Tollywood Gossip: এত সাংঘাতিক সব প্রস্তাব পেয়েছি যে ছবি করতে গিয়েও ভয়ে সরে এসেছি: ত্রমিলা ভট্টাচার্য
Tollywood Gossip: সিরিয়ালের চেনা মুখ তিনি। অভিনয়ের কেরিয়ার বহু দিনের। যিশু সেনগুপ্তর নায়িকা হয়েছেন বহুবার। তিনি ত্রমিলা ভট্টাচার্য। টেলিভিশনের দর্শক তাঁকে চিনলেও বড় পর্দা আজও তাঁকে আপন করেনি সেভাবে। কেন? কেরিয়ারের এতগুলো বছর পেরিয়ে ত্রমিলা কী বলছেন? শুনল টিভিনাইন বাংলা।
সিরিয়ালের চেনা মুখ। অভিনয়ের কেরিয়ার বহু দিনের। যিশু সেনগুপ্তর নায়িকা হয়েছেন বহু বার। তিনি ত্রমিলা ভট্টাচার্য। টেলিভিশনের দর্শক তাঁকে চিনলেও বড় পর্দা আজও তাঁকে আপন করেনি সেভাবে। কেন? কেরিয়ারের এতগুলো বছর পেরিয়ে ত্রমিলা কী বলছেন? শুনল TV9 বাংলা।
শুরুটা কী করে?
১৯৯৭ সালে শুরু। ‘সীমারেখা’ বলে একটা ধারাবাহিক দিয়েই শুরু আমার। বীরেশ চট্টোপাধ্যায় পরিচালক ছিলেন।
ইচ্ছে ছিল অভিনেত্রী হবেন?
বাড়ির পরিবেশে গান-বাজনার চল ছিল। বাবা থিয়েটার করতেন। এখনকার অনেক নামীদামি অভিনেতা কিন্তু আমাদের বাড়িতে মহড়া দিতে আসতেন। তবে আমি অভিনেত্রী হব প্ল্যান করিনি।
তাহলে?
সে সময় হঠাৎই আমার বাবা মারা যান। আমার কাকা অর্জুন ভট্টাচার্যে চিত্র নাট্যকার। তাঁর হাত ধরেই আমার আগমন। ‘সীমারেখা’র কথা তিনিই প্রথম আমাদের জানান। মা তো শুনেই ভীষণ রেগে গিয়েছিলেন। বলে দেয়, ‘‘ও এসব পারবে টারবে না।’’ তবে অবশেষে কাকাই মা’কে রাজি করিয়ে আমায় সেটে নিয়ে যান। সব ফাইনাল হল। আর ওই দু’-তিন দিন শুটের মধ্যেই আমার কাছে আরও অফার আসতে লাগল। এভাবেই শুরু আমার জার্নি।
যিশু সেনগুপ্তর নায়িকা ছিলেন, কেরিয়ার গ্রাফ কি সঠিকভাবে এগোল?
সেভাবে দেখতে গেলে খুব একটা এগোয়নি। কারণ, প্রথম দিন থেকেই মায়ের কড়া হুকুম ছিল যাই-ই করি না কেন পড়াশোনাটা করতেই হবে। আর এরই মধ্যে হঠাৎই আমার বিয়ে হয়ে যায়…
লাভ ম্যারেজ?
হ্যাঁ, আমার বর আমার ক্লাসমেট ছিল। আমাদের দু’জনেরই বিদেশে গিয়ে পড়াশোনার খুব ইচ্ছে ছিল। আমি ফিল্ম স্টাডিজ আর ও মার্চেন্ট নেভি… আর তা ছাড়া আমাদের তখনকার জগৎটা না এখনকার মতো ছিল না। অনেকটা আলাদা ছিল।
আলাদা বলতে?
এখন প্রোডাকশন থেকে শুরু করে ক্যামেরা মেয়েরা সামলাচ্ছে… তখন কিন্তু এই চলটা ছিল না। গোটা ইন্ডাস্ট্রিটাই অনেক বেশি পুরুষতান্ত্রিক ছিল। ছবি করতে গিয়ে এমন-এমন কথা শুনতে হত যে, রাগের চোটে করিনি কাজ। প্রচুর ভাল অফার ছেড়েছি। কিন্তু ওই অফারগুলো এতটাই সাংঘাতিক ছিল যে, নেওয়ার মতো মানসিকতাই ছিল না। এখনকার পরিবেশ আর ছবির গল্প তখনকার থেকে আকাশ-পাতাল ফারাক।
তার মধ্যে থেকেও তো অনেক অভিনেত্রী উঠে এসেছেন…
হ্যাঁ, উঠে এসেছেন। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে ওই একটা-দু’টো সাংঘাতিক অফার শুনেই যা হয়ে গিয়েছে যে, ছবিতে অভিনয় করার ইচ্ছেটাই চলে গিয়েছিল। তবে হ্যাঁ, সিরিয়াল কিন্তু মেয়েদের জন্য অনেক নিরাপদ ছিল। আর সিরিয়ালে সাহিত্য নিয়ে কত ভাল-ভাল কাজ হয়েছে তখন। আর সে সময় তো টেলিফিল্মের স্বর্ণযুগ।
ছোট পর্দায় আটকে থাকার আফসোস হয় না?
আমি না প্রচারটা কোনওদিনই খুব একটা করতে পারলাম না। আর একই সঙ্গে লাজুকও। আমি জানি কাজ হচ্ছে কিন্তু গিয়ে বলব… কাজ দাও…এটাই হয়ে উঠল না। সত্যি কথা বলতে শুটিংয়ের পর পার্টি-প্ল্যানিং… আমার পরিবেশটা কিন্তু এ রকম নয়। কাজ শেষ করে দৌড়ে বাড়ি আসতে হয়। মেয়ের বয়স ১০। বর জাহাজে কাজ করে। অর্ধেক সময় বাড়ি থাকে না। তাই আমার উপরেই সবটা…
নিজেকে প্রতিযোগিতার মধ্যেই রাখলেনই না?
আমি মনে করি পাঁচটা লোক যে দেখছে, এটাই অনেক। মাঝে বারবার ব্রেক নিয়েও কিন্তু ফিরে এসে কাজ কিন্তু পেয়েছি। এটাই বা কম কী? এমন অনেককে দেখি আমি যখন হিরোইনের চরিত্রে অভিনয় করতাম, তাঁরা চরিত্রাভিনেতার সুযোগও পেতেন না। আজ তাঁদের নিয়ে কত মাতামাতি। আমার কিন্তু এ নিয়ে কোনও আফসোস দুঃখ কষ্ট কিচ্ছু নেই। টানা কাজ করার জন্য আমার টিনএজটা উপভোগ করিনি। বিয়ের পরেও যদি ওই একই প্রেশার নিয়ে কাজ করে যেতাম, তবে সংসারে সময়টা কম পড়ে যেত। এই নিয়েই আমি ভাল আছি। বেশ আছি আমি।