নয়া দিল্লি: গতকালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩৭ হাজার ১৫৪ জন। যার মধ্যে সিংহভাগ করোনা আক্রান্তের ঠিকানা মহারাষ্ট্র ও কেরল। ওই দুই রাজ্যে বাড়তি করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সারা দেশে ভয় বাড়াচ্ছে। পাশাপাশি প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের ক্লাস্টার মহারাষ্ট্র তৃতীয় ঢেউয়ের সূত্রধর হতে পারে বলে মত বিজ্ঞানীদের। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩১ হাজার ৪৪৩ জন। যা ১১৮ দিনে সর্বনিম্ন। তবে একদিনে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ২০ জন। মধ্য প্রদেশ তথ্য আপডেট করায় হঠাৎ মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। দেশে এখন সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লক্ষ ৩১ হাজার ৩১৫।
ভারতে প্রথম করোনার ঢেউ শুরু হয়েছিল তিনি আক্রান্ত হওয়ার পরই। এ বার দ্বিতীয় তরঙ্গে ফের আক্রান্ত হলেন সেই ভারতীয়। কেরলের বাসিন্দা ওই তরুণী সম্প্রতি আবারও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁর আরটি পিসিআর টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। কিছুদিন আগেই দিল্লি ইউনিভার্সিটিতে একটি কাজে যাওয়ার জন্য আরটি পিসিআর টেস্ট করেন তিনি। আর তাতেই জানা যায় যে তিনি করোনা আক্রান্ত। চিনের উহান ইউনিভার্সিটিতে পড়তেন তিনি। সেখান থেকে ভারতে ফেরার পর তাঁর শরীরে ভাইরাসের হদিশ পাওয়া গিয়েছিল।
বিস্তারিত পড়ুন: ভারতে প্রথম করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি, দ্বিতীয় তরঙ্গে সেই ছাত্রী ফের ‘কোভিড পজিটিভ’
করোনা অতিমারিকে পরাস্ত করতে বাজারে এসেছে বিভিন্ন সংস্থার ভ্যাকসিন। কোন ভ্যাকসিনের কেমন প্রভাব, তা জানতে নিরন্তর চলছে গবেষণা। জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিন নিয়েও পর্যালোচনা করছেন গবেষকরা। ভারতের সঙ্গেও ওই সস্থার কথাবার্তা চলছে বলে সূত্রের খবর। তবে এরই মধ্যে উদ্বেগজনক রিপোর্ট প্রকাশ করল মার্কিন ড্রাগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (এফডিএ)। আমেরিকার দাবি, এই ভ্যাকসিন নিলে দেখা দিতে পারে শারীরিক সমস্যা। এমনকি ভয়াবহ স্নায়ুরোগে প্যারালিসিস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।
বিস্তারিত পড়ুন: জনসনের ভ্যাকসিন নেওয়া ১০০ জনের শরীরে বিরল রোগ, বাড়াচ্ছে আতঙ্ক
এ বার ভারতে তৈরি হবে স্পুটনিক ভি। রুশ টিকার উৎপাদনের সব প্রক্রিয়া সেরে ফেলছে সেরাম ইনস্টিটিউট। তৎপরতার সঙ্গে চলছে প্রযুক্তি আদান-প্রদানের কাজ। আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকেই ভারতের এই টিকা উৎপাদক সংস্থায় ‘স্পুটনিক ভি’ তৈরি করবে বলে জানা গিয়েছে। ভারতে প্রত্যেক বছর ৩০ কোটি ডোজ় ভ্যাকসিন উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে স্পুটনিক তৈরিতে যুক্ত ‘রাশিয়ান ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড।’
বিস্তারিত পড়ুন: সেপ্টেম্বর থেকে ভারতে তৈরি হবে রুশ টিকা, কাজ এগোচ্ছে সেরাম ইনস্টিটিউটে
দ্বিতীয় তরঙ্গের ক্ষত এখনও শুকোয়নি। এরই মধ্যে ভয় ধরাচ্ছে ‘তৃতীয় ঢেউ।’ অনেকেই প্রশ্ন করছেন ‘তৃতীয় ঢেউ কবে আসবে?’ কিন্তু করোনার আরও একটা তরঙ্গ আছড়ে পড়ার আগে কি সত্যিই সতর্ক হচ্ছে মানুষ? সেই প্রশ্ন তুলে আরও একবার সতর্ক করল স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কেন্দ্রের দাবি, থার্ড ওয়েভ নিয়ে যে আভাস দেওয়া হচ্ছে, তাতে গুরুত্ব দিচ্ছে না সাধারণ মানুষ। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক আধিকারিক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘আবহাওয়ার পূর্বাভাসের মতো তৃতীয় ঢেউয়ের ইঙ্গিতকে হালকাভাবে নিচ্ছেন অনেকেই।’ পাহাড়ি এলাকায় পর্যটনের কথা উল্লেখ করে আরও একবার সতর্ক করল কেন্দ্র।
বিস্তারিত পড়ুন: কবে আসবে থার্ড ওয়েভ? ‘যেন আবহাওয়ার পূর্বাভাস’, বলল স্বাস্থ্য মন্ত্রক
দ্বিতীয় তরঙ্গ প্রশমিত হতে শুরু করেছে বটে, তবে বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করছেন তৃতীয় তরঙ্গের বিষয়ে। আর এই আবহেই পর্যটনস্থলে বাড়ছে ভিড়। ভিডি্য়োতে দেখা যাচ্ছে, পর্যটকদের মুখে নেই মাস্ক, বালাই নেই সামাজিক দূরত্বের। এই বিষয়ে আগেই সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এ বার সেই উদাহরণ টেনে তৃতীয় ঢেউ নিয়ে সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায়, ‘করোনা এমন একটা ভাইরাস, যে নিজে থেকে আসে না, তাকে কেউ ডেকে নিয়ে এলে সে আসে।’ আজ, মঙ্গলবার উত্তর-পূর্বের মুখ্যমন্ত্রীদের মুখোমুখি হয়ে এমনটাই বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ দিন উত্তর-পূর্বের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী।
বিস্তারিত পড়ুন: ‘করোনা নিজে আসে না… তাকে ডেকে নিয়ে আসা হয়’
যদিও বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করে বলছেন যে আমরা এখনও দ্বিতীয় তরঙ্গের মধ্যেই আছি। তবে কোভিডের গ্রাফ প্রত্যেকদিন একটু একটু করে নীচের দিকে নামছে। করোনা আক্রান্ত বা মৃতের সংখ্যাও কমছে। গত কয়েকদিন ধরেই করোনায় মৃতের সংখ্যা হাজারের নীচে। এমনকি মঙ্গলবারের বুলেটিন অনুযায়ী, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১১৮ দিনে সর্বনিম্ন। অথচ গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা ২০২০। স্বাভাবিকভাবেই এই হিসেব নতুন উদ্বেগ তৈরি করতে পারে। তুলনামূলক কম আক্রান্তের মধ্যে বেশি সংখ্যক মৃত্যু কেন? এই প্রশ্নও উঠছে। তবে আদতে এই সংখ্যাটা গত ২৪ ঘণ্টার নয়। এর সঙ্গে রয়েছে মধ্যপ্রদেশের বাকি থেকে যাওয়া কিছু মৃত্যুর হিসেব।
বিস্তারিত পড়ুন: কোন অঙ্কে একধাক্কায় একদিনে করোনায় মৃতের সংখ্যা এত বাড়ল ভারতে?
করোনা রোখার ব্রহ্মাস্ত্র আছে, কিন্তু তার পর্যাপ্ত জোগান নেই। টিকা সঙ্কটে ভুগছে দিল্লি। সোমবার দিল্লির উপ মুখ্যমন্ত্রী মনীষ সিসোদিয়া (Manish Sisodia) দাবি করেছেন, সেখানে কোভিশিল্ড আর পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত নেই। যার জেরে মঙ্গলবার থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একাধিক টিকাকরণ কেন্দ্র। পাশাপাশি সোমবারও গড়ের স্রেফ এক তৃতীয়াংশ টিকা দিতে পেরেছে দিল্লি।বিস্তারিত পড়ুন: রাজধানীতে টিকা সঙ্কট, বন্ধ হচ্ছে একের পর এক ভ্যাকসিনেশন সেন্টার
এখনও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পায়নি ভারতের দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি কোভ্যাক্সিন (Covaxin)। ফলে একাধিক ক্ষেত্রে কোভ্যাক্সিন প্রাপকদের বিদেশ ভ্রমণে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কেন্দ্র আগে জানিয়েছিল, দ্রুত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন দেবে ভারত বায়োটেকের এই ভ্যাকসিনকে। এ বার সংস্থার মুখেও একই কথা। টুইট করে চেয়ারম্যান কৃষ্ণ এল্লার পক্ষ থেকে সংস্থা জানিয়েছে, দ্রুত অনুমোদন পাবে কোভ্যাক্সিন। বিস্তারিত পড়ুন: দ্রুত হু-র অনুমোদন পাবে কোভ্যাক্সিন, আশাবাদী ভারত বায়োটেক
দেশে সবে দ্বিতীয় ঢেউর বাড়বাড়ন্ত শেষ হয়েছে। এখন তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার সময় এগিয়ে আসছে। চিকিৎসকরা বারবার বলছেন, তৃতীয় ঢেউ অনিবার্য, এড়ানোর কোনও পথ নেই। স্রেফ এই ঢেউর প্রভাব কমানো যেতে পারে টিকাকরণ ও করোনাবিধির মাধ্যমে। কিন্তু দেশে টিকাকরণের (COVID Vaccination) গতি লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছে নেই। তাই চিকিৎসকদের একাংশ মনে করছেন, তৃতীয় ঢেউ আসার অনুকূল পরিবেশ ইতিমধ্যেই তৈরি।
বিস্তারিত পড়ুন: দেশে তৃতীয় ঢেউয়ের রাস্তা প্রশস্ত হচ্ছে, চরম উদ্বেগে চিকিৎসকরা