লাদাখের কনকনে ঠাণ্ডায় চিনকে যোগ্য জবাব দেওয়ায় সাহসিকতার সম্মান পাচ্ছেন ২০ জন আইটিবিপি জওয়ান

এই প্রথমবার একসঙ্গে ২০ জন আইটিবিপি জওয়ান সম্মানিত দেওয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকেই গত বছরের ১৫ জুনের এই সংঘর্ষের রাতে হাজির ছিলেন গালোয়ানে।

লাদাখের কনকনে ঠাণ্ডায় চিনকে যোগ্য জবাব দেওয়ায় সাহসিকতার সম্মান পাচ্ছেন ২০ জন আইটিবিপি জওয়ান
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 14, 2021 | 8:05 PM

নয়া দিল্লি: সমতলের থেকে অনেক বেশি উচ্চতা, আর প্রবল ঠাণ্ডা। তারই মধ্যে দিনের পর দিন চিনের সেনাবাহিনীর চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়েছিল এই জওয়ানরা। চরম প্রতিকূলতার মধ্যেও মাটি ছাড়েননি কেউ। এক-দিন নয়, এক বছর অতিক্রম করে আজও সেই সংঘাত পুরোপুরি মেটেনি। দফায় দফায় বৈঠকের পরও চিন নিজের অবস্থানে অনড় ছিল। তাই লাদাখে কর্তব্যরত ২০ জন জওয়ানকে স্বাধীনতা দিবসের আগে বেছে নেওয়া হল সাহসিকতার পুরস্কারের জন্য। ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশের (ITBP) ২০ জন জওয়ানকে দেওয়া হবে সাহসিকতার সম্মান।

এই প্রথম এত বেশি সংখ্যক আইটিবিপি জওয়ানকে এই সম্মান দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা এই সম্মান পাচ্ছেন তাঁদের মধ্যে আটজন গালোয়ান উপস্থিত ছিলেন ২০২০-র ১৫ জুনের সংঘর্ষের সময়। সেই রাতে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে শহিদ হন ২০ জন ভারতীয় জওয়ান। ওই রাতে প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও মাতৃভূমিকে রক্ষার যে অদম্য জেদ দেখিয়েছিলেন জওয়ানরাম তার জন্যই এই বিশেষ পুরস্কার। এ ছাড়া, লাদাখের ফিঙ্গার ফোরে ওই গত বছরের ১৮ জুন যে সংঘাত হয়, সেখানেও উপস্থিত থাকায় সম্মানিত হচ্ছেন আরও ৬ জওয়ান। তারও আগে, গত বছরের মে মাসে লাদাখের হট স্প্রিং-এ চিনকে ঠেকাতে শত্রুপক্ষের মুখোমুখি হন ভারতীয় জওয়ানরা। সেই সংঘাতের সাক্ষী থাকা ৬ জনকেও সম্মানিত করা হচ্ছে। এ ছাড়া আরও তিনজনকে ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদীদের সঙ্গে লড়াইতে সাহসিকতা প্রদর্শনের জন্য পুলিশ মেডাল পাচ্ছেন তিন জওয়ান।

গত বছর থেকে চলা ভারত-চিন সংঘাতে শত্রুপক্ষকে ঠেকাতে লাদাখে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে ভারতীয় জওয়ানরা। একদিকে শত্রুপক্ষকে চোখে চোখে রাখা, অন্যদিকে আহত জওয়ানদের ফিরিয়ে এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হয়েছে তাঁদের। ১৫ জুন রাতে সেই সংঘাত চলেছিল প্রায় ১৭ থেকে ২০ ঘণ্টা। সেই রাতেই শহিদ হন ২০ জন। বর্তমানে সেই পরিস্থিতি অনেকটাই প্রশমিত হয়েছে। সেনাবাহিনী সূত্রে খবর, বর্তমানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার দু’পারে দুই দেশের ৫০ থেকে ৬০ হাজার জওয়ান উপস্থিত আছেন।

বর্তমানে অবশ্য একটু একটু করে বরফ গলতে শুরু করেছে লাদাখে। এখনও সংঘাতের সম্পূর্ণ ইতি না হলেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার একের পর এক অংশ থেকে সরে যাচ্ছে দুই দেশের সেনাবাহিনী। কিছুদিন আগেই গোগরা হাইটস থেকে সরে গিয়েছে দুই দেশের বাহিনী। গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এই খবর জানানো হয়েছে। গত ৩১ জুলাই দুই দেশের বৈঠকে ভারত ও চিনের মধ্যে এই গোগরা হাইটস নিয়ে কথা হয়। গত ৩১ জুলাই লাদাখ নিয়ে কমান্ডার স্তরের দ্বাদশ বৈঠক হয় চুসুল-মলদো সীমান্তে। আর সেই বৈঠকে PP17A অর্থাৎ গোগরা থেকে সেনা সরাতে রাজি হয় চিন। এরপরই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে PP15 পয়েন্ট অর্থাৎ হট স্প্রিং থেকে সেনা সরাতে রাজি নয় চিন। নিজেদের অবস্থানে এখনও অনড় তারা। আরও পড়ুন: ‘দানিশের ভুল ছিল আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করা’, ভারতের অবস্থান নিয়েও কড়া বার্তা তালিবানের