‘অযৌক্তিক ও স্বেচ্ছাচারী’, মহিলা নিয়োগ নিয়ে ‘সুপ্রিম’ তিরস্কারের মুখে সেনাবাহিনী

সেনাবাহিনী(Indian Army)-তে মহিলাকর্মীদের নিয়োগের নিয়ম নিয়ে শীর্ষ আদালতের (Supreme Court) তরফে বলা হয়, "আমাদের বুঝতে হবে যে সমাজের কাঠামো পুরুষদের জন্যই তৈরি করা হয়েছিল, এবং তা পুরুষরাই তৈরি করেছিলেন।"

'অযৌক্তিক ও স্বেচ্ছাচারী', মহিলা নিয়োগ নিয়ে 'সুপ্রিম' তিরস্কারের মুখে সেনাবাহিনী
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Mar 25, 2021 | 12:46 PM

নয়া দিল্লি: সেনাবাহিনীর স্থায়ী কমিশনে (Permanent Commission) নিজেদের স্থান করে নিতে মহিলাদের যে মেডিক্যাল ফিটনেস পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, তা “অযৌক্তিক” ও “স্বেচ্ছাচারী”, এমনটাই ব্যাখ্যা দিল সুপ্রিম কোর্ট। সেনাবাহিনীর ৮০ জন মহিলা অফিসার স্থায়ী কমিশনে স্থান পাওয়ার আবেদন জানিয়ে আর্জি জানিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়, ফিটনেসের কারণে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর যে সকল মহিলাকর্মীকে স্থায়ী কমিশন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের অবিলম্বে স্থায়ী কমিশনে স্থান দিতে হবে।

সেনাবাহিনীতে নিয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়, “আমাদের বুঝতে হবে যে সমাজের কাঠামো পুরুষদের জন্যই তৈরি করা হয়েছিল, এবং তা পুরুষরাই তৈরি করেছিলেন। সেনাবাহিনীর কাজ এমনিতেই কঠিন। তার উপর যদি সমাজও চাপ সৃষ্টি করে, তবে কাজ করা আরও কঠিন হয়ে ওঠে।”

সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) জানায়, সেনাবাহিনীতে অ্যানুয়াল কনফিডেনশিয়াল রিপোর্ট ও মেডিক্যাল ফিটনেসের মানদণ্ড মহিলা অফিসারদের প্রতি বৈষম্যমূলক। বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও এমআর শাহের বেঞ্চের তরফে বলা হয়, এই ধরনের মানদণ্ড শর্ট সার্ভিস কমিশনের অফিসারদের জন্য ক্ষতিকারক।

বিচারপতি চন্দ্রচূড় স্থায়ী কমিশনে মহিলা অফিসারদের স্থান দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, “বহু মহিলা অফিসাররাই কর্মক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন। বিভিন্ন খেলাধুলোর অনুষ্ঠানে তাঁদের সাফল্যকেও এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে,স্থায়ী কমিশনের বোর্ডে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা নির্বাচনের বদলে আবেদন বাতিল করার জন্যই ছিলেন।”

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ফেব্রুয়ারি মাসেই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, সেনাবাহিনীতে মহিলা অফিসারদেরও পুরুষদের মতোই কম্যান্ডিং পদে নিয়োগ করা যেতে পারে। স্থায়ী কমিশনেও তাঁদের স্থান দিতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে মহিলাদের কমান্ডিং পদে নিয়োগ না করা ও স্থায়ী কমিশনে স্থান না দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সমালোচনা করে কোর্টের তরফে বলা হয় যে এই ধরনের সিদ্ধান্ত বৈষম্যমূলক ও অত্যন্ত বিরক্তিকর।

কেন্দ্রের তরফে এই সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে বলা হয়েছিল যে, বহু পুরুষ কর্মীরাই মহিলা কম্যান্ডিং অফিসারের নির্দেশ নাও মানতে পারেন। এছাড়াও মহিলাদের উপর সন্তানধারণ ও পরিবার সামলানোর দায়িত্ব থাকে। মাতৃত্বকালীন ছুটিও দিতে হয় তাঁদের, যা সেনাবাহিনীতে দেওয়া সম্ভব নয়। সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রের এই দাবিগুলিকে উড়িয়ে দিয়ে নির্দেশ দেওয়া হয় যে যাঁরা শর্ট সার্ভিস কমিশনে কাজ করছেন বা ১সেনাবাহিনীতে ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে রয়েছেন, তাদের স্থায়ী কমিশনে জায়গা দিতে হবে।

আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় ৩১ হাজার আক্রান্তে সর্বকালীন রেকর্ড মহারাষ্ট্রে, হোলিতে নিষেধাজ্ঞা জারিতে চিঠি কেন্দ্রের