Manipur Violence: অগ্নিগর্ভ মণিপুর, দেখামাত্রই গুলি করার নির্দেশ সরকারের
Shoot at Sight Orders in Extreme Cases: অগ্নিগর্ভ চেহারা নিয়েছে উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুর। ১৪ ঘণ্টা পরও বিক্ষিপ্ত অশান্তি জারি রয়েছে। এর মধ্য়েই চরম পর্যায়ে দেখামাত্রই গুলি করার নির্দেশ জারি এন বীরেন সিং প্রশাসনের।
ইম্ফল: অগ্নিগর্ভ উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুর। বুধবার রাত থেকেই মণিপুরের বিভিন্ন এলাকায় দফায় দফায় উত্তেজনা দেখা দেয়। মণিপুরের সংখ্যাগুরু মেইতি সম্প্রদায়ের তফসিলি জাতিভুক্ত হওয়ার দাবি থেকেই এই উত্তেজনার সূত্রপাত। গতকাল মেইতি সম্প্রদায়ের এই দাবির বিরোধিতায় মণিপুরের উপজাতি ছাত্র সংগঠন মিছিল করে। আর এই মিছিল ঘিরেই শুরু হয় বিক্ষোভ-অশান্তি। চুরাচাঁদপুর জেলার টুরবং অঞ্চলে এই মিছিল পৌঁছতেই দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায়, কাঁদানে গ্য়াস ছোড়ে পুলিশ। তারপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আগেই ৮ টি জেলায় ১৪৪ ধারা এবং আগামী পাঁচদিনের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে মণিপুর প্রশাসন। এবার দেখলেই গুলি (Shoot at Sight) করার নির্দেশ জারি করল মণিপুরের বিজেপি সরকার।
মণিপুরের স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে জেল প্রশাসনকে বলা হয়েছে, যখন কোনও সতর্কতা এবং যুক্তি সঙ্গত বলপ্রয়োগ করেও অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না সেই পরিস্থিতিতে দেখলেই গুলি করা হবে। বুধবার রাতেই আদিবাসীদের মিছিল ঘিরে শুরু হয় অশান্তি, বিক্ষোভ। বিক্ষোভের আগুন নেভাতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে ব়্যাফ, সেনা, আধা সেনা ও অসম রাইফেলসের বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে মণিপুরের বিভিন্ন এলাকায়। তারপরও ১৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অশান্তি বজায় রয়েছে মণিপুরের একাধিক এলাকায়। এবার কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি দেখলেই গুলি করার নির্দেশ জারি করল মণিপুর প্রশাসন।
এদিকে উত্তর-পূর্বের রাজ্যের এই পরিস্থিতির বিষয়ে নজর রাখতে বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে মণিপুরে শান্তি স্থাপনের জন্য অনুরোধ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও। রাজ্য জুড়ে শান্তি বজায় রাখার জন্য মোতায়েন রয়েছে সেনা-আধা সেনার বাহিনীও। বিভিন্ন সময়ে তারা ফ্ল্যাগ মার্চও করছেন। এই বিক্ষোভের জেরে একাধিক বাড়িতে আগুনও ধরে যায়। বিষ্ণুপুর ও চুরাচাঁদপুর জেলায় মোতায়েন থাকা ভারতীয় সেনা, আধা সেনার তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, হিংসা কবলিত এলাকা থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের সরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এদিকে ইতিমধ্যেই প্রায় ৪ হাজার গ্রামবাসীকে সেনার অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে জায়গা দেওয়া হয়েছে। এদিকে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এই হিংসা-অশান্তি দেখা দিয়েছে। তিনি এক ভিডিয়ো বিবৃতিতে মণিপুরের বাসিন্দাদের শান্তি বজায় রাখার জন্য অনুরোধও জানান।
মণিপুরের সাম্প্রতিক অশান্তির কারণ:
মণিপুরের ইম্ফাল উপত্যকার সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী হল মেইতেই। তাঁদের দাবি, তফসিলি উপজাতির তকমা দিতে হবে। তবে তাঁদের এই দাবির বিরোধিতা করেছেন স্থানীয় আদিবাসীরা। এই আবহেই গতকাল চুরাচাঁদপুরে একটি প্রতিবাদী মিছিলের আয়োজন করেছিল মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন। সেই মিছিল ঘিরেই মেইতেই জনগোষ্ঠীদের সঙ্গে আদিবাসীদের অশান্তি বাধে। আদিবাসীদের মিছিল থামাতে তাঁদের উপর হামলা করে মেইতেই জনগোষ্ঠী। এই বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায় এবং কাঁদানে গ্য়াসের শেল ফাটায় পুলিশ। বর্তমানে দক্ষিণ ইম্ফল, কাকচিন, থৌবল, জিরিবাম, চুরাচাঁদপুর এবং বিষ্ণুপুর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারির করার পাশাপাশি আগামী পাঁচদিনের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করেছে মণিপুর প্রশাসন।