‘খাদ্যের অধিকারের কথা বলা আছে সংবিধানে’, অবিলম্বে এক দেশ, এক রেশন কার্ড চালুর নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
Supreme Court: পরিযায়ী শ্রমিকেরা যাতে তাঁদের মৌলিক অধিকার পেতে পারেন, তার ব্যবস্থা করতে একগুচ্ছ নির্দেশিকা দিল শীর্ষ আদালত।
নয়া দিল্লি: অতিমারির শুরুতে দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণা করার পর পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরার হৃদয়-বিদারক ছবি নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশকে। দনের পর দিন পায়ে হেঁটে, কখনও রেল স্টেশনে রাতটুকু কাটিয়ে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন তাঁরা। সরকারের দিকে আঙুল তুলেছিলেন বিরোধীরা। কার দায়? তা নিয়ে চলেছিল চাপান-উতর। সেই ইস্যুতে গত বছর একটি মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। আর আজ সেই মামলায় পরিযায়ী শ্রমিকদের দায় যে সরকারকেই নিতে হবে, সেই বার্তা দিলেন বিচারপতিরা। অবিলম্বে ‘এক দেশ, এক রেশন কার্ড’ চালু করার কথা বলল শীর্ষ আদালত। মঙ্গলবার স্বতঃপ্রণোদিত সেই মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি এমআর শাহ ও বিচারপতি অশোক ভূষণের বেঞ্চে।
বেঁচে থাকার অধিকারের কথা বলে সংবিধানের ‘আর্টিকল ২১’
প্রত্যেক মানুষেরই সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। ভারতীয় সংবিধানের আর্টিকল ২১-এ সেই বেঁচে থাকার অধিকারের কথাই বলা আছে। আর তার মধ্যেই রয়েছে খাদ্য ও অন্যান্য মৌলিক প্রয়োজনের অধিকারের কথা। শুনানিতে এমনটাই বললেন বিচারপতিরা। এ দিন আদালত মনে করিয়ে দিয়েছে দেশের প্রত্যেক মানুষের অন্ন সংস্থানের ব্যবস্থা করতে বাধ্য রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার।
‘ক্ষুধায় যেন কারও মৃত্যু না হয়’
বিচারপতিরা এ দিন বলেন, গোটা বিশ্বের সব দেশই খাদ্যের অধিকারের কথা বলে। আমাদের দেশও তার ব্যতিক্রম নয়। সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে, খাদ্যাভাব যেন কাউকে কষ্ট না দেয়, ক্ষুধায় যেন কারও মৃত্যু না হয়। খাদ্য সংস্থানের ধারণাই হল, যাতে প্রত্যেকটা মানুষের সুস্থভাবে জীবনযাপন করার জন্য ন্যুনতম প্রয়োজনের খাদ্যটুকু জোটে।
‘এক দেশ, এক রেশন’ এবং ‘কমিউনিটি কিচেন’
১. দেশে মোট কত পরিযায়ী শ্রমিক ও কত অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মরত শ্রমিক রয়েছেন, সেই সংখ্যা নথিভুক্ত করতে হবে। ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারি পোর্টালে এই তথ্য নথিভুক্ত করতে হবে। রাজ্যগুলিকে এই তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে সাহায্য করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে সরকারি স্কিমের সুবিধা পাওয়া সহজ হবে শ্রমিকদের।
আরও পড়ুন: ফের গভীর রাতে জম্মুর সেনাঘাঁটিতে ড্রোন, লাগাতার নাশকতার ছক!
২. যে সব রাজ্য এখনও ‘এক দেশ, এক রেশন কার্ড’ কার্যত করেনি তাদের অবিলম্বে তা কার্যকর করতে হবে। ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময় সময়সীমা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া রাজ্যগুলিকে বলা হয়েছে, যে সব শ্রমিকদের দু’বেলা খাওয়ার মতো খাবার জুটছে না তাদের খাবার জোগাতে কমিউনিটি কিচেন চালাতে হবে। অতিমারির পরিস্থিতি শেষ হওয়া পর্যন্ত সেই ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে রাজ্যগুলিকে।