Abhishek Banerjee: আগে ছিল, এখন নেই! অভিষেকের ডক্টরস সামিটের দ্বিতীয় আমন্ত্রণপত্রে বাদ ‘আয়োজক’ শান্তনু সেনের নাম
Abhishek Banerjee: পরিবর্তে আয়োজক হিসাবে কার্ডে নাম ছাপা হয় চিকিৎসক অভীক ঘোষের। কোভিডের সময় ডায়মন্ড হারবারে ‘ডক্টর্স অন হুইলস' কর্মসূচি রূপায়ণে সামনের সারিতে ছিলেন এই তরুণ চিকিৎসক।
কলকাতা: রাতারাতি তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল দলের মুখপাত্রের পদ থেকে। তাঁকে মেডিক্যাল কাউন্সিল থেকে সরাতে চিঠিও করেছিলেন সুদীপ্ত সেন। তা নিয়েও চর্চা কম হয়নি। তারপর আবার তাঁর নিরাপত্তাতেও হয়েছিল কাটছাঁট। কিন্তু এবার তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ডক্টর সামিটের’ আয়োজক হিসাবেও নাম বাদ পড়ল শান্তনু সেনের। আরজি কর কাণ্ডের পর একাধিকবার মুখ খোলারই ‘পরিণতি’ এটা, বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
আরজি কর আন্দোলনের মাঝে একাধিকবার মুখ খুলেছিলেন শান্তনু সেন। তিনি বলেছিলেন, “বিগত তিন বছরে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ ও তার অধ্যক্ষকে নিয়ে একের পর এক যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে, তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্য মডেলে কালির ছিটে লাগছে।” নাম না করে তাঁকে সতর্কও করেছিলেন নেত্রী। বলেছিলেন, “আমি তৃণমূলে যাঁদের একটাও কথা বলতে বারণ করেছিলেন, যাঁরা দুএকজন কথা বলছেন, যাঁরা কিনা, মুখপাত্র, তাঁদের আমি আগেই সরিয়ে দিয়েছিলাম।” তারপরই সাংবাদিক বৈঠক করে জয়প্রকাশ মজুমদার বিষয়টি স্পষ্ট করেন। আর তারই জের এবার অভিষেকের ডক্টরস সামিটেও।
চিকিৎসকদের সঙ্গে ‘সমন্বয়’ বৈঠকে তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার আমতলায় আয়োজিত হয়েছে এই বৈঠক। পোশাকি নাম ‘ডক্টর্স সামিট ২০২৪’। আরজি কর কাণ্ডের পর চিকিৎসকদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের যে ‘দূরত্ব’ তৈরি হয়েছিল, তা মেটাতেই এই বৈঠক। চিকিৎসকদের আন্দোলনের পর এই প্রথম হাজারও চিকিৎসকের মুখোমুখি অভিষেক। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে সামাজিক মাধ্যমে এই কর্মসূচির পোস্টার ছড়াতে শুরু করেছে। কিন্তু উল্লেখ্যযোগ্য বিষয় হল, প্রথমে এই কার্ডের আয়োজক হিসাবে শান্তনু সেনের নাম থাকলেও, পরে তাঁর নাম বাদ। পুরনো কার্ডে ছিল সৌজন্যে শান্তনু সেন। বর্তমানে যে কার্ডটি সমাজ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাতে আয়োজকের নাম অভীক ঘোষ। যিনি ডায়মন্ডহারবারে কোভিডের সময়ে ডক্টরস অফ উইলস বলে যে কর্মসূচি হয়েছিল, তার নেতৃত্বে ছিলেন। তবে পুরনো-নতুন দুটি কার্ডেই নাম রয়েছে চিকিৎসক মীরাজউদ্দিনের।
এই নাম বিতর্ক প্রসঙ্গে মীরাজউদ্দিন বললেন, “বটগাছ কে, সেটা তো আগে দেখতে হবে? সুতরাং বটগাছকেই আমরা লক্ষ্য করে এগোব। বটগাছ অবশ্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তার পরবর্তীকালে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এর তো কোনও দ্বিমত নেই।”
আনুষ্ঠানিক ভাবে কার্ডে নাম না থাকলেও আমতলার সভায় সুদীপ্ত রায়দের প্রবেশের উপরে নেকনজর রয়েছে শান্তনু শিবিরের। সূত্রের খবর, অনুগামী চিকিৎসকদের নিয়ে স্বাস্থ্যশিবিরে যোগ দিতে চেয়ে চিঠি দিয়েছেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান বিধায়ক সুদীপ্ত রায়। এখনও পর্যন্ত সদুত্তর আসেনি বলেই খবর।
শান্তনু সেন ঘনিষ্ঠ চিকিৎসকদের বক্তব্য, এর আগে ডায়মন্ড হারবার-সহ নবজোয়ারে স্বাস্থ্য শিবির আয়োজন করে তাঁরা সুশান্ত রায়, অভীক দে’র কোপে পড়েছিলেন। শনিবারের সভার পর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে অভিষেক পাশে থাকবেন সেই বার্তা পেতেও আগ্রহী শান্তনু সেন ঘনিষ্ঠরা। তৃণমূলপন্থী চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, আরজি কর কাণ্ডের আবহে আন্দোলন যে তীব্র আকার নিয়েছিল, তাতে শান্তনু সেনের ভূমিকা নিয়ে সন্ধিহান তৃণমূলের শীর্ষস্তরের নেতৃত্ব।