নীতীশ মুখ্যমন্ত্রী হলে কৃতিত্ব শিবসেনার!
সুশীল মোদী জানিয়ে দিয়েছেন, “নীতীশই মুখ্যমন্ত্রী”। শিবসেনার দাবি, শেষ পর্যন্ত তাই হলে এই কৃতিত্ব তাদেরই।
TV9 বাংলা ডিজিটাল: বিহারে আরও একবার ‘ডবল ইঞ্জিনের সরকার’। রাজ্য বিধানসভার ২৪৩ আসনের মধ্যে ১২৫ আসনে জয়যুক্ত হয়ে মসনদে এনডিএ (NDA) জোট (Bihar Election Result 2020)। সম্ভবত দীপাবলির পরের দিনই সপ্তমবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন নীতীশ কুমার (Nitish Kumar)। উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে পারেন সুশীল মোদীও (Sushil Modi)। অন্যদিকে মহাজোটের বৈঠকে সর্বসম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে, ইউপিএ-র পরিষদীয় নেতা হবেন তেজস্বী যাদব। অর্থাৎ, তিনিই বিহারে বিরোধী দলনেতা।
बिहार विधान सभा चुनाव एवं अन्य राज्यों में हुए उपचुनावों में पार्टी की भव्य विजय के अवसर पर आयोजित धन्यवाद कार्यक्रम के दृश्य। pic.twitter.com/VCLVcKmUxU
— BJP (@BJP4India) November 11, 2020
শিবসেনার (Shiv Sena) দাবি, কম আসন পেয়েও নীতীশ কুমার মুখ্যমন্ত্রী হলে তার কৃতিত্ব উদ্ধব ঠাকরেদের। শুধু তাই নয়, বিহারের সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে তেজস্বীর পরাজয়কে হার হিসেবেও দেখছে না শিবসেনা। সম্প্রতি শিবসেনা তাদের মুখপত্র ‘সামনা’-তে (Saamana) এক সম্পাদকীয়তে লিখেছে, “বিজেপি নেতা অমিত শাহ ঘোষণা করেছিলেন, তাঁর দল (জেডিইউ) কম আসন পেলেও নীতীশ কুমারই হবেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০১৯ সালে একই রকম প্রতিশ্রুতিই দেওয়া হয়েছিল শিবসেনাকে। কিন্তু সেই কথার খেলাপ হওয়াতেই মহারাষ্ট্র দেখেছিল রাজনৈতিক মহাভারত। যদি কম সংখ্যক আসন নিয়ে নীতীশ কুমারই মুখ্যমন্ত্রী হন, তাহলে কৃতিত্ব শিবসেনার।”
বিহার নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে শিবসেনার তরফে এও বলা হয়েছে, “বিহারে তেজস্বী যুগের সূচনা হয়েছে। ক্ষমতায় থাকা শক্তির বিরুদ্ধে একা লড়েছে। বিহারে নরেন্দ্র মোদীর ক্যারিশ্মা কাজ করেছে, এটা বললে তেজস্বীর লড়াইকে ছোট করা হবে। প্রথম দিকে লড়াইটা একমুখী থাকলেও তেজস্বীর কারণেই তা শেষপর্যন্ত হাড্ডাহাড্ডি জায়গায় পৌঁছেছে। তেজস্বী হারেননি। একটা নির্বাচনে হেরে যাওয়া মানেই পরাজয় নয়।”
এখানেই শেষ নয়। লালু তনয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে ‘সামনা’-য় লেখা হয়েছে, “নরেন্দ্র মোদী ওকে জঙ্গলরাজের যুবরাজ বলেছেন। প্রচারের শেষে আবেগ তাড়িত হয়ে নীতীশ বলেছেন এটাই তাঁর শেষ নির্বাচন। কিন্তু তেজস্বী কোনও ভাবেই লক্ষ্যভ্রষ্ট হননি। বরং স্থির থেকেছেন উন্নয়ন, বেকারত্ব, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবার মতো প্রয়োজনীয় বিষয়ে। বিহার দেশের রাজনীতিতে তেজস্বীকে উপহার দিল। ওঁর অবশ্যই অভিবাদন প্রাপ্য।”
প্রসঙ্গত, ২০১৯-এর নির্বাচনে জোট করে লড়েও শেষ পর্যন্ত শরিকি বিচ্ছেদের কারণে সরকার থেকে সরে যেতে হয় বিজেপি-কে। মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সির লড়াইয়ে শিবসেনা-বিজেপি ‘বন্ধু’ থেকে ‘বিরোধী’-তে পরিণত হয়। মসনদে বসার বাসনায় কংগ্রেস ও এনসিপি-র হাত ধরতেও কুণ্ঠা করেননি বাল ঠাকরের পুত্র উদ্ধব। কম আসন নিয়েও শরিকের সাহায্য নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন শিবসেনা প্রধান। তাঁদের অভিযোগ, বিজেপি কথা দিয়েও কথা রাখেনি, তাই মহারাষ্ট্রে ‘মহাভারত’ দেখতে হয়েছে।
বিহারে বিজেপির বড় শরিক হিসেবে উঠে আসা এবং জেডিইউ-র খারাপ ফলের পর অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন মহারাষ্ট্রের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না তো? এমনকি বিজেপি-র অন্দরেই মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবি ওঠে। যদিও সেই দাবি নস্যাৎ করে সুশীল মোদী জানিয়ে দিয়েছেন, “নীতীশই মুখ্যমন্ত্রী”। শিবসেনার দাবি, শেষ পর্যন্ত তাই হলে এই কৃতিত্ব তাদেরই। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশরও মত, মহারাষ্ট্রের অভিজ্ঞতাই ‘শিক্ষা’, আর ভুল করবে না বিজেপি।