Supreme Court Partially Stays on Waqf Act: ওয়াকফ আইনের উপরে আংশিক স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের
Waqf Act: ওয়াকফে সম্পত্তি দান করার জন্য ৫ বছর ইসলাম ধর্মাচরণ করার যে শর্ত দেওয়া হয়েছিল ওয়াকফ সংশোধনী আইনে, তার উপরে স্থগিতাদেশ দিলেন প্রধান বিচারপতি বি আর গভাই এবং বিচারপতি এ জি মসিহ। তবে সম্পূর্ণ ওয়াকফ আইনের উপর স্থগিতাদেশ দিতে অস্বীকার সুপ্রিম কোর্টের।

নয়া দিল্লি: ওয়াকফ আইনে (Waqf Act) আংশিক স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court)। ওয়াকফে সম্পত্তি দান করার জন্য ৫ বছর ইসলাম ধর্মাচরণ করার যে শর্ত দেওয়া হয়েছিল ওয়াকফ সংশোধনী আইনে, তার উপরে স্থগিতাদেশ দিলেন প্রধান বিচারপতি বি আর গভাই এবং বিচারপতি এ জি মসিহ। তবে সম্পূর্ণ ওয়াকফ আইনের উপর স্থগিতাদেশ দিতে অস্বীকার সুপ্রিম কোর্টের।
ওয়াকফ আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টে একাধিক পিটিশন দাখিল হয়েছিল। আর্জি জানানো হয়েছিল, এই আইনে সম্পূর্ণ স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক। তবে এ দিন, সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট ওয়াকফ আইনের উপরে সম্পূর্ণ স্থগিতাদেশ দিতে অস্বীকার করে। তবে কিছু কিছু বিধানের অন্তর্বর্তী সুরক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলেই উল্লেখ করেছে শীর্ষ আদালত।
এ দিন প্রধান বিচারপতি বিআর গভাই ও বিচারপতি এ জি মসিহের বেঞ্চ বলে, “গোটা আইনটিকেই চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে, তবে আমরা দেখেছি যে বেসিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে ৩(আর), ৩সি, ১৪ নিয়ে। আমরা ১৯২৩ সালের আইন থেকে আইন প্রণয়নের ইতিহাস দেখেছি এবং প্রত্যেকটি ধারার প্রাথমিক ভিত্তিতে চ্যালেঞ্জ বিবেচনা করেছি। পুরো আইনের বিরুদ্ধে শুনানির মতো যুক্তি পাওয়া যায়নি। তবে যেসব ধারা বিশেষভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে, সেই ধারাগুলোর ওপর আমরা স্থগিতাদেশ জারি করছি।”
মূল যে বিষয়টির উপরে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে, তা হল ওয়াকফ সম্পত্তি দান নিয়ে যে বিধান দেওয়া হয়েছিল, তার উপর। ওয়াকফ সংশোধনী আইনে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি পাঁচ বছর ইসলাম ধর্ম পালন না করলে তিনি ওয়াকফ প্রতিষ্ঠা বা দান করতে পারবেন না। সরকার একজন (অমুসলিম) অফিসার নিয়োগ করবে, যিনি খতিয়ে দেখবেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পাঁচ বছর ইসলাম ধর্ম পালন করেছেন কিনা। এ বিষয়ে রিপোর্ট জমা না পড়া পর্যন্ত, ওই ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন সম্পত্তি ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে না।
যদি তদন্তকারী অফিসার প্রমাণ পান যে ওয়াকফের নামে অধিকৃত সম্পত্তি বা জমি আদতে সরকারি সম্পত্তি, তাহলে রেভিনিউ রেকর্ডে তথ্য পরিবর্তন করার প্রস্তাব দিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দেবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর রাজ্য সরকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে রেভিনিউ রেকর্ড পরিবর্তন করার নির্দেশ দেবে। এই ধারার উপরেই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট ওয়াকফ সংশোধনী আইনের যে ধারাগুলির উপরে স্থগিতাদেশ দিয়েছে, সেগুলি হল-
প্রথম– কোনও সরকারি জমি ওয়াকফ অধিগ্রহণ করেছে কিনা, তা বিচার করার জন্য সরকারের দ্বারা সরকারি অফিসার নিয়োগের সিদ্ধান্তের উপর স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।
দ্বিতীয়– ওয়াকফ সংশোধনী আইন অনুযায়ী কোন ব্যক্তির ওয়াকফ সম্পত্তি দান করতে হলে, তাকে অন্তত পাঁচ বছর ইসলাম ধর্ম পালন করতে হবে। আইনের এই ক্ষেত্রের উপর স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। কোন ব্যক্তি ইসলাম ধর্ম পালন করেন কিনা, তা ব্যাখ্যা করার জন্য সরকার যতদিন না আইন তৈরি করছে, ততদিন ওয়াকফ সংশোধনী আইনের এই ক্ষেত্রের উপর স্থগিতাদেশ থাকবে।
তৃতীয়– কেন্দ্রীয় স্তরে ওয়াকফ কমিটিতে অন্তত ৪ জন অ-মুসলিম এবং রাজ্যস্তরে ওয়াকফ কমিটিতে অন্তত ৩ জন অ-মুসলিম কে রাখার বিধান রয়েছে, তা আপাতত যোগ করতে বলা হয়েছে।
চতুর্থ– সংশোধনী আইন অনুযায়ী নতুন ওয়াকফ কমিটিতে যে সরকারি অফিসার নিয়োগ হবেন, তাকে অবশ্যই অ-মুসলিম হতে হবে। আইনের এই ক্ষেত্রের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। নতুন আইনের ৩সি(৪) ধারায় জেলাশাসকের হাতে ক্ষমতা ছিল কোনও ওয়াকফ সম্পত্তি সরকারি জমি কি না, তা পর্যালোচনা করে নির্ধারণ করার। এই ধারায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধান বিচারপতি বিআর গভাই বলেন, “জেলাশাসকদের হাতে এই নির্ধারণ ক্ষমতা দিলে তা ক্ষমতার বিভাজনের বিরোধী। কোনও আধিকারিক নাগরিকদের অধিকার নির্ধারণ করতে পারেন না।”
পঞ্চম– সংশোধনী অনুযায়ী, সরকার নিয়োজিত অফিসার ওয়াকফ বোর্ডের রেভিনিউ রেকর্ড খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। এই আইনি সংস্থানের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
