Semiconductor Factory in India, Industrial Revolution: একটা কারখানা তৈরি হতে ৬০ বছর, নয়া শিল্পবিপ্লবের সামনে ভারত
৬০ বছর পর অবশেষে শুরু হতে চলেছে কাজ। যা বাস্তবায়িত হলে অনেকে বলছেন দেশে আসবে শিল্প বিপ্লব। কোনও বেসিক ইলেকট্রনিক ডিভাইসেই এর ব্যবহার। লাইট এমিটিং ডায়োড। যাকে আমরা চলতি কথায় এলইডি বলি। তাও সেমি-কন্ডাক্টর ডিভাইসে তৈরি। স্মার্ট ওয়াচ থেকে বাথরুমের গিজার, ঘরে ও শিল্পে ব্যবহৃত সমস্ত ইলেকট্রনিক যন্ত্রেরই প্রাণভোমরা হল এই সেমি-কন্ডাক্টর।
৬০ বছর পর অবশেষে শুরু হতে চলেছে কাজ। যা বাস্তবায়িত হলে অনেকে বলছেন দেশে আসবে শিল্প বিপ্লব। ১৯৬২ সালে দেশে প্রথম সেমি-কন্ডাক্টর তৈরির কারখানা খোলার কথা হয়। যদিও সে পরিকল্পনা এতদিনেও দিনের আলো দেখেনি। অবশেষে অসমের মরিগাঁও এবং গুজরাতের সানন্দ ও ধোলেরায় একসঙ্গে ৩টি সেমিকন্ডাক্টর কারখানা চালু হতে যাচ্ছে। ভোটের আগে যে কারখানাগুলোর শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী।
অসমে কারখানা তৈরি করছে টাটারা। লগ্নি হয়েছে প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা। সরকার বলছে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মিলিয়ে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের কাজের সংস্থান হবে এই কারখানা থেকে। আর গুজরাটে তাইওয়ানের একটি সংস্থা লগ্নি করবে প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা। সেখানেও তৈরি হবে প্রচুর কাজের সুযোগ। তবে এই সেমি-কন্ডাক্টর কারখানা কিন্তু আর পাঁচটা শিল্পের মতো শুধু বিনিয়োগ আর কর্মসংস্থানের কিছু ফিগারে সীমাবদ্ধ নয়। এর ব্যপ্তি অনেক অনেক বেশি। আর তাই শিল্প বিপ্লবের কথাটা উঠে আসছে।
আমরা সবাই জানি ধাতু মানে হল পরিবাহী। বিদ্যুত পরিবহণ করতে পারে। যেমন তামা। আর অ-ধাতু মানে অপরিবাহী। যা তড়িৎ পরিবহণ করতে পারে না, যেমন কাচ। এই দুটোর মাঝামাঝি থাকা কোনও পদার্থকেই বলা হয় অর্ধ-পরিবাহী বা সেমি-কন্ডাক্টর। যেমন মৌলিক পদার্থ সিলিকন, জার্মেনিয়াম বা যৌগিক পদার্থ ক্যাডমিয়াম সালফাইড, গ্যালিয়াম আর্সেনাইড হল সেমি-কন্ডাক্টরের আদর্শ উদাহরণ। ধাতুর ক্ষেত্রে তাপমাত্রা যদি বেড়ে যায়, তা হলে তড়িত্ পরিবহণ ক্ষমতা কমে যায়। সেমি-কন্ডাক্টরে ঠিক উল্টো। তাপমাত্রা বাড়লে সিলিকন বা জার্মেনিয়াম হয়ে ওঠে সুপরিবাহী। আবার কোনও অর্ধপরিবাহীর সঙ্গে যদি খুব সামান্য পরিমাণে অন্য কোনও পদার্থ মেশানো হয়। যাকে বলে ডোপিং। তাহলে এর রোধ কমে যায়। অর্ধপরিবাহী হয়ে ওঠে সুপরিবাহী। ফলে এই সেমি-কন্ডাক্টরের হাত ধরেই আধুনিক ইলেকট্রনিক্স যুগের যাত্রা শুরু হয়।
সেমি-কন্ডাক্টর দিয়েই প্রথম তৈরি হয় ডায়োড ও ট্রানজিস্টর। আজ প্রযুক্তির যে এত উন্নতি হয়েছে তার মূলে রয়েছে এই অর্ধপরিবাহী। এবার বলি কোথায় কোথায় এটা কাজে লাগে। কম্পিউটারের মস্তিষ্ক হল তার চিপ ও মাইক্রোপ্রসেসর। যা তৈরি হয় সেমি-কন্ডাক্টর দিয়ে। ডায়োড আর ট্রানজিস্টরের কথা তো বললাম। যে কোনও বেসিক ইলেকট্রনিক ডিভাইসেই এর ব্যবহার। লাইট এমিটিং ডায়োড। যাকে আমরা চলতি কথায় এলইডি বলি। তাও সেমি-কন্ডাক্টর ডিভাইসে তৈরি। স্মার্ট ওয়াচ থেকে বাথরুমের গিজার, ঘরে ও শিল্পে ব্যবহৃত সমস্ত ইলেকট্রনিক যন্ত্রেরই প্রাণভোমরা হল এই সেমি-কন্ডাক্টর। এমন একটা জিনিস যদি ভারতে হয়। তাহলে আমাদের আর সেমি-কন্ডাক্টর আমদানি করতে হবে না। বিদেশি মুদ্রা বাঁচবে। মোবাইল-কম্পিউটারের মতো নানা ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের দাম কমার আশাও আছে। এখন দুনিয়ায় মাত্র হাতে গোনা কয়েকটি দেশ সেমি-কন্ডাক্টর তৈরি করে। সবার ওপরে আছে তাইওয়ান। তারপর দক্ষিণ কোরিয়া, চিন ও আমেরিকা আর জাপান, জার্মানি। ইজরায়েলও সেমি-কন্ডাক্টর তৈরি করে। তবে পরিমাণে খুব কম। সরকার বলছে আগামী দিনে এতো গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস তৈরিতে ভারতই হয়ে উঠবে গ্লোবাল হাব। আর সেটা হলে ফের একবার চিনকে গোল দেব আমরা।