Delhi Liquor Policy Case: ‘যাকে ইচ্ছা তুলে আনবেন?’, সুপ্রিম রোষে ED-CBI, প্রশ্নের মুখে সততা!
Delhi Liquor Policy Case: দিল্লির আবগারি নীতি কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত তহবিল তছরুপ ও দুর্নীতির মামলায় জামিন পেলেন ভারত রাষ্ট্র সমিতির নেত্রী কে কবিতা। মঙ্গলবার (২৭ অগস্ট) শুনানির সময় সিবিআই ও ইডি-র ন্যায়পরায়ণতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ। কী বললেন তাঁরা?
নয়া দিল্লি: সঞ্জয় সিং ও মণীশ সিসোদিয়ার পর, দিল্লির আবগারি নীতি কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত তহবিল তছরুপ ও দুর্নীতির মামলায় জামিন পেলেন ভারত রাষ্ট্র সমিতির নেত্রী কে কবিতাও। মঙ্গলবার (২৭ অগস্ট) শুনানির সময় সিবিআই ও ইডি-র ন্যায়পরায়ণতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ। বেছে বেছে কিছু অভিযুক্তর প্রতি তাদের আচরণেরও সমালোচনা করে বেঞ্চ। কার্যত, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির সততা নিয়েই প্রশ্ন তোলে আদালত। বিচারপতি গাভাই বলেন, “তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ন্যায়পরায়ণ হতে হবে। দোষী হিসেবে সাব্যস্ত এক ব্যক্তিকে সাক্ষী করা হয়েছে! আগামীকাল আপনারা আপনাদের পছন্দ মতো যে কাউকে তুলে আনবেন? আপনারা যাকে তাকে বেছে নিয়ে আসামি বলে দিতে পারেন না। ন্যায়পরায়ণতা কাকে বলে? অত্যন্ত ন্যায্য এবং যুক্তিসঙ্গত বিচক্ষণতা হল ন্যায়পরায়ণতা!”
দুটি মামলার ক্ষেত্রেই কবিতাকে ১০ লাখ টাকা করে বন্ড দিতে হবে। তাকে পাসপোর্টও জমা রাখতে হবে। সাক্ষীদের প্রভাবিত করা বা ভয় দেখানো চলবে না। চলতি বছরের ১৫ মার্চ সন্ধ্যায় বিআরএস প্রধান কে চন্দ্রশেখর রেড্ডির মেয়ে, কে কবিতাকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তখন থেকে তিনি বন্দি ছিলেন। ইডি মামলায় বিচার বিভাগীয় হেফাজতে থাকাকালীন কবিতাকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই।
এদিন, ইডি-সিবিআই-এর পক্ষে আদালতে হাজির ছিলেন, অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল, এসভি রাজু। তিনি কবিতাকে জামিন দেওয়ার বিরোধিতা করেন। জামিনের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তিনিবিভিন্ন যুক্তি দিলেও, এক পর্যায়ে তাঁকে থামিয়ে দেন বিচারপতি গাভাই। সতর্ক করে বলেন, তিনি যদি এই ভাবে জামিনের বিরোধিতা করতে থাকেন, তাহলে আদালত তার রায়ে এমন কিছু পর্যবেক্ষণ করবে, যা কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির পক্ষে অস্বস্তিকর হতে পারে। এরপর আর কিছু বলতে পারেননি এএসজি। জামিনে রাজি হয়ে যান। তিনি সেখানেই শুনানি স্থগিত করার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু, আদালত শুনানি স্থগিত করতে অস্বীকার করে।
রায়ে বিচারপতি গাভাই এবং বিচারপতি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ জানিয়েছে, কে কবিতা পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে কারাগারে বন্দি আছেন। তদন্ত শেষ হয়েছে। সিবিআই এবং ইডি – দুই সংস্থাই চার্জশিট দায়ের করেছে। এই অবস্থায় তাঁকে আর হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন নেই। তাছাড়া, ইডি এবং সিবিআই – দুটি মামলার ক্ষেত্রেই খুব শিগগিরই বিচার শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। প্রায় ৪৯৩ জন সাক্ষীকে পরীক্ষা করা হবে। যে সকল প্রামাণ্য যাচাই করতে হবে, তাও প্রায় ৫০,০০০ পৃষ্ঠার। মনীশ সিসোদিয়াকে জামিন দেওয়ার সময়ও সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, বিচারাধীন হেফাজতকে শাস্তিতে পরিণত করা উচিত নয়। এদিন আবারও সেই কথা পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
বেঞ্চ আরও বলেছে, তহবিল তছরুপ প্রতিরোধ আইনের ৪৫ (১) ধারা অনুযায়ী জামিনের ক্ষেত্রে মহিলারা বিশেষ বিবেচনার অধিকার পান। এর আগে, দিল্লি হাইকোর্ট বলেছিল, এই ধারা ‘উচ্চ মর্যাদা’র মহিলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এই প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের সমালোচনা করেছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি গাভাই বলেছেন, “তহবিল তছরুপ প্রতিরোধ আইনের ৪৫ নম্বর ধারা নিয়ে বেঞ্চ (হাইকোর্টের এক বিচারপতির একক বেঞ্চ) সম্পূর্ণ ভুল নির্দেশ দিয়েছে। কোনও মহিলা শুধুমাত্র সুশিক্ষিত বা পরিশীলিত বা সাংসদ বা বিধায়ক হলেই তিনি এই সুবিধা পাবেন না, এই কথা আদালত বলতে পারে না। এই ধরনের বিষয়গুলির সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আদালতগুলিকে বিচার বিভাগের চোখ দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। এই আদালত থেকে আমরা এই বিষয়ে সতর্ক করছি।”
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)