Election Commission: ‘SP-DM-রা না পারলে আমরা তাঁদের দিয়ে করিয়ে নেব’, কড়া মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার
EC: প্রথমে আমরা সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারপর ডিজি মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছি আমরা। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলই আমাদের জানিয়েছে, তাঁরা অবাধ শান্তিপূর্ণ ও হিংসামুক্ত নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর: রাজীব কুমার
কলকাতা: নির্বিঘ্নে ভোটের ব্যবস্থা করুক রাজ্য। মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকা ও ডিজি রাজীব কুমারের সঙ্গে বৈঠকের পর কড়া নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের। সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার কী কী বললেন, দেখুন এক নজরে।
KEY HIGHLIGHTS
- হিংসামুক্ত নির্বাচন করতে হবে, এই একটা বিষয়কে সুনিশ্চিত করতে হবে।
- এখানে ভয়মুক্ত হয়ে যাতে প্রত্যেক নাগরিক উৎসবের মেজাজে ভোট দিতে পারে।
- প্রথমে আমরা সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারপর ডিজি মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছি আমরা।
- প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলই আমাদের জানিয়েছে, তাঁরা অবাধ শান্তিপূর্ণ ও হিংসামুক্ত নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর। আমলাতন্ত্র রক্ষার ক্ষেত্রে এখানে পক্ষপাতিত্ব করা হয়। এটা আমাদের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলই বলেছে।
- কমিশনের বদলির যে নিয়ম রয়েছে, সেটা সঠিকভাবে মান্যতা পাক। একটা সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, যে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। সেক্ষেত্রে কাউকেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। এক্ষেত্রে পরিস্থিতিটা একটু গন্ডগোলের, সেই বিষয়টির ওপর জোর দিচ্ছে কমিশন।
- ভোট পূর্ববর্তী ও পরবর্তী পর্যায়ের হিংসাকে কড়া হাতে দমন করা হবে। কোনও রকমের সন্ত্রাস বরদাস্ত করা হবে না। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে থাকবে কড়া নজরদারির ব্যবস্থা।
- রাজনৈতিক দলের তরফ থেকে এই অভিযোগও তোলা হয়েছে, নির্বাচনে কিছু কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে চান, সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন হতে বাধা দেন, কোথাও কোথাও বোমাবাজি, শ্লীলতাহানি, প্ররোচনা দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। সেবিষয়গুলোর ওপর নজর দেওয়ার কথা বলেছে রাজনৈতিক দলগুলি।
- আমাদের কাছে রাজনৈতিক দলগুলি দাবি জানিয়েছে, সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো যাতে অনেক বেশি করে বেশি জায়গায় লাগানো যায়। র্যালির ক্ষেত্রে যে অনুমতি দেওয়া হয়, তা যেন মান্য করা হয়।
- ভোট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আরও বেশি করে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করতে হবে। আর পর্যবেক্ষকদের যোগাযোগের নম্বর সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের কাছে দেওয়া হোক, এই দাবি জানানো হয়েছে। সেটা মান্যতা দেওয়া হবে।
- রাজ্যে যাঁরা চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন, যেমন গ্রিন পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়রদের যাতে ভোটের কাজে ব্যবহার করা না হয়, বুথ থেকে বাইরে যাতে বার করে দেওয়া না হয়, সেই বিষয়টা নিশ্চিত করতে হবে।
- কিছু রাজনৈতিক দল দাবি জানিয়েছে, যাতে নির্বাচনকে এক দফায় করানো যায়। আধার কার্ড যদি বাতিলও হয়ে যায়, তাতে ভোটে কোনও প্রভাব না পড়ে, ভোটিং মেশিনের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে। এই দাবিগুলোও রাজনৈতিক দলের তরফে বলা হয়েছে।
- আমি একটা বিষয়ই সুনিশ্চিত করে বলে দিতে চাই, কোনওভাবেই নির্বাচনে কোনওরকমের হিংসা বরদাস্ত করা হবে না। টাকার খেলাও বরদাস্ত করা হবে না। ভোটার উৎসবের মেজাজে ভোট দেবে, এটাই প্রশাসন ও আমাদের নিশ্চিতভাবে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
- আমরা প্রশাসনকে কড়া নির্দেশ দিয়েছি, জেলাশাসক, পুলিশ সুপার যেন তাঁদের অধঃস্তনদের এক্ষেত্রে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। যদি তাঁরা করেন তো ভালো, না হলে আমরা তাঁদের দিয়ে করিয়ে নেব।
- বাংলায় টোটাল ভোটারের সংখ্যা ৭.৫৮ কোটি। পুরুষের সংখ্যা, ৩.৮৫ ও মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৩. ৭৩ কোটি। ৪.৯২ ইলেক্টর্স রয়েছেন।
- প্রথম ভোট দিচ্ছেন, এমন ভোটারের সংখ্যা, ১৫.২৫ লক্ষ।
- যে সমস্ত ভোটারদের ৪০ শতাংশের বেশি শারীরিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তাঁদের ঘর থেকে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা করব। পাশাপাশি বয়স্কদের ক্ষেত্রেও এই সুবিধা দেওয়া হবে।
- আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করা হয়েছে। সেটা হচ্ছে সি-ভিজিল। সিটিজেন্স ভিজিলেন্স। এর মাধ্যমে আপনি আপনার অভিযোগ ছবি তুলে কিংবা লিখে পাঠিয়ে দেবেন। লোকেশন আমরাই খুঁজে নেব। কোথাও বুথে, ভোটকেন্দ্রে কোনও বেনিয়ম হচ্ছে কিনা, তা দেখলেই আমাদের এখানে জানান।
- রাজনৈতিক দলগুলোকে সুবিধা পোর্টালের মাধ্যমে সাহায্য।
- রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেও কর্তব্য, বিজ্ঞাপন দিয়ে নিজের প্রার্থীদের ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে ভোটারদের জানানো।
- আরও একটি পদক্ষেপ করেছি। ইলেকসন সিজার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। রাজ্য ও কেন্দ্রের সব তথ্য এই পোর্টালে থাকবে।
- ব্যাঙ্কের আধিকারিকদেরও বলে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের টাকার ভ্যান যেন বিকাল পাঁচটার পর রাস্তায় না বেরোয়। রাজ্যে যতগুলো হেলিপ্যাড, বিমানবন্দর রয়েছে, সেখানে কড়া নজরদারি থাকবে। জেলাশাসক যখন কোনও হেলিকপ্টার কিংবা বিমানকে অবতরণের সবুজ সঙ্কেত দেবেন, তখন ইডি আধিকারিক ও বিসিএস- এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকেও দিতে হবে।
- জেলাস্তরে প্রশাসনিক আধিকারিকরা নিয়মিত বৈঠক করেন। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যেক অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে জবাব দিতে হবে।
- নির্বাচন কত দফায় হবে, সেটা নির্ধারিত নয় এখনই। যেদিন হবে, সংবাদমাধ্যমকেই প্রথম জানানো হবে।
- ২ দিনের দীর্ঘ আলোচনায় একটা বিষয় স্পষ্ট, ডিএম, এসপি-সহ প্রশাসনিক স্তরের আধিকারিকরা প্রাথমিকভাবে দায়বদ্ধ নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ ও হিংসামুক্ত করার ক্ষেত্রে। তাঁরা আমাদের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, তাঁরা একাজ করবেনই, সঙ্গে নিজের অধঃস্তনদের দিয়েই সেই বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। হ্যাঁ, এরপরও নির্বাচনে কিছু না কিছু ঘটনা ঘটে যায়। আমরা আশা করছি, এবার সেরকম হবে না। যদি হয়, তাহলে জেলা প্রশাসন বিষয়টা দেখে নেবে, যদি না দেখে, তাহলে আমরা জেলা প্রশাসনকে দিয়েই ব্যাপারটা দেখিয়ে নেব।
- কেন্দ্রীয় বাহিনী সব রাজ্যেই গিয়েছে। গোটা দেশে যত পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী গিয়েছে, তার মাত্র ১০ শতাংশ বাংলায় এসেছে। আর নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী যাওয়াটাই স্বাভাবিক বিষয়। বাহিনী মোতায়েন কোনও পক্ষপাতিত্ব নেই। রাজ্য পুলিশ অবশ্যই থাকবে। রাজ্য পুলিশের প্রাথমিক দায়িত্ব নির্বাচনে নিরাপত্তা ও শান্তি সুনিশ্চিত করবে।
- কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথায় মোতায়েন হবে, এই নির্ধারণ কে করবে? সেটাও প্রশ্ন। সেক্ষেত্রে বলি, রাজ্য পুলিশ, নোডাল অফিসার ও সিইও আরিফ আফতাব, কমিশনের এক পর্যবেক্ষণ মিলে সিদ্ধান্ত নেবে, কোন কোন এলাকা স্পর্শকাতর। জেলায় যখন বাহিনী পৌঁছে যাবে, তখন সিদ্ধান্ত নেবে ডিএম, এসপি ও কমিশনের জেলা পর্যবেক্ষক। নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করা যৌথ দায়িত্ব।
- ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিদের ভোট দেওয়ার বিষয়টি ভেবে দেখা হবে। পোস্টাল ব্যালট কীভাবে পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই বিষয়টি ভাবা হচ্ছে।
- ভুয়ো ভোটারের বিষয়টি বলতে গেলে, ৫ জানুয়ারি, ২০২৩ কো রোল ফাইনাল হয়। তারপর ২০২৪ রোল ফাইনাল হয়েছে। এর মধ্যে আপডেট হতে থাকে। ওই সূচি রাজনৈতিক দলের কাছে আছে।