Gaming Addiction: দিনরাত মোবাইলে বুঁদ আপনার সন্তান, গেমে আসক্ত কিনা বাবা-মায়েরা বুঝবেন কীভাবে?

Child Mental Health: ভুলে গেলে চলবে না যে, অতিমারির কারণে বাড়ির সব বাচ্চারা স্কুল-কলেজে না গিয়ে টানা ২ বছর বাড়ির মধ্যেই আবদ্ধ ছিল। সেই সময় মোবাইলে স্ক্রিন টাইমের মাত্রাও বেড়েছে।

Gaming Addiction: দিনরাত মোবাইলে বুঁদ আপনার সন্তান, গেমে আসক্ত কিনা বাবা-মায়েরা বুঝবেন কীভাবে?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 17, 2022 | 6:22 PM

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য অনুসারে, গেমিং অ্যাডিকশন (gaming addiction) বা আসক্তি এখন একটি ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। গেমিংয়ের প্রতি অনিয়ন্ত্রণই এই আসক্তি ডেকে আনছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে করোনা লকডাউনের (COVID 19 Lockdown) ফলে শিশু থেকে কিশোর সকলের মধ্যেই মোবাইলের প্রতি আসক্তি তৈরি হয়েছে। দিনরাত নাওয়া-খাওয়া ভুলে শুধুই মুখ গুঁজে মোবাইলে চোখ রেখে বসে আছে কিশোর-কিশোরীরা। স্কুলে গরমের ছুটিতে সেই আচরণ আরও বেড়ে গিয়েছে। দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা, রাতভর গেম খেলা, কিছু বললেই দ্রপট রেগে যাওয়া, সবসময় খিটখিটে মেজাজ, ঘুমের স্বপ্ন দেখা ও নানান কথা বলা এখন দৈনন্দিন ঘটনা হয়ে গিয়েছে। ফলে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও ধীরে ধীরে কমে যায়। পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর যে নেতিবাচক পরিবর্তন দেখা গিয়েছে, তা অকল্পনীয়। লেখাপড়ায় আগ্রহ ও মনোযোগ কমেছে । গোটা পরিস্থিতি নিয়ে অভিভাবকরা তো বটেই, মানসিক বিশেষজ্ঞরাও উদ্বিগ্ন।

শুধু আসক্তি নয়, মানসিকভাবে এমন বিকৃত হয়ে গিয়েছে যে এক ১৬ বছর ব.সি কিশোর তার মাকে গুলি করে খুন পর্যন্ত করে বসেছে। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কারণ কী? পুলিশি জেরায় ওই কিশোর জানিয়েছে, অনলাইন গেম পাবজি খেলতে বাধা দেওয়ায় নিজের মাকে খুন করতে তার বিবেকে ঠেকে নি। এমনকি অনুতপ্তহীন ছেলে বিচারককে জানিয়েছে, যা শাস্তি দেওয়া হবে, তাতে কোনও দুঃখ-কষ্ট নেই। বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, গেমিং একটি আচরণগত আসক্তি। যার অর্থ হল আসক্তির প্রকৃতি যে কোনও পদার্থ বা বস্তুর প্রতি আসক্ত হতে পারে। তাই যখন কোনও এক কিশোর বা কিশোরী গেমের প্রতি আসক্ত হচ্ছে, তখন সে সেই পদার্থ অপব্যবহারের শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছে। লখনউয়ের ওই খুনের ঘটনায় পুলিশ জানিয়েছে, ছেলেটি তার বাবাকে জানানোর আগে ২দিন মায়ের মৃতদেহ একটি ঘরে লুকিয়ে রেখেছিল। এই ধরণের আচরণকে কোনওভাবেই ব্যাখ্যা করা যায় না। কারণ এর পিছনে মানসিক অনেক স্তর রয়েছে। আমাদের বুঝতে হবে শিশুরা তার পরিবেশের চারিপাশে যা দেখে তা তাদের মনের মধ্যে প্রভাব পড়ে। তাই গেমিংয়ের প্রভাবও এক্ষেত্রে মূল্যায়ন করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। ভুলে গেলে চলবে না যে, অতিমারির কারণে বাড়ির সব বাচ্চারা স্কুল-কলেজে না গিয়ে টানা ২ বছর বাড়ির মধ্যেই আবদ্ধ ছিল। সেই সময় মোবাইলে স্ক্রিন টাইমের মাত্রাও বেড়েছে। এছাড়া অনলাইন পড়াশোনার দৌলতে কিশোর-কিশোরীদের হাতে খুব সহজেই মোবাইল হাতে এসে পড়েছে।

কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন?

বাড়ির কেউ যদি গেমিংয়ের প্রতি আসক্ত হোন বা বুঝতে পারেন যে, সে আসক্ত, তাহলে তার খুব তাড়াতাড়ি ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ নেওয়া দরকার। একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলার পর চেষ্টা করুন আসক্তির মূল কারণ কী। সামাজিক সমাবেশে সক্রিয়ভাবে সশরীরে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করুন। যখনই গেম খেলার জন্য মন চাইবে , তখন নিজেকে সময় দিন, বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে মন খুলে কথা বলুন, শখের সঙ্গে গেম খেলুন। জীবনের অন্যান্য জিনিসের প্রতি ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করুন।

বাবা-মায়েরা কীভাবে বুঝবেন, সন্তান গেমিংয়ে আসক্ত?

যদি শিশু পড়াশোনা এবং খেলাধুলার মতো আরও গুরুত্বপূর্ণ জিনিস যেমন গেম খেলে বেশি সময় ব্যয় করছে, তবে সেটি অবশ্যই উদ্বেগের কারণ। বর্তমান ও ভবিষ্যতে জীবনযাত্রার মানকে দারুণভাবে প্রভাবিত করতে পারে। তাই অভিভাবকদের অবশ্যই বাচ্চাদের জীবনের ভারসাম্য বজায় রাখতে ও চারপাশের জিনিসের প্রতি গুরুত্ব দিতে উত্‍সাহিত করে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

তাকে বোঝাতে হবে, একটি ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপনের মধ্যে অল্পসল্প গেম খেলা ঠিক আছে। মোবাইল বা অনলাইন গেমিং ছাড়াও আরও অনেক জিনিস আছে, যেগুলি জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাড়িতে বিনোদন ও পড়াশোনার জন্য সবকিছু রয়েছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও মোবাইল নিয়ে বুঁদ হয়ে আছে, তখনই বুঝবেন আপনার সন্তানের গেমিং অ্য়াডিকশন হয়েছে।