চিরাগকে সংবিধানের পাঠ, নীতীশকে নিশানা, পটনা পলিটিকসে তেজস্বীর টুইস্ট

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিহারের এই রাজনৈতিক ডামাডোলে নিজের শক্তি বৃদ্ধি করতে চাইছেন তেজস্বী।

চিরাগকে সংবিধানের পাঠ, নীতীশকে নিশানা, পটনা পলিটিকসে তেজস্বীর টুইস্ট
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 24, 2021 | 12:14 PM

পটনা: বিহারে (Bihar) রাজনৈতিক ডামাডোল। নয়া সমীকরণের ইঙ্গিত পটনার (Patna) রাজনীতিতে। তার মধ্যেই লোক জনশক্তি পার্টির সাংসদ তথা রামবিলাস পাসোয়ান পুত্র চিরাগকে মতাদর্শের পাঠ পড়ালেন বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব। দিল্লি থেকে ফিরে তেজস্বীর বার্তা, এনডিএ সংবিধান নয় আরএসএস মতাদর্শে বিশ্বাসী। চিরাগের ভাবা উচিত কোন দিকে যাবেন তিনি।

পাশাপাশি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি তেজস্বী। তাঁর দাবি, এলজেপিতে ভাঙন ধরানোর নেপথ্যে ‘মাস্টারমাইন্ড’ নীতীশ কুমার। রামবিলাসের মৃত্যুর পর লোক জনশক্তি পার্টির প্রদান হয়েছিলেন তাঁর ছেলে চিরাগ পাসোয়ান। কিন্তু কয়েকদিন আগে চিরাগের নেতৃত্বকে অস্বীকার করেন এলজেপির ৫ সাংসদ। চিরাগের কাকা পশুপতি পরসকে নতুন নেতা হিসেবে বেছে নেন এলজেপির সাংসদরা। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি লিখে তাঁরা নিজেদের পৃথক গ্রুপ হিসেবে বিবেচনা করার আর্জি জানান। এরপরই শক্তি প্রদর্শন করতে ন্যাশনাল এগজ়িকিউটিভ মিটিং ডেকে কাকার বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দেন চিরাগ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিহারের এই রাজনৈতিক ডামাডোলে নিজের শক্তি বৃদ্ধি করতে চাইছেন তেজস্বী। তাই তাঁর বার্তা, “চিরাগের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত তিনি কার সঙ্গে দাঁড়াবেন, যাঁরা বাঞ্চ অব থটসে (আরএসএ মতাদর্শ) পরিচালিত হয়, না কি যাঁরা বিআর আম্বেদকরের সংবিধান দ্বারা পরিচালিত হয়।” তেজস্বী আরও দাবি করেন, এর আগেও ২০০৫ ও ২০১০ সালে লোক জনশক্তি পার্টি ভাঙিয়েছিল জেডিইউ।

এ বার অবশ্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার জানিয়েছেন, এলজেপিতে ভাঙনের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। অন্যদিকে রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা বিদ্রোহী সাংসদদের নিয়ে নীতীশ কুমারের জোটে যোগ দেবেন পশুপতি পরস। এই জল্পনা মান্যতা পেয়েছে পশুপতিরই বয়ানে। বারবার বিদ্রোহী সাংসদদের নিয়ে নীতীশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হচ্ছেন পশুপতি।

তবে তেজস্বী হাত বাড়ালেও এখনও তেমন কোনও ইঙ্গিত মেলেনি চিরাগের তরফে। এর আগে বারবার চিরাগ স্পষ্ট করেছেন, তিনি এনডিএ জোটেই রয়েছেন। ন্যাশনাল এগজ়িকিউটিভ মিটিংয়ের পরে চিরাগ বলেছিলেন, “হনুমান সুখে-দুঃখে রামের সঙ্গেই ছিল। এখন রামকে দেখতে হবে হনুমান কোথায়।” তারপর এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “ভুলে গেলে হবে না ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর নাম ঘোষণা হওয়ার পর আমরা বিজেপির হাত ধরেছিলাম। নীতীশ যখন জোট ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, তখন পাসোয়ান ভোটাররাই ভোট দিয়েছিল।”

বিহারে ৬ শতাংশ দলিত ভোট রয়েছে। যা চিরাগের ঝুলিতে। সেই ভোট হারাতে চাইছে না কোনও দলই। তাই বিজেপিও এখনও নীতীশের পাশে দাঁড়িয়ে চিরাগের বিরুদ্ধে সুর চড়ায়নি। অন্যদিকে তেজস্বীও চিরাগের দিকে হাত বাড়াচ্ছেন। সব মিলিয়ে এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে বিহারের রাজনীতি। কোন দিকে এগোবে পটনার পলিটিকস, সেটাই দেখার।

আরও পড়ুন: একযোগে সন্ত্রাস দমন করবে ভারত-পাকিস্তান, রাশিয়ার উপস্থিতিতে সম্মতি ডোভালের