অম্বানী ভবনকাণ্ড: মেসেজ এসেছিল তিহার জেল থেকেই, মুজাহিদ্দিন জঙ্গির সেল থেকে উদ্ধার ফোন

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তিহার জেলে (Tihar Jail) বসেই টর ব্রাউজার (Tor Browser) ব্যবহার করে টেলিগ্রাম (Telegram) মেসেজিং অ্যাপে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়েছিল এবং সেখান থেকেই বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি রাখার দায়স্বীকার করা হয়েছিল।

অম্বানী ভবনকাণ্ড: মেসেজ এসেছিল তিহার জেল থেকেই, মুজাহিদ্দিন জঙ্গির সেল থেকে উদ্ধার ফোন
ইন্ডিয়ান মুজাহিদ্দিনের জঙ্গি তেহসীন আখতার।
Follow Us:
| Updated on: Mar 12, 2021 | 1:21 PM

নয়া দিল্লি: মুম্বইয়ে শিল্পপতি মুকেশ অম্বানী(Mukesh Ambani)-র বাড়ির সামনে বিস্ফোরক রাখার পরিকল্পনা হয়েছিল দিল্লির তিহার জেল(Tihar Jail)-র ভিতর থেকেই, এমনটাই জানা গেল পুলিশ সূত্রে। বৃহস্পতিবারই মুম্বই পুলিশ (Mumbai Police) জানিয়েছিল, যে টেলিগ্রাম বার্তার মাধ্যমে ঘটনার দায়স্বীকার করে নিয়েছিল জইশ-উল-হিন্দ(Jaish-ul-Hind), তা তিহার জেলের আশেপাশের কোনও জায়গা থেকেই পাঠানো হয়েছিল। আজ আরও একধাপ এগিয়ে দিল্লি পুলিশের বিশেষ দল জানাল, ইন্ডিয়ান মুজাহিদ্দিন(Indian Mujahideen)-র এক জঙ্গিই তিহার জেল থেকে বসে এই বার্তা পাঠিয়েছিল।

গতকালই মুম্বই পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছিলেন যে টেলিগ্রাম মেসেজের লোকেশন ট্রাক করে দেখা গিয়েছে তা তিহার জেল বা তার আশেপাশের কোনও অঞ্চল থেকেই পাঠানো হয়েছিল। এরপরই দিল্লি পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। শুক্রবারই দিল্লি পুলিশ একটি বিবৃতিতে জানায়, তিহার জেল কর্তৃপক্ষ একটি মোবাইল ফোন আটক করেছে। অনুমান করা হচ্ছে, এই ফোনটি ব্যবহার করেই জঙ্গিহানার দায়স্বীকার করা হচ্ছিল।

এরপরই দিল্লি পুলিশের স্পেশাল টিম জানায়, ইন্ডিয়ান মুজাহিদ্দিনের এক জঙ্গি তেহসীন আখতার এই ফোনটি ব্যবহার করছিল। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী(Narendra Modi)-র জনসভাকে লক্ষ্য করে পটনায় যে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ হয়েছিল, তার অন্যতম চক্রী ছিলেন এই তেহসীন। এছাড়াও তিনি হায়দরাবাদ ও বুদ্ধগয়াতেও বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

আরও পড়ুন: ‘গান্ধী’ অনুপ্রাণিত নমো, ডান্ডি পদযাত্রা দিয়েই সূচনা হল ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসবে’র

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, টর ব্রাউজার ব্যবহার করে টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়েছিল এবং সেখান থেকেই বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি রাখার দায়স্বীকার করা হয়েছিল। তল্লাশিতে আরও একটি নম্বর পাওয়া গিয়েছে যা সেপ্টেম্বর মাস অবধি সচল ছিল। দুটি নম্বরই ভুয়ো পরিচয়পত্র দেখিয়ে কেনা হয়েছিল বলেই জানিয়েছে পুলিশ।

জঙ্গি সংগঠন জইশ-উল-হিন্দের নামে দায় স্বীকার করা হলেও ফোনটি ইন্ডিয়ান মুজাহিদ্দিন জঙ্গির সেল থেকে উদ্ধার হওয়ায় মূল চক্রী কারা, তা নিয়ে ধন্দ সৃষ্টি হয়েছে।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রিলায়েন্স ইন্ড্রাস্ট্রির মালিক মুকেশ অম্বানীর বাড়ির সামনে থেকে একটি বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি উদ্ধার করা হয়। গাড়িটির ভিতর থেকে ২০টি জিলেটিন স্টিক (Gelatin Stick) ও ডিটোনেটর (Detonator) উদ্ধার করে মুম্বই পুলিশ। তদন্ত শুরুর দু’দিন পরেই পুলিশ জানায়, জঙ্গি সংগঠন জইশ-উল-হিন্দ বিস্ফোরক রাখার দায়স্বীকার করে নেয়। হুমকি বার্তায় আরও বড় নাশকতার পরিকল্পনার বিষয়ে উল্লেখ করে তাঁরা ক্রিপ্টোকারেন্সি(cryptocurrency)-র মাধ্যমে মোটা অঙ্কের অর্থও দাবি করেন। একটি লিঙ্কও দেওয়া হয়। যদিও পরেরদিনই ফের একটি মেসেজ ভাইরাল হয় যেখানে বলা হয়, এই ঘটনার পিছনে জইশ-উল-হিন্দের কোনও ভূমিকা নেই। মেসেজের উৎস খুঁজতে গিয়েই জানা যায়, যে ফোনটি থেকে মেসেজটি পাঠানো হয়েছিল, তা সেই সময় তিহার জেলের আশেপাশেই ছিল।

আরও পড়ুন: মার্চে পরপর চার দিন বন্ধ থাকবে ব্যাঙ্ক, ব্যাহত হতে পারে এটিএম পরিষেবাও