PM Modi: তীক্ষ্ণ শ্লেষ আর কটাক্ষ, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে হাসি চাপতে পারলেন না বিরোধীরাও
PM Modi Lok Sabha No Trust Motion: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জবাবি ভাষণ জুড়ে ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে বারবার উঠল হাসির রোল। এমনকি, বিরোধী সাংসদদেরও কেউ কেউ নরেন্দ্র মোদীর রসবোধের সামনে আত্মসমর্পণ করলেন। হাসতে না চেয়েও, হালকা হাসি হাসি মুখ হয়ে গেল তাঁদের। বিজেপি সাংসদরা তাঁদের বললেন, 'খুল কর হাসিয়ে'।
নয়া দিল্লি: তীব্র শ্লেষ আর কটাক্ষ। বৃহস্পতিবার (১০ অগস্ট), প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জবাবি ভাষণ জুড়ে ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে বারবার উঠল হাসির রোল। এমনকি, বিরোধী সাংসদদেরও কেউ কেউ নরেন্দ্র মোদীর রসবোধের সামনে আত্মসমর্পণ করলেন। হাসতে না চেয়েও, হালকা হাসি হাসি মুখ হয়ে গেল তাঁদের। বিজেপি সাংসদরা তাঁদের বললেন, ‘খুল কর হাসিয়ে’। প্রধানমন্ত্রী এদিন ভাষণ শুরুই করেন, ‘বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব আমাদের জন্য শুভ’ বলে। তিনি বলেন, “কারও না কারও মাধ্যমে ভগবান তাঁর ইচ্ছা পূরণ করেন। বিপক্ষ যে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে, তাকে আমি ভগবানের আশীর্বাদ বলে মনে করি।” এরপর, তাঁর বক্তব্যের বাকি অংশে বারবারই বিরোধীদের প্রতি ধেয়ে এসেছে তীক্ষ্ণ শ্লেষ।
অনাস্থা প্রস্তাব নিয় গত তিনদিনের আলোচনা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিপক্ষ ফিল্ডিং সেট করেছে, কিন্তু চার-ছয় মারছে ট্রেজারি বেঞ্চ। ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে সেঞ্চুরি হচ্ছে, আর বিপক্ষ শুধু নো বল করে যাচ্ছে। আমি আপনাদের ৫ বছর সময় দিয়েছিলাম প্রস্তুতির। তাও তৈরি হতে পারলেন না?” অনাস্থা প্রস্তাবে কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীকে বক্তাদের তালিকায় ন রাখা নিয়েও তীব্র কটাক্ষ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কলকাতা থেকে কোনও ফোন এসেছিল নাকি? আমি অধীরবাবুর প্রতি পূর্ণ সমবেদনা জানাচ্ছি।” এরপর তিনি বলেন, বিরোধীরা অভিধান খুলে খুলে তাঁর সরকারকে গালি দেয়, অপশব্দ প্রয়োগ করে। কিন্তু, সেগুলিরও তিনি টনিক বানিয়ে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “আসলে বিপক্ষ একটা গোপন বরদান পেয়েছে। সেই বরদান হল, এরা যাদের খারাপ চাইবে, তার শুধুই ভাল হবে।” তারপর নিজের দিকে ইঙ্গিত করেন বলেন, “একটা উদাহরণ তো আপনাদের সামনেই আছে।”
এমনকি, বিরোধীদের দায়িত্ববান বিরোধীর ভূমিকা কীভাবে পালন করতে হয়, তাও তাঁকেই শেখাতে হচ্ছে বলে ব্যঙ্গ করেন প্রধানমন্তরী মোদী। তিনি বলেন, “আমরা দেশকে অর্থনৈতিক দিক থেকে বিশ্বের তৃতীয় স্থানে তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলছি। দায়িত্ববান বিরোধী হলে প্রশ্ন করতেন, কীভাবে তা হবে বলুন মোদীজি? বলুন নির্মলাজি? বিরোধীরা বলতে পারত, ওরা তিন নম্বরের কথা বলছে, আমরা এক নম্বরে নিয়ে যাব। কিন্তু, তারা তা করেনি। দায়িত্ববান বিরোধিতাও আমাকেই শেখাতে হচ্ছে।”
ইন্ডিয়া জোটের নাম নিয়ে ব্যাঙ্গ করতেও ছাড়েননি প্রধানমন্ত্রী। বেঙ্গালুরু বৈঠকে বিরোধী জোটের নামকরণ করা হয়েছে ইন্ডিয়া। এদিন মোদী বলেন, “বেঙ্গালুরুতে আপনারা ইউপিএ-র অন্তিম সংস্কার করেছেন। আমি তার জন্য আপনাদের সমবেদনা জানাই। সেই সময়ই আমার সমবেদনা জানানো উচিত ছিল। কিন্তু, এই দেরির জন্য আমার দোষ নেই। সেই সময় ইউপিএ-র শেষকৃত্য করার সঙ্গে সঙ্গে, আপনারা উৎসব করছিলেন। কিসের উৎসব? পোড়ো বাড়ির উপর নতুন প্লস্টার লগানোর উৎসব। ব্যর্থ যন্ত্রে নতুন রঙ করার, উৎসব করছিলেন। পুরোনো গাড়িকে বৈদ্যুতিক গাড়ি হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছেন। আপনারা যার পিছনে চলেছেন, তিনি দেশের সংস্কারই বোঝেন না। কাঁচা লঙ্কা-শুকনো লঙ্কার পার্থক্য জানেন না।”
বক্তব্যের শেষ অংশে বিরোধীদের কটাক্ষ করেই ২০২৪ সালে ফের একবার ক্ষমতায় ফেরার আত্মবিশ্বাস ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। রাহুল গান্ধীর নাম না করে তিনি জানান, সংসদের নেতা হিসেবে ২০১৮ সালে তিনি কংগ্রেস সাংসদকে একটি কাজ দিয়েছিলেন। তিনি তা করেছেন। তার জন্য রাহুল গান্ধীর তিনি প্রশংসা করতে চান। কিন্তু, একইসঙ্গে তিনি হতাশও। তিনি বলেন, “২০১৮-র পর, ২০২৩-এ আরেকটু ভালভাবে করতেন। কিন্তু, প্রস্তুতি একেবারেই ছিল না। কোনও সৃষ্টিশীলতা ছিল ন। বিষয় খুঁজে পাচ্ছিলেন না। দেশকে তিনি নিরাশ করেছেন। ঠিক আছে, অসুবিধা নেই। ২০২৮-এ আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে যখন তিনি অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসবেন, আশা করি তিনি হোমওয়ার্ক করে আসবেন। দেশের মানুষ মনে করুক আপনি অন্তত বিরোধী হওয়ার যোগ্য।”