Kerala: আতঙ্কে কথা বন্ধ, দু’দিন পর বউয়ের কর্মস্থল থেকে উদ্ধার নিখোঁজ ব্যক্তি
Kerala: তিনি কাজ করেন কেরল বিধানসভায়। তাঁর স্ত্রী কাজ করেন তিরুবনন্তপুরম মেডিকেল কলেজে। গত শনিবার স্ত্রীয়ের সঙ্গে মেডিক্যাল চেকআপের জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। বাড়ি ফিরে আসার কথা থাকলেও, ফেরেননি রবীন্দ্রন। থানায় নিখোঁজের অভিযোগ জানিয়েছিলেন তাঁরা।
তিরুবনন্তপুরম: আতঙ্কে ভাল করে কথা বলতে পারছেন না রবীন্দ্রন নায়ার। ৫৯ বছর বয়সী এই ব্যক্তি কেরলের উলুরের বাসিন্দা। কাজ করেন কেরল বিধানসভায়। তাঁর স্ত্রী কাজ করেন তিরুবনন্তপুরম মেডিকেল কলেজে। গত শনিবার স্ত্রীয়ের সঙ্গে মেডিক্যাল চেকআপের জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। ডাক্তার দেখানোর পর, তাঁর স্ত্রী ফের হাসপাতালের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। বাড়ি ফিরে আসার কথা থাকলেও, ফেরেননি রবীন্দ্রন। পরিবারের লোকজন ভেবেছিল, তিনি বোধহয় বাড়ি না ফিরে সরাসরি বিধানসভায় চলে গিয়েছেন। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও তিনি বাড়ি না ফেরায়, তাঁরা ভেবেছিলেন, রবীন্দ্রন বোধহয় অতিরিক্ত সময় কাজ করছেন। কিন্তু, অনেক রাত হয়ে যাওয়ার পর তাঁরা মেডিকেল কলেজ থানায় একটি নিখোঁজ ব্যক্তির অভিযোগ দায়ের করেছিল। দুদিন ধরে অনেক খুঁজেও তাঁর হদিশ পায়নি পুলিশ। তবে, সোমবার (১৫ জুলাই), তিরুবনন্তপুরম মেডিকেল কলেজে থেকেই বিধ্বস্ত অবস্থায় পাওয়া গেল তাঁকে। রীতিমতো আতঙ্কগ্রস্ত। মাঝের দু’দিন কোথায় ছিলেন তিনি?
পুলিশ জানিয়েছে, মেডিকেল কলেজের ওপি ব্লকের লিফটের ভিতর আটকে পড়েছিলেন তিনি। গত দু’দিন ধরে ছোট্ট লিফটের মধ্যেই আটকে ছিলেন তিনি। খাবার, জল কিচ্ছু পাননি। বারবার করে ডেকেও কারও সাড়া পাননি। এক সময়, সময়ের হিসেবও হারিয়ে ফেলেছিলেন। এদিন সকালে এক লিফট অপারেটর এসে রবীন্দ্রনকে উদ্ধার করে। এক পুলিশ কর্তা বলেছেন, “তিনি দোতলায় যাওয়ার জন্য লিফটে উঠেছিলেন। কিন্তু তিনি দাবি করেছেন, লিফটটি উপরে ওঠার বদলে নীচে নেমে যায় এবং তার দরজা খোলেনি। তিনি সাহায্যের জন্য চিৎকার করেছিলেন, কিন্তু কেউ আসেনি। তাঁর ফোনটিও বন্ধ ছিল।” লিফটটি এক তলা ও দোতলার মাঝে এক জায়গায় আটকে গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। এই সময় তাঁর হাত থেকে মোবাইল ফোনটি পড়ে গিয়ে ভেঙে যায়।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, এরপর, লিফটের ভিতরে থাকা ফোন ব্যবহার করে সাহায্য চাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন রবীন্দ্রন। ফোন বাজেনি। অ্যালার্মের বোতাম টিপে লোক ডাকার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কেউ সাড়া দেয়নি। উদ্ধারের পর কিছুটা ধাতস্থ হয়ে রবীন্দ্রন বলেছেন, “আমি লিফটের ভিতরে তালিকায় থাকা সমস্ত জরুরি নম্বরে কল করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কেউ উত্তর দেয়নি। অ্যালার্মও বাজিয়েছিলান। কিন্তু কেউ আসেনি। কিছুক্ষণ পর, আমি বুঝেছিলাম, এটা মাসের দ্বিতীয় শনিবার এবং পরের দিন রবিবার। হাসপাতালের অনেক ব্লকই বন্ধ থাকে। এরপর আমি সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করা শুরু করি। কিছুক্ষণ পর, লিফটের ভিতরে আমি সময়ের জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম। এদিন সকালে, একজন অপারেটর আসে। আমি আবার অ্যালার্ম টিপি। তারপর আমরা দুজনে গায়ের জোরে দুপাশ থেকে দরজা খুলেছিলাম। আমি লাফ দিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসি।”
লিফটে থেকে উদ্ধারের পরও আতঙ্ক যাচ্ছে বা রবীন্দ্রন নায়ারের। তাঁর ছেলে হরি শঙ্কর জানিয়েছেন, মাঝে মাঝেই কেঁপে কেঁপে উঠছেন তাঁর বাবা। এদিকে, ওই লিফটটি যে কাজ করছে না, সেই বিষয়ে কোথাও কোনও সতর্কতা ছিল না কেন, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মেডিক্যাল এডুকেশন ডিপার্টমেন্টের ডিরেক্টরকে এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী, বীণা জর্জ।