বাবা রাতে আমাকে চিঠি লিখেছিলেন, বাড়ি ফিরে পড়লাম, পরের দিন সকালে কিছু না বলেই…: শাশ্বত
এই যুগের স্টারকিডদের মা-বাবারা ছেলে বা মেয়ের সিনেমার প্রচারে কোমর বেঁধে নেমে পড়েন। সোশাল মিডিয়ায় তাঁদের নিয়ে একাধিক পোস্ট। কিন্তু আগে এই ট্রেন্ড ছিল না।

এই যুগের স্টারকিডদের মা-বাবারা ছেলে বা মেয়ের সিনেমার প্রচারে কোমর বেঁধে নেমে পড়েন। সোশাল মিডিয়ায় তাঁদের নিয়ে একাধিক পোস্ট। কিন্তু আগে এই ট্রেন্ড ছিল না। বরং স্টারকিডরা কড়া নজরে থাকতেন তাঁদের তারকা মা-বাবার। ঠিক যেমনটি ছিলেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। বাংলা ছবির কিংবদন্তি অভিনেতা শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের ছেলে হয়েও, ইন্ডাস্ট্রিতে শাশ্বত যা করেছেন, তা একেবারেই নিজের ট্যালেন্টে। তবে হ্যাঁ, প্রচ্ছন্ন সাপোর্ট কিন্তু শাশ্বত সব সময়ই পেয়ে গিয়েছেন বাবার থেকে। কখনও তা প্রশংসার মোড়কে, কখনও অভিভাবক হিসেবে সঠিক পথ দেখানোয়। কেরিয়ারের শুরুতে শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের ভোকাল টনিকই, শাশ্বতকে আজ শুধু টলিউড অভিনেতা নয়, বরং তৈরি করেছে প্যান ইন্ডিয়ান অ্যাক্টর। তা কেমন ছিল শুভেন্দুর সঙ্গে শাশ্বতর সম্পর্ক? কোনওদিনই কি ছেলের অভিনয়ের প্রশংসা শুভেন্দু করেননি? সম্প্রতি স্ট্রেটআপ উইথ শ্রী- ইউটিউব চ্যানেলের এক সাক্ষাৎকারে মনের কথা শেয়ার করলেন শাশ্বত।
ফিল্মি কেরিয়ারের একদম শুরুতে শাশ্বতকে স্পষ্ট শুভেন্দু বলে দিয়েছিলেন, অভিনয়টা ভাত রান্না নয়। একটা প্রসেসের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। দূর থেকে খুবই ঝকঝকে লাগে এই দুনিয়া। কিন্তু আসলে খুবই কঠিন এই সিনে জগত। বাবার এই কথাকে আমল দিয়েই শাশ্বত পা রেখেছিলেন প্রথমে থিয়েটার, তারপরে সিনেমায়।
শাশ্বতর কথায়, বাবা জীবনে আমাকে কোনওদিন বকেননি । একবার তাকালেই কাজ হয়ে যেত। যেদিন বাবা তুই থেকে তুমি বলতেন, সেদিন বুঝতে হবে, চাপ আছে। এমনিতে তুইই বলতেন, কিন্তু হঠাৎ যখন বাবার মুখে শোনা যেত, তুমি একটু সন্ধেবেলা বাড়িতে থেকো। কথা আছে। ব্যস, এটা শুনলেই আমার চাপ শুরু হয়ে যেত।
এই খবরটিও পড়ুন
শুভেন্দু বরাবরই একটা জিনিস মেনে চলতেন। সিনেমা, শুটিংয়ের কথা কখনই বাড়িতে আলোচনা করতেন না। এমনকী, বাড়িতে কোনও ফিল্মি পার্টিও হত না। তবে একবার শাশ্বতর এক টেলিফিল্ম দেখে ছেলের প্রশংসা করেছিলেন তিনি। কিন্তু তা সামনাসামনি নয়, বরং চিরকূটে লিখে।
শাশ্বত জানালেন, পরিচালক পার্থ সেনের ‘ফিরে আসা’ নামের একটা টেলিফিল্মে কুশল চক্রবর্তীর বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। চুল পাকিয়ে একেবারে বয়স্ক লুক। পার্থদার বাড়ি গিয়ে টেলিফিল্ম দেখেছিলাম। সেদিন রাত ১২ টার সময় বাড়ি ফিরে দেখি বাবা যে চেয়ারটিতে বসতেন, তার পাশের টেবিলে একটা চিরকূট রাখা। লেখা রয়েছে, টেলিফিল্মে তোমার অভিনয় ভাল লেগেছে। বাবার থেকে এমন প্রশংসা পেয়ে খুবই আনন্দ হয়েছিল। আশা করেছিলাম, পরের দিন হয়তো বাবার সামনে দাঁড়ালে, আরও প্রশংসা করবেন। কিন্তু তেমনটা হল না। পরের দিন সকালে বাবা আর কিছুই বলেননি। চুপচাপ খবরের কাগজ পড়ছিলেন। ফিরেও তাকায়নি আমার দিকে। এমনই ছিলেন তিনি।





