Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

৬ বছরের সুপ্রিয়া, পায়ে হেঁটে আসেন বর্মা থেকে কলকাতা, ‘লাশ’ দেখেছিলেন তখনই

Supriya Chowdhury Secrets: আচ্ছা, সুপ্রিয়াদেবীর কেরিয়ারে স্ট্রাগল কতখানি? অভিনেত্রী বলেছিলেন, "ইন্ডাস্ট্রিতে এসে নতুন করে কী স্ট্রাগল করব। যে স্ট্রাগল দেখেছিল জন্মানোর পর, সেটার কাছে বাকি সবকিছুই ছোট।" জন্মের পর কী ঘটেছিল অভিনেত্রীর জীবনে? কেন সেই সময়কার কথা বলতে গিয়ে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত শিউরে উঠতেন সুপ্রিয়াদেবী?

৬ বছরের সুপ্রিয়া, পায়ে হেঁটে আসেন বর্মা থেকে কলকাতা, 'লাশ' দেখেছিলেন তখনই
সুপ্রিয়া দেবী।
Follow Us:
| Updated on: Apr 16, 2024 | 11:30 AM

‘মেঘে ঢাকা তারা’ ছবির নীতাকে কে না চেনেন! ‘দাদা আমি বাঁচতে চাই’, বলে আর্তনাদ করে ওঠা সেই বাঙালি নায়িকাকে কেউ কোনওদিনও ভুলতেই পারবেন না–সুপ্রিয়া দেবী। যাঁকে আপামর বাঙালি চেনেন বেণু নামে। এই বেণুর সঙ্গেই জীবনের বাকি সময়টা কাটিয়েছিলেন মহানায়ক উত্তমকুমার। সুপ্রিয়া দেবী পর্দার নায়িকা। ডাকসাইটে সুন্দরী। দুর্দান্ত অভিনেত্রী। সেই সময়কার ‘হট’ (পড়ুন লাস্যময়ী) তারকাও। কিন্তু জানেন কি, সুপ্রিয়াদেবীর শৈশব তেমনই ভয়াবহ এবং ঘটনাবহুল। সেই ঘটনাগুলি নিয়ে একটা আস্ত বাংলা ছবি তৈরি হতে পারে।

৬ বছরের সুপ্রিয়া। সেই সময় তাঁর নাম ছিল কৃষ্ণা। ডাকনাম বেণুই। পরিবারের সকলের সঙ্গে সেই ছোট্ট কৃষ্ণা থাকতেন বর্মা (এখন মায়ানমার)-এ। ১৯৩৯ সালে জাপান দখল নিল বর্মা। দেশ ছাড়তে বাধ্য হলেন সুপ্রিয়ারা। বাবার নেতৃত্বে প্রায় ২০০জন বাঙালি বর্মা থেকে একমাস ধরে পায়ে হেঁটে পৌঁছলেন কলকাতায়। সেই পথচলা ছিল ছোট্ট কৃষ্ণা (পড়ুন সুপ্রিয়া)-র কাছে এক রোমহর্ষক যাত্রা!

সাধারণত ছোটবেলার স্মৃতি অনেকটাই ম্লান হয়ে যায় সময়ের ধুলোয়। কিন্তু একমাসের সেই যাত্রা আমৃত্যু স্মরণে রেখে দিয়েছিলেন সুপ্রিয়াদেবী। এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেছিলেন, “বাবার নেতৃত্বে বর্মা থেকে কলকাতায় যাত্রা শুরু করেছিলাম আমরা। মণিপুরে পৌঁছেছিলাম প্রথমে। তারপর এসে পৌঁছাই কলকাতায়। সেই একমাসের যাত্রাপথ ছিল পায়ে হাঁটা। আমি, আমার গোটা পরিবার.. সব মিলিয়ে ২০০জন বাঙালি রওনা দিয়েছিলাম। নদী পেরনোর সময় জল ফুরিয়ে গিয়েছিল…”

বলতে-বলতে গলা ধরে আসে বৃদ্ধা সুপ্রিয়ার। বলেন, “আমাদের দলে সদ্যজাত শিশুও ছিল মায়ের কোলে। জল ফুরিয়ে যাওয়ায় বিপত্তি তৈরি হয়। কিন্তু নদীর জল খেলেই মৃত্যু। জল দূষিত। গরু-মানুষের মৃতদেহ ভেসে বেড়াচ্ছে। রাস্তাতেই এক ব্যক্তির পক্স হল। সে আর এগোল না। বাকিদের এগিয়ে যেতে বলল। সে জানে মৃত্যু অবধারিত। নতুন বউকে বলল, তুমি এগিয়ে যাও পথে। থেমো না। আমার এখানেই যাত্রা শেষ।”

কথাগুলো বলতে-বলতে চোখ ছলছল করে ওঠে সুপ্রিয়াদেবীর। সেই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও নিরাপদে পরিবারের সঙ্গে কলকাতায় পৌঁছলেন তাঁরা। বলেন, “ইন্ডাস্ট্রিতে এসে নতুন করে কী স্ট্রাগল করব। যে স্ট্রাগল দেখেছিল জন্মানোর পর, সেটার কাছে বাকি সবকিছুই ছোট।” সুপ্রিয়া জানিয়েছিলেন, সেই যাত্রায় নাকি একবার রাতে সকলে মাঠে শুয়ে ঘুমচ্ছিলেন, হঠাৎই একটি গরু এসে অভিনেত্রীর কানের কাছে ‘হাম্বা’ বলে ডাকে…