Digital Detox: টেকনোলজি থেকে ব্রেক নেওয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ভাল হতে পারে?
আনপ্লাগড নামের একটি ব্রিটিশ স্টার্ট-আপ রয়েছে। এরা লন্ডনের কাছাকাছি বেশ কয়েকটি অফ-গ্রিড কেবিন পরিচালনা করে। ২০২০ সালে এদের প্রথম শাখা শুরু হয়, তারপর থেকে তারা এখনও পর্যন্ত ৫ টি শাখা খুলে ফেলেছে।
কয়েকটা সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া থেকে শুরু করে কাজের কল, সারাদিন আমাদের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে একটা ক্লান্তি আসে। মাঝে মধ্যেই আমাদের মনে হয়, ফোনটা দূরে রেখে কোথাও নিজস্ব কিছুটা সময় কাটিয়ে আসি। সম্প্রতি এক দম্পতি এমনটাই করেছেন। অ্যানা রেডম্যান আর তাঁর বয়ফ্রেন্ড লন্ডনের বাইরে একটি কাঠের কেবিনের দিকে রওনা হন, তাঁদের ফোন একটি সিল করা খামে লক করেন এবং এই বছরের শুরুতে তিন দিন অফ-গ্রিডে কাটান।
“কিছুদিনের জন্য ফোনের অ্যাক্সেস না পাওয়া সত্যিই আকর্ষণীয় মনে হয়েছিল,” জানান ২৯ বছর বয়সী রেডম্যান। রেডম্যান পাবলিক রিলেশনে কাজ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে “ডিজিটাল ডিটক্স”-এর পরিকল্পনা করেছিলেন। কারণ তাঁর প্রায় সমস্ত সামাজিক যোগাযোগ কোভিডকালীন লকডাউনের সময় অনলাইন হয়ে গেছিল।
এই দম্পতিদের মতোই অনেকেই রয়েছেন যাঁরা প্রযুক্তি থেকে সাময়িক বিরতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ এই প্যান্ডেমিক মানুষের মধ্যে প্রযুক্তিগত ক্লান্তি বাড়িয়ে তুলেছে। তাঁদের এই চাহিদা পূরণের জন্য এখন বিভিন্ন ধরনের উপায়ও তৈরি হয়েছে।
এমন কিছু অ্যাপ তৈরি হয়েছে যা মানুষকে সাময়িকভাবে তাঁদের ডিভাইস থেকে দূরে রাখতে পারে। এই অ্যাপগুলি একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তাঁদের ডিভাইসকে লক করে দিতে পারে। আবার এমন কিছু ওয়াই-ফাই জোন তৈরি করা হয়েছে যা গেস্ট ওয়াই-ফাই অ্যাক্সেস লিমিটেড করে রাখে। এছাড়া এমন অনেক রেস্তোরাঁ আছে যেখানে টেবিলে ফোন নিষিদ্ধ থাকে। এই ধরনের সমাধানগুলি মানুষকে বাস্তব জীবনের সাথে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে।
ইন্ডাস্ট্রির এক্সপার্টস যাঁরা, তাঁদের মতে, প্যান্ডেমিকের আগেও সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ডিজিটাল ডিটক্সিংয়ের প্রভাব বাড়ছিল।
মার্কেট রিসার্চ ফার্ম জিডব্লিউআই এর ২০১৮ সালের জরিপে দেখা গেছে ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৪,০০০ এরও বেশি লোকের মধ্যে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন ডিটক্সে আগ্রহী ছিলেন। এঁদের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ অনলাইনে থাকার সময় সীমিত করার চেষ্টা করেছিলেন।
আনপ্লাগড নামের একটি ব্রিটিশ স্টার্ট-আপ রয়েছে। এরা লন্ডনের কাছাকাছি বেশ কয়েকটি অফ-গ্রিড কেবিন পরিচালনা করে। ২০২০ সালে এদের প্রথম শাখা শুরু হয়, তারপর থেকে তারা এখনও পর্যন্ত ৫ টি শাখা খুলে ফেলেছে। কো-ফাউন্ডার হেক্টর হিউজেস জানিয়েছেন, পুরো গ্রীষ্মকাল জুড়ে তাদের বুকিং ছিল।
থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে তিনি বলেন, “মানুষ সত্যিই একটা ব্রেক চায়। আমি মনে করি এটা লকডাউনের সময় অনেক বেশি পরিমাণে স্ক্রিন টাইম শেয়ার করার সরাসরি ফলাফল।”
তিনি যোগ করেন, “আমরা নগর জীবন থেকে এক ঘণ্টার জন্য কেবিনের জীবনকে সরিয়ে রাখতে পারি। লোকেরা সেখানে গিয়ে সত্যি সত্যিই তাঁদের ফোন একটা বাক্সে বন্ধ করে রেখে দেয়। তাঁদের একটা মানচিত্র আর সঙ্গে একটা নোকিয়া ফোন দেওয়া হয়। এরপর তাঁদের তিন রাতের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়।”
আরও পড়ুন: ব্যায়াম কীভাবে আপনার মস্তিস্কের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে পারে, জেনে নিন