Calcutta High Court: বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে ‘না’ বলে চিঠি, হলফনামা তলব করলেন প্রধান বিচারপতি

Calcutta High Court: বার অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে প্রধান বিচারপতিকেও অবগত করা হয়েছে।

Calcutta High Court: বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে 'না' বলে চিঠি, হলফনামা তলব করলেন প্রধান বিচারপতি
বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার এজলাসে আইনজীবীদের বিক্ষোভ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 10, 2023 | 12:13 PM

কলকাতা: বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এজলাসে বিচারপ্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আইনজীবীরা। একটি চিঠি দিয়ে জানাল বার অ্যাসোসিয়েশনের একাংশ আইনজীবী। তাঁদের বক্তব্য, সাধারণ সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বার অ্যাসোসিয়েশন। বর্তমান পরিস্থিতিতে আদালতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্যই এই সিদ্ধান্ত বলে দাবি একাংশ আইনজীবীর। বার অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে প্রধান বিচারপতিকেও অবগত করা হয়েছে। অথচ বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট অরুণাভ ঘোষ বলেন, তিনি এসব বিষয়ে কিছু জানেনই না। বার প্রেসিডেন্ট অরুণাভ ঘোষের বক্তব্য, “রেজিলিউশনই নেওয়া হয়নি, ওটা মিথ্যা চিঠি। ওটা এক্তিয়ার বহির্ভূত। প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি, ভাইস প্রেসিডেন্ট কেউ জানেনই না। ভাইস প্রেসিডেন্ট চিঠি পাঠিয়েছেন প্রধান বিচারপতিকে, যে এরকম কোনও রেজিলিউশন হয়নি। ট্রেজারার  রেজিলিউশন নেওয়ার কে? একটা বাজে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলির জন্য। আদালত বয়কট কেন হবে? রাজ্যের পক্ষে রায় দিচ্ছে না বলে নাকি রাজ্যের পক্ষে রায় দিচ্ছে? এসবের জন্য।” বারের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। দুপুর ২টোয় আদালত সিদ্ধান্ত নেবে।

সোমবার থেকে যে বিক্ষোভ চলছিল, তার রেশ এখনও রয়েছে গিয়েছে হাইকোর্টে। বারের একশো জন আইনজীবী একটি চিঠি দিয়ে দাবি করছেন, যে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে কোনও বিচারপ্রক্রিয়ায় তাঁর অংশগ্রহণ করবেন না। বারের প্রেসিডেন্ট অরুণাভ ঘোষের বক্তব্য, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা চিঠি। আইনজীবীদের একাংশের মতো, এরকম যখন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, একটা চিঠি জমা পড়ছে, তাহলে আলাদা করে একটি বৈঠক ডাকা হোক। জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবারও নির্দিষ্ট  সময়েই বিচারপতি তাঁর এজলাসে বসবেন। সেক্ষেত্রে বাইরে থেকে কেউ অবরোধ করেন কিনা, সেটাই দেখার।

এই পরিস্থিতিতে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের কাছে গিয়ে আবেদন করেন, “আদালত স্বত:প্রণোদিত হয়ে অবমাননা রুল জারি করুক।” বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার এজলাস বয়কটের বারের চিঠি দেখে বিরক্ত প্রধান বিচারপতিও। তিনি বলেন, ” আশ্চর্য হলাম। সোনাল সিনহা (সহ সম্পাদক) স্বাক্ষর করছেন। লেটার হেডে লেখা রয়েছে একটা বিষয়। আবার চিঠির মধ্যে লেখা অন্য। জানি না কী হচ্ছে!” তাঁর পর্যবেক্ষণ,  “একটা প্রেস্টিজিয়াজ কোর্ট। বার কোনও সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না।” এরপরই বারের চিঠি নিয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

প্রসঙ্গত, বিষয়টির সূত্রপাত কয়েকদিন আগে। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা শুভেন্দু অধিকারীর একটি মামলায় রায় দিয়েছিলেন। তাতে শুভেন্দুকে রক্ষাকবচ দিয়েছিলেন। পাশাপাশি নির্দেশ দিয়েছিলেন শুভেন্দুর বিরুদ্ধে এফআইআর হলে সেই মামলা যেন তাঁরই এজলাসে আনা হয়। এই বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব আগেই সরব হয়েছিলেন। সোমবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কট করেন আইনজীবীদের একাংশ। এজলাস বাইর থেকে তালা দিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে তাতে হস্তক্ষেপ করেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। তিনি সতর্ক করেন, সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে, না হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। কিন্তু তারপরও জল গড়ায় অনেক দূর। হাইকোর্ট চত্বর তো বটেই, যোধপুর পার্কে বিচারপতির বাড়ির সামনেও পোস্টার পড়ে। বিষয়টি নজিরবিহীন বলে মত আইনজীবীদের একাংশের।