৫০ নয় ১০০ শতাংশ ‘ফিল আপ’ হবে সিনেমাহল, ফেস্টিভ্যাল মঞ্চ থেকে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
“একদিন বলিউড, হলিউড টেক্কা দিয়ে বাংলা সিনেমা প্রথম জায়গা নেবে।” বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
একের পর এক স্লাইডে চলল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অভিনীত ছবির কোলাজ, কখনও তাঁর হাতে আঁকা ছবিগুলো ছুটে গেল স্ক্রিন জুড়ে। কখনও তাঁর কণ্ঠে রবিঠাকুরের গান আবার কখনও কবিতা। কখনও শোনা গেল সংলাপ। সমস্ত মিলিয়ে যখন কয়েক মিনিটের সে ভিডিও শেষ হল, চোখের কোণার জল মুছে নিলেন অভিনেত্রী সৌরসেনী মৈত্র।
আর ঠিক সে মুহূর্তে পরমব্রত একটু থেমে বললেন, “এই ছবিগুলো সত্যিই মন ভারি করে দেয়…”
আজ ছিল ২৬ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠান। আর সে অনুষ্ঠানেও ‘অপু’ ফিরে ফিরে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বারবার বলেছেন প্রিয় ‘সৌমিত্রদা’র কথা। সত্যজিৎ রায়ের ‘অপুর সংসার’ ছবিতে উন্মোচন হতে চলেছে চলচ্চিত্র উৎসবের রূপোলী পর্দা।
অনুষ্ঠানের গোটাটাই হল ভার্চুয়ালি। অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, অরিন্দম শীল, গৌতম ঘোষ, কৌশিক সেন, ঋতুপর্ণা, দেব, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, তনুশ্রী, সোহম, কাঞ্চন, পায়েল, ঋতাভরী, সৌরসেনী, আরও অনেকে। হাজির ছিলেন পরিচালক অনুভব সিনহা। অনুষ্ঠানের সূত্রধার ছিলেন পরমব্রত এবং জুন মালিয়া। ভার্চুয়ালি যোগ দিলেন বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর, মিস্টার কিং খান। বললেন, “কোভিড শিখিয়েছে পরিবার নিয়ে থাকতে, আর আমার কাছে আমার পরিবার বাংলাও।” আক্ষেপ করলেন এ বছর উৎসবে উপস্থিত না থাকার জন্য তবে খুব শিগ্গির শহরে আসছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “লেকিন রকষাবন্ধন মে আনা হ্যাঁয়, ডোন্ট ফরগেট ওকে?” আর শাহরুখ বললেন, “হান্ড্রেড পারসেন্ট। আমি আসব এবং উপহার নিয়ে আসব।”
বাংলা প্রতিবছর চলচ্চিত্র উৎসবে যে আড়ম্বর দেখে এসেছে, তা করোনা কারণে অনেকটাই ফিকে হয়েছে এবার, স্বীকার করলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেও, বললেন “ছোট করে হচ্ছে।”…
কোভিড পরিস্থিতিতে মঞ্চে উপস্থিত থেকে উৎসবকে সমৃদ্ধ করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী। গত এক বছরে প্রয়াত শিল্পীদের জন্য মনখারাপের কথাও ব্যক্ত করেন তিনি।
হলমালিকদের জন্য এক সুখবর দিলেন উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে। পুরোপুরিভাবে সিনেমাহল খোলার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে মাস্ক এবং স্যানিটাইজার এবং স্প্রে করার কথাও মনে করিয়ে দিলেন।
চলচ্চিত্র উৎসব প্রসঙ্গে বললেন সিনেমাহলের বাইরে নন্দন ‘একতারা’-তেও এলইডি বসিয়ে সিনেমা দেখানো যেতে পারে। ই-টিকিট নিয়েও পরামর্শ দিলেন। দুরত্ববিধি মানতে হবে, মুখে মাস্ক পরতে হবে এবং নিয়মিতভাবে স্যানিটাইজ করা হবে প্রেক্ষাগৃহগুলো। নিজে বারবার মাস্ক পরার কথাও বললেন মঞ্চে উপস্থিত কলাকুশলীদের। এমনকি ‘স্বাস্থ্যসাথী’তে নাম লিখিয়ে রাখার আবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী। শেষের দিকে বললেন, “একদিন বলিউড, হলিউড টেক্কা দিয়ে বাংলা সিনেমা প্রথম জায়গা নেবে।”