Bagtui Massacre: রাজ্য পুলিশে ভরসা নয়, বগটুই-কান্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

রামপুরহাটে পঞ্চায়েত উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হওয়ার পর সেই রাতেই বগটুই গ্রামে একাধিক বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনায় অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়েছে।

Bagtui Massacre: রাজ্য পুলিশে ভরসা নয়, বগটুই-কান্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
বগটুই কান্ডের তদন্তে সিবিআই। ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 25, 2022 | 1:34 PM

কলকাতা: বীরভূমের বগটুইতে যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে রাজ্য পুলিশের ওপর আর ভরসা করা যাবে না। এ কথা জানিয়ে শুক্রবার বগটুই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবারই শেষ হয় এই মামলার শুনানি। রায়দান স্থগিত রেখেছিল প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ। সেই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল আদালত। স্বতস্ফূর্তভাবে এই মামলা গ্রহণ করেছিল আদালত। মাত্র দুদিনের শুনানির পরই সিবিআই তদন্তের পক্ষে রায় দিল ডিভিশন বেঞ্চ। এ দিন আদালতের তরফে বলা হয়েছে, বগটুই -এর হত্যাকান্ড যে ভাবে সমাজে প্রভাব ফেলেছে, তাতে রাজ্যের তদন্তকারীদের ওপর আর ভরসা করা যাবে না।

আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, বিচার এবং সমাজে প্রতি ন্যায়ের কারণে স্বচ্ছ তদন্ত করে সত্য সামনে আনা জরুরি। সেই প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে এই মামলাটি সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে চায় আদালত। সেই মোতাবেক রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মামলাটি সিবিআইয়ের হাতে তারা তুলে দিক। এই মামলায় রাজ্যের গঠিত সিট কোনও তদন্ত করতে পারবে ন তবে সিবিআইকে সহযোগিতা করতে হবে রাজ্যকে, এমনটাই জানিয়েছে আদালত।

ঘটনার গতিপ্রকৃতি দেখে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে ওই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, বগটুই-কান্ডে তদন্তের জন্য যে সিট গঠন করেছিল রাজ্য, সেই সিট আর কোনও তদন্ত করতে পারবে না। মামলাকারীরা সিটের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। জ্ঞানবন্ত সিং-কে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টাতে প্রশ্ন তুলেছিলেন মামলাকারীরা। এবার আদালতও জানিয়ে দিল রাজ্য পুলিশের ওপর আর ভরসা করা যাবে না। ৭ এপ্রিলের মধ্যে সিবিআই-কে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে নন্দীগ্রামের ঘটনাতেও কয়েকদিন পরই সিবিআই-এর হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছিল। আর এবার বগটুই-কান্ডে ঘটনার দিন কয়েকের মধ্যেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দেওয়া হল দায়িত্ব।

কী বলছে বগটুইবাসী?

স্বজনহারারা আদালতের এই রায়ে খুশি। স্বজন হারানো এক ব্যক্তি বলেন, ‘সঠিক বিচার হবে। আমারা সেটাই চাই।’ আর এক মহিলা বলেন, ‘খুব খুশি হয়েছি, ভাদুর মস্তানরা যেন ঢুকতে না পারে। ঢুকলেই মেরে দেবে আমাদের।’

‘রাজ্য সরকারের গালে চপেটাঘাত’

এই রায়দান প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘আমরা আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। যে ভাবে টাকা ও চাকরি দিয়ে মৃতদেহগুলিকে কিনে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, তাতে এই নির্দেশ রাজ্য সরকারের গালে চপেটাঘাত।’ সুকান্ত মজুমদারের দাবি, যাঁরা সেই রাতে ঘটনার কথা শুনেও গুরুত্ব দেননি, তাঁদের যেন গ্রেফতার করে সিবিআই। হাইকোর্টের নজরদারিতে তদন্ত চালানোর আর্জি জানিয়েছেন তিনি।

‘মমতার সিট আর অমিত শাহের সিবিআই…’

বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘সিট যে ধাপাচাপা দেওয়ার একটা চেষ্টা, সেটা আমরা আগেও বলেছি। সেটাই এবার পরিষ্কার হয়েছে। গতকালও সেই বন্দোবস্ত হয়েছে।’ তবে সুজনের মতে, ‘মমতার সিট আর অমিত শাহের সিবিআই-এর মধ্যে কোনও তফাৎ নেই।’ তাই আদালতের নজরদারিতে তদন্তের কথা বলেছেন তিনিও।

মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল জানান, তিনি আদালতে প্রশ্ন তুলেছিলেন, সিট গঠনের সময় না থাকলেও কেন পরে দায়িত্ব দেওয়া হল জ্ঞানবন্ত সিং-কে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: Bagtui Massacre: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরই টনক নড়ল প্রশাসনের, অভিশপ্ত সেই পরিবারের বাকি সদস্যদের নিরাপত্তা