হাত-কাটা রাধা ডোম থেকে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত আরবাজ, বেড পাননি কেউই, চরম ভোগান্তি এসএসকেএমে

নন কোভিড রোগীদের চাপের দরুণ এই অব্যবস্থা, অভিযোগের প্রেক্ষিতে সওয়াল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের

হাত-কাটা রাধা ডোম থেকে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত আরবাজ, বেড পাননি কেউই, চরম ভোগান্তি এসএসকেএমে
নিজস্ব ছবি
Follow Us:
| Updated on: Feb 26, 2021 | 10:30 PM

কলকাতা: সরকারি খাতায়-কলমে শীর্ষে নাম এসএসকেএমের। যে কোনও সরকারি সুযোগ সুবিধা সবার আগে পাওয়ার দাবিদারও। কিন্তু, পরিষেবা দিতে পারার অভিযোগ উঠল তাদের বিরুদ্ধেও। হাসপাতাল চত্বরেই এদিক সেদিক পড়ে রয়েছেন রোগীরা। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য ধরা পড়ল রাজ্যের সেরা সরকারি হাসাপতাল চত্বরে।

বহরমপুরের বছর পঁয়তাল্লিশের রাধা ডোম মাসদুয়েক আগে একটি বাস দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। কাটা যায় তাঁর ডান হাত। কিন্তু সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়ালে রাধাকে ভর্তি করা হয় বহরমপুর মেডিকেল কলেজে। পরে সেখান থেকে তাঁকে আনা হয় নীলরতন হাসপাতালে। কিন্তু, সেখানে বেড না থাকায় রাধাকে এসএসকেএমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এসএসকেএমে প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ থেকে রাধা কে জানানো হয় তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। কিন্তু, কোনও বেড না থাকায় সাতদিন পরে তাঁদের হাসপাতালে আসতে বলা হয়।

রাধা ডোমের পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। এই পরিস্থিতিতে বারবার মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতা যাতায়াত করাও সম্ভব নয়। বাধ্য হয়ে এসএসকেএম-এরই সেন্ট্রাল ওপিডি কাউন্টারের ডানদিকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে একটি স্ট্রেচারে কোনওক্রমে রয়েছেন রাধা। তাঁর স্ট্রেচারের পাশেই নর্দমা। সমস্ত হাসপাতালের ময়লা জল ওই নর্দমা দিয়েই বের হয়। এমনকী স্বয়ং রাধা দেবীও নিজে ওখানেই মল মূত্র ত্যাগ করছেন। কারণ, হাসপাতালে আর কোথাও রোগী রাখার জায়গা নেই। এভাবেই হাসপাতাল চত্বরে ৪ দিন কাটিয়ে ফেলেছেন রাধা ও তাঁর পরিবার।

প্রায় একইরকম হয়রানির শিকার আসানসোলের আরবাজও। দুর্ঘটনার কবলে পড়ে নিজের ডান হাত খুইয়েছেন আরবাজ। বাঁ-পায়ের হাড় ভেঙে প্যারালিসিসের শিকার তিনি। পাঁচ লক্ষ টাকার চিকিৎসার বিনিময়ে প্রায় তিন মাস ধরে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালেই ছিলেন আরবাজ। কিন্তু তারপরেও হাসপাতাল লক্ষাধিক টাকা দাবি করলে তাঁকে আনা হয় এসএসকেএমে। কিন্তু, বেড না পেয়ে এমার্জেন্সি টিকিট কাউন্টারের সামনে স্ট্রেচারে শুয়ে আছেন আরবাজ। কথা বলার ক্ষমতাও নেই তাঁর।

আরবাজের পরিবারের অভিযোগ, এত খরচ যদি করতেই হয় তবে সরকারি হাসপাতালে না এসে বেসরকারি হাসপাতালেই যাওয়া যায়। সরকারি হাসপাতাল হয়েও কেন যথোপযুক্ত পরিষেবা নেই তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রোগীর পরিবার।

এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের দাবি, একমাত্র নন-কোভিড সরকারি হাসপাতাল হওয়ায় রোগীর চাপ অত্যন্ত বেশি। কলকাতা মেডিকেল কলেজ বা অন্যান্য হাসপাতালে কোভিড শয্যা বরাদ্দ থাকায়, নন কোভিড রোগীদের চাপ অনেকটাই এসে পড়েছে এসএসকেএমের উপর। কিন্তু বেড বাড়েনি। অত্যন্ত সংকটজনক অবস্থা না হলে সব রোগীকে ভর্তি করা সম্ভব হচ্ছে না। যদিও Tv9 বাংলার খবরের জেরে পরে ওই রোগীদের ভর্তি নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।