। যে কোনও ধরনের সঞ্চালনাতেই প্রগাঢ় পড়াশোনা লাগে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমি কালিকাপ্রসাদের স্মরণ সভায় আমি যে ভাবে সঞ্চালনা করব, একটা ডান্স রিয়্যালিটি শোয়ের ফাইনালে নিশ্চয়ই সেভাবে সঞ্চালনা করব না। আমি বিশ্বাস করি ৭০ শতাংশ পড়াশোনা করে তবেই মঞ্চে ওঠো। আমার ক্ষেত্রেও আমি ৭০ শতাংশ তৈরি হয়ে যাই, তারপর বাকি ৩০ শতাংশ স্টেজে পরিস্থিতি বুঝে কাজ করি। তবে এই আত্মবিশ্বাস ২০১৯-এ আমার ছিল না, যা আজ তৈরি হয়েছে। এই আত্মবিশ্বাসের পিছনে রয়েছে প্রচুর ভুল।
আমার একটি ঘটনা স্পষ্ট মনে আছে। রবীন্দ্রসদনে আমি একটি সঙ্গীতানুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেছিলাম। যেখানে অতিথি আসনে ছিলেন আমার গুরুমশাই জগন্নাথ বসু এবং গুরুমা ঊর্মিমালা বসু। পরের দিন আমার গুরুমশাই ফোন করে বলেন ‘তোমার সঞ্চালনা আমার পছন্দ হয়নি। তুমি শোয়ের গুরুত্ব বুঝতে পারোনি। তুমি মির্চি অগ্নি ছিলে, তোমাকে অগ্নিজিৎ হয়ে সঞ্চালনা করতে হত।’এই কথা আমি আজীবন মনে রাখব।
এই কয়েক বছরে এটা আমার উপলব্ধি, কোনও শো সঞ্চালনা করতে গেলে, সেই অনুষ্ঠানের অতিথিকে অসুবিধাজনক পরিস্থিতিতে না ফেলাই ভাল। তাতে পুরো উদ্দেশ্যটাই নষ্ট হয়ে যায়। শেষে একটাই কথা বলতে চাইঃ পড়াশোনার কোনও বিকল্প হয় না।
আরও পড়ুন: Rachana Banerjee: ঝুমঝুম থেকে রচনা, নাম দিলেন সুখেন দাশ, তাঁকে মনে রেখেছেন রচনা?