HC On Physical Assault Cases: রাজ্যে ৫ ‘ধর্ষণে’র ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিতে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা
HC On Physical Assault Cases: ময়নাগুড়ি, পিংলা, শান্তিনিকেতন, নামখানা, নেত্রা- রাজ্যে একের পর এক নাবালিকা ধর্ষণের অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে গত কয়েকদিনে।
কলকাতা: রাজ্যে ঘটে যাওয়া ৫ টি ধর্ষণের অভিযোগে এবার হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের হয়। ময়নাগুড়ি, পিংলা, শান্তিনিকেতন, নামখানা, নেত্রা- এই পাঁচটি ঘটনা নজরে এনে মামলা দায়ের হয়েছে আদালতে। রাজ্যে একের পর এক নাবালিকা ধর্ষণের অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে গত কয়েকদিনে। তা নিয়ে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মামলাকারীদের একাংশের বক্তব্য, আদালত যাতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি তৈরি করে এই মামলাগুলির তদন্ত করে। মামলাকারী আইনজীবী সোমবার আদালতে আবেদন করেন, জরুরি ভিত্তিতে যাতে এই মামলা শোনা হয়। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছে আদালত।
শেষ এক মাসে রাজ্যে একের পর এক ধর্ষণ, গণধর্ষণের অভিযোগ সামনে এসেছে। তার মধ্যে রাজ্যে সবচেয়ে শোরগোল ফেলেছে হাঁসখালির ঘটনা। নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতার ছেলের। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। গ্রেফতার করা হয়েছে মূল অভিযুক্তকেও। বাকি কেসগুলিরও সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন মামালাকারী।
নামখানা
কাকদ্বীপে বছর চল্লিশের এক মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এমনকি তাঁকে অ্যাসিড ছু়ড়ে পুড়িয়ে দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, অভিযুক্তরা ঘরে কোনওভাবে ঢুকে গিয়েছিল। ঘটনার রাতে তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে শৌচাগারে গিয়েছিলেন। তখনই তাঁকে তিন জন পিছন থেকে চেপে ধরেন। ঘরে তাঁকে টেনে ঢুকিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকি অভিযুক্তদের মধ্যে এক জনকে চিনে ফেলায় তাঁকে অ্যাসিড ছুড়ে মারা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় নির্যাতিতার ভাসুর অমল খাটুয়া ও তার বেয়াই কার্তিক মাইতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
শান্তিনিকেতন
এক আদিবাসী নাবালিকা এক নাবালকের সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে এলাকায় চড়কের মেলায় গিয়েছিল। মেলা দেখে ফেরার সময় এই ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, নির্যাতিতার সঙ্গী ওই নাবালককে মারধর করে বেশ কয়েকজন। একটি ফাঁকা জায়গায় তারা যখন গল্প করছিল, তখন আচমকাই আক্রমণ করে ওই দুষ্কৃতীরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচজন যুবক মিলে ওই নাবালককে মারধর করে নাবালিকাকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর নদীর ফাঁকা চর এলাকায় নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। এরপরে স্থানীয় লোকজনকে ডেকে আনে নাবালিকার সঙ্গী। খবর পেয়ে নাবালিকাকে উদ্ধার করে এলাকার মানুষ। গত বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা। স্থানীয়রাই তাকে উদ্ধার করেন। শুক্রবার সকালে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। ঘটনায় সোমবারই চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পিংলা
পিংলার কালুখাঁড়া এলাকায় বিশেষভাবে সক্ষম এক মহিলাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ জানাতে নির্যাতিতাকে তিন ঘণ্টা থানায় বসিয়ে রাখা হয় বলে দাবি বিজেপির। ঘটনার পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তোলা হয়।
ময়নাগুড়ি
জলপাইগুড়িতে ময়নাগুড়িতে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার পরে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। মূল অভিযুক্ত-সহ ২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এখনও অধরা আরও দুই অভিযুক্ত। পরবর্তী পর্যায়ে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে নাবালিকা। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি ওই নাবালিকা।
এছাড়াও নেত্রাতেও একটি ধর্ষণের অভিযোগে শোরগোল পড়ে। এই পাঁচটি ঘটনা হাইকোর্টের নজরে আনা হয়। এর আগে মাটিয়া, ইংরেজবাজার, দেগঙ্গা ও বাঁশদ্রোণী ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতার স্পেশ্যাল পুলিশ কমিশনার দময়ন্তী সেনের পর্যবেক্ষণে রাজ্য পুলিশকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্যে একের পর এক নারী নির্যাতনের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসাতে আইন শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। এহেন পরিস্থিতিতে একাধিক মামলায় দেখা গিয়েছে রাজ্য পুলিশের ওপর কার্যত অনাস্থা প্রকাশ করেছে খোদ আদালত। অনেক কেসেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এই জনস্বার্থ মামলার ক্ষেত্রে আদালত কী রায় দেয়, সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন: HC On Alipur Jail: আলিপুর জেলের একটা ইটও আর ভাঙতে পারবে না রাজ্য, স্পষ্ট জানিয়ে দিল হাইকোর্ট