CJI N V Ramana: একটা অন্যায্য রায়ে বিচারব্যবস্থার উপর আশা হারাবেন না, বিদায়ী ভাষণে বললেন প্রধান বিচারপতি রমণ

CJI N V Ramana: জীবনে সংগ্রাম এবং প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে আসার কাহিনি আজ শোনান বিদায়ী প্রধান বিচারপতি।

CJI N V Ramana: একটা অন্যায্য রায়ে বিচারব্যবস্থার উপর আশা হারাবেন না, বিদায়ী ভাষণে বললেন প্রধান বিচারপতি রমণ
প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 26, 2022 | 11:54 PM

নয়া দিল্লি: সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি (Chief Justice of India) হিসেবে আজ তাঁর শেষ দিন। সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। ওই সংবর্ধনা সভায় প্রধান বিচারপতি বললেন, বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আশা এতটা দুর্বল হতে পারে না যে একটা অন্যায্য রায়ে তা চুরমার হয়ে যেতে পারে। বিচারব্যবস্থা একটা নির্দেশ বা রায় দিয়ে বিবেচনা করা যায় না। বিদায়ী প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, আদালত সর্বদা নিজেকে সংশোধন করেছে। আজ এই বিদায় সংবর্ধনায় নিজের গ্রামের কথা, বেড়ে ওঠার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

জীবনে তাঁর সংগ্রাম এবং প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে আসার কাহিনি আজ শোনান বিদায়ী প্রধান বিচারপতি। ১৯৫৭ সালের ২৭ অগস্ট জন্ম এন ভি রমণার। স্মৃতির সরণি বেয়ে নিজের ছোটবেলার কথা বলতে গিয়ে রমণ বলেন, “অন্ধ্র প্রদেশের কৃষ্ণ জেলার পুন্নাবরম নামে এক প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আমার পথ চলা শুরু। ওই গ্রামে না ছিল বিদ্যুৎ, না ছিল ভাল রাস্তা। আমার যখন ১২ বছর বয়স, তখন প্রথম বিদ্যুৎ দেখি। ওই বয়সেই ইংরেজি বর্ণমালা শিখি। মাঠের মধ্য দিয়ে কাদা রাস্তা পেরিয়ে স্কুল যেতাম। অনেক লড়াই, সংগ্রাম করে বড় হয়েছি। এর জন্য আমার গুরু অর্থাৎ বাবা-মা, বিভিন্ন সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানাই।”

এন ভি রমণের যখন ১৮ বছর বয়স, তখন দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়। জরুরি অবস্থার সময়কার কথা স্মরণ করে রমণ বলেন, “জরুরি অবস্থার ভুক্তভোগী আমিও। পড়াশোনায় এক বছর ক্ষতি হয়েছে। সমস্যার সম্মুখীন হওয়া এবং তার প্রতিকার করা আমার কাছে নতুন নয়। এই সময়ে নানা মতাদর্শে বিশ্বাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। আমার জ্ঞানের পরিধি বাড়ে। একা কীভাবে কাটাতে হয়, তা তাঁদের কাছ থেকে শিখি। এমন একটা পরিবেশ, যেখানে কোনও বিষয়ে আপনি আপনার চিন্তাভাবনা কারও সঙ্গে শেয়ার করতে পারবেন না। প্রতিদিনের এই অভিজ্ঞতার জেরে মানুষের সেবা করার আগ্রহ আমার মধ্যে বেড়ে ওঠে।”

বিচারক হওয়া থেকে দেশের প্রধান বিচারপতি হওয়া, দীর্ঘ এই যাত্রায় তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে নানা ষড়যন্ত্রমূলক স্ক্রটিনির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। সেই দিনগুলির কথা স্মরণ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমি ও আমার পরিবার নীরবে সব সহ্য করেছি। শেষপর্যন্ত সত্য সবসময় জয়ী হয়। আমি কখনই দাবি করিনি যে আমি মহান বিচারক। কিন্তু, আমি সবসময় বিশ্বাস করে এসেছি যে বিচারব্যবস্থার চূড়ান্ত লক্ষ্য হল সাধারণ মানুষকে ন্যায় দেওয়া। এর আগে আমি বলেছি, একজন বিচারকের জীবন কতটা কষ্টকর। আপনার স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে। শুধুমাত্র বিচারক এবং আইনজীবীরা একজন বিচারকের জীবন অনুধাবন করতে পারেন। একজন বিচারকের জীবনে যে কত কঠিন পরিশ্রম থাকে, তা আইনজীবীরা ব্যাখ্যা করতে পারবেন।”

২০২১ সালের ২৪ এপ্রিল শীর্ষ আদালতের ৪৮ তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। ১৬ মাসের মেয়াদ শেষে আজ বিদায় নেওয়ার পালা। বিদায়বেলায় বিচারব্যবস্থার উপর মানুষের আশার কথা শোনালেন প্রধান বিচারপতি। বিচারব্যবস্থা নিজেকে কীভাবে বিবর্তিত করেছে, সেকথা বললেন। বিদায়ী প্রধান বিচারপতি বলেন, “বিগত ৭৫ বছর ধরে বিচারব্যবস্থা নিজেকে বিবর্তিত করেছে। বিচারব্যবস্থাকে একটা নির্দেশ কিংবা রায় দিয়ে বিবেচনা করা যায় না। হ্যাঁ, কখনও হয়তো মানুষের আশানুরূপ হয়নি। তবে বেশিরভাগ সময় রায় মানুষের স্বার্থে গিয়েছে। ভুল সংশোধনও হয়েছে। বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আশা এতটা দুর্বল হতে পারে না যে একটা অন্যায্য রায়ে তা চুরমার হয়ে যেতে পারে।”