Peace Haven: কবর দেওয়ার কথা, নিমতলা শ্মশানে চলে এল খ্রিস্টান বৃদ্ধের দেহ, হুলস্থুল তপসিয়ায়
পরিবারের সদস্যদের অজান্তে কী ভাবে তপসিয়া মর্গ থেকে বৃদ্ধের দেহ সরাসরি শ্মশানে পৌঁছে গেল এবং দাহ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
কলকাতা: কপালে চন্দনের ফোঁটা। গলায় সিঁদুরের ফোঁটা। নিমতলা মহাশ্মশানে চালির ওপর শোয়ানো ৯০ বছরের পি ক্রুপা রাওয়ের দেহ। এদিকে, মধ্য কলকাতার বাসিন্দা এই খ্রিস্টান বৃদ্ধের ছেলেরা গোটা শহর খুঁজে বেড়াচ্ছেন বাবার দেহ। কারণ মর্গ থেকে গায়েব হয়ে গিয়েছে তাঁদের বাবার দেহ। পরিবারের সদস্যদের অজান্তে কী ভাবে তপসিয়া মর্গ থেকে বৃদ্ধের দেহ সরাসরি শ্মশানে পৌঁছে গেল এবং দাহ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। গোটা ঘটনায় তপসিয়া মর্গ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। পরে অবশ্য এই ঘটনায় অভিযুক্তদের শোকজের নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. সুব্রত রায় চৌধুরী। সাব রেজিস্ট্রারকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে নিজের বাড়িতেই মারা যান ক্রুপা রাও। তাঁর তিন ছেলে। পরিবারের অনেকেই কলকাতার বাইরে থাকেন। তাই ছেলেরা ফেরার পর সোমবার বৃদ্ধের দেহ কবর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। সেজন্য শুক্রবার বিকেল ৫টা নাগাদ তাঁরা তপসিয়া মর্গে ক্রুপা রাওয়ের দেহ রেখে আসেন। তারপর সোমবার সকালে দেহ নিতে গেলেই বাধে শোরগোল! মর্গে বৃদ্ধের দেহ নেই। কোথায় দেহ গেল, সে ব্যাপারে কিছুই বলতে পারেননি মর্গ কর্তৃপক্ষ। এরপর বাবার দেহ খুঁজে পেতে তপসিয়া থানার দ্বারস্থ হন বৃদ্ধের ছোট ছেলে। তারপর গোটা শহর তন্নতন্ন করে খোঁজার পর অবশেষে নিমতলা শ্মশানে বৃদ্ধের দেহের হদিশ মেলে। ততক্ষণে অবশ্য দেহ দাহ করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন। বৃদ্ধের ছোট ছেলের কথায়, আর ১০ মিনিট দেরি হলে দেহ দাহ হয়ে যেত।
তবে মর্গ থেকে কী ভাবে নিমতলা শ্মশানে ক্রুপা রাওয়ের দেহ গেল এবং তাঁকে দাহ করার প্রক্রিয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও দেহটি সাত্যকি ভট্টাচার্যের নামে দাহ হতে যাচ্ছিল। কিন্তু,মর্গ কর্তৃপক্ষের তরফে যদিও বা ভুল হয়, সাত্যকি ভট্টাচার্যের পরিবারের লোকেরাও কী দেহটি চিনতে পারেননি? এমন প্রশ্নও উঠছে। যদিও কোনও জবাব মেলেনি। গোটা ঘটনায় মর্গ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেই গাফিলতির অভিযোগ উঠছে। TV9 বাংলার প্রতিনিধি তপসিয়া মর্গে গিয়ে সেখানকার দায়িত্বে থাকা সাব রেজিস্ট্রারকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি প্রথমে দাবি করেন কিছু হয়নি। তারপর ক্যামেরার সামনে উত্তেজিত হয়ে চেঁচামেচি শুরু করেন। জোর করে TV9 বাংলার প্রতিনিধিকে ঘর থেকে বের করেদরজা বন্ধ করে দেন। কলকাতা পুরসভার অধীনস্থ তপসিয়া মর্গের এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব নিয়ে নানান প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও গোটা ঘটনার তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. সুব্রত রায় চৌধুরী। অভিযুক্তদের শোকজ করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।