করোনা গেরো: বাইক মিছিল-পদযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা, জনসভার ক্ষেত্রেও কড়া নির্দেশিকা কমিশনের

শেষ দু'দফা ভোটের আগে প্রচারে কোনও পদযাত্রা করা যাবে না। একই সঙ্গে কোনও রোড শো বা বাইক মিছিলের উপরও সম্পূর্ণভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

করোনা গেরো: বাইক মিছিল-পদযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা, জনসভার ক্ষেত্রেও কড়া নির্দেশিকা কমিশনের
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Apr 22, 2021 | 10:00 PM

নয়া দিল্লি: কলকাতা হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ার পরই বাংলায় নির্বাচনী প্রচার এবং জমায়েতে লাগাম টানতে উদ্যোগী হল নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার কমিশনের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করে একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে প্রচারে। কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, শেষ দু’দফা ভোটের আগে প্রচারে কোনও পদযাত্রা করা যাবে না। একই সঙ্গে কোনও রোড শো বা বাইক মিছিলের উপরও সম্পূর্ণভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যদিও প্রচার সভা এখনই বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়নি।

কিন্তু কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, কোনও নির্বাচনী জনসভায় ৫০০ জনের বেশি হাজির করা যাবে না। ইতিমধ্যেই যদিও কোনও পদযাত্রা বা বাইক মিছিলের অনুুমতি দেওয়া হয়ে গিয়ে থাকে, এক্ষেত্রে তাও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। রাজ্যে ঝড়ের বেগে বাড়তে থাকা সংক্রমণের জেরেই কার্যত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বার শেষ দু’দফার ভোট একদিনে অনুষ্ঠিত করা হয় কি না সে দিকেও নজর রয়েছে। কেননা, আজও শেষ দু’দফার ভোট একসঙ্গে চেয়ে আরেকটি চিঠি দিয়ে কমিশনের কাছে আর্জি জানিয়েছে তৃণমূল। অন্যদিকে, আগামিকাল বিকেলে সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠকে বসছে কমিশনের ফুল বেঞ্চ। ফলে বড় কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও হতে পারে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।

নতুন নির্দেশিকায় নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে যে, রাজনৈতিক দলগুলি করোনা বিধি ঠিক মতো পালন করছে না। বহু ক্ষেত্রেই ঢিলেমি দেখা যাচ্ছে। সেই কারণে এতটা কড়া সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, কমিশনের এই সিদ্ধান্তের পিছনে প্রচ্ছন্নভাবে আজ কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণও একটা বড় প্রভাব ফেলেছে।

কেননা কোভিড-কালে জমায়েতের বিরোধিতা করে আজ একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি চলাকালীন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত। রাজ্যে হু-হু করে সংক্রমণ বাড়লেও কমিশন কেন কেবল গাইডলাইন জারি করে চুপ করে যাচ্ছে, এই নিয়ে প্রশ্ন তোলে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি টিবি এন রাধাকৃষ্ণণের কথায়, করোনা রুখতে এই মুহূর্তে কমিশনের ভূমিকা অত্যন্ত কঠোর হওয়া উচিত ছিল। অথচ তারা সার্কুলার জারি করেই থেমে গিয়েছে। কোনও পদক্ষেপের চিন্তাভাবনাই নেই। প্রধান বিচারপতির কথায়, “সার্কুলার নয় পদক্ষেপ চাই।”

আরও পড়ুুন: এভাবে করোনা ছড়াচ্ছে, কমিশন কী করছে! ভোটপ্রচারে লাগামছাড়া জমায়েত নিয়ে চরম অসন্তোষ হাইকোর্টের

এ প্রসঙ্গে এদিন প্রধান বিচারপতি মনে করান প্রয়াত প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার টি এন শেষনকে। বলেন, ভোটের সময় এই মানুষটির ভূমিকা ছিল অত্য়ন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কমিশনের সঙ্গে সাধারণ মানুষের পরিচয়ই হয়েছিল তাঁর হাত ধরে। অতিমারিকালে কেন্দ্রীয় কমিশন টি এন শেষনের দশ ভাগের এক ভাগ করে দেখাক। বস্তুত আদালতের এই কড়া পর্যবেক্ষণের পরই এই পদক্ষেপ করল কমিশন।