AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Sonagachi Red Light Area: সোনাগাছিতে কেটেছে ছেলেবেলা, সেই অভিজিৎ আজ আম-বাঙালির গর্ব

Sonagachi News: জ়ানা ব্রিসকি ও রস কাউফম্যান একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছিলেন। 'নাম ব্রন ইনটু ব্রথেলস'। ২০০৪ সালে মুক্তি পায় সেটি। এই তথ্যচিত্রে অভিজিৎ হালদার-সহ সোনাগাছিতে জন্মানো আট শিশুদের জীবন কাহিনি তুলে ধরা হয়। সিনেমাটি সেরা তথ্যচিত্র হিসাবে অস্কার জেতে ২০০৫ সালে। তথ্যচিত্রটি অংশ হিসাবে পরিচালকরা অভিজিৎ সহ শিশুদের শেখান কীভাবে তাদের জীবন ও আশপাশের অবস্থার ছবি তুলতে হয়।

Sonagachi Red Light Area: সোনাগাছিতে কেটেছে ছেলেবেলা, সেই অভিজিৎ আজ আম-বাঙালির গর্ব
বাঙালি ছেলের বিশ্বজয়Image Credit: Getty Images
| Updated on: Mar 01, 2025 | 9:18 PM
Share

কলকাতা: সোনাগাছি! নাম শুনলে অনেকই ভ্রু কোঁচকান। অনেকে গোপনে ঘুরে আসেন। একবিংশ শতাব্দীতেও জনসাধারণের মনে এমন একটা ভাব, যেন সোনাগাছি এই সমাজের একটা দ্বীপ। এই সোনাগাছিতে জন্মানো সন্তানদের জীবন যে কতটা দুর্বিসহ পরিস্থিতির মধ্যে কাটে সেই ধারণাই হয়ত নেই অনেকের। আজকের এই প্রতিবেদন সেই রকমই। সোনাগাছির ‘পতিতালয়ে’ জন্মানো বাংলার ছেলে অভিজিৎ হালদার জীবনের লড়াইয়ের কাহিনি। কীভাবে প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে দিয়ে বেড়ে উঠে আজ তিনি সফল পরিচালক। করছেন বিশ্বজয়।

কে অভিজিৎ হালদার?

জ়ানা ব্রিসকি ও রস কাউফম্যান একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছিলেন। ‘নাম ব্রন ইনটু ব্রথেলস’। ২০০৪ সালে মুক্তি পায় সেটি। এই তথ্যচিত্রে অভিজিৎ হালদার-সহ সোনাগাছিতে জন্মানো আট শিশুদের জীবন কাহিনি তুলে ধরা হয়। সিনেমাটি সেরা তথ্যচিত্র হিসাবে অস্কার জেতে ২০০৫ সালে। তথ্যচিত্রটি অংশ হিসাবে পরিচালকরা অভিজিৎ সহ শিশুদের শেখান কীভাবে তাদের জীবন ও আশপাশের অবস্থার ছবি তুলতে হয়। তথ্যচিত্রটিতে দেখা যায় শিশুরা নিজেরা আশপাশের এলাকার ছবি তুলছে। খেলে বেড়াচ্ছে। এই আটজনের মধ্যে সব থেকে বেশি নজর কেড়েছিলেন অভিজিৎ হালদার।

অভিজিৎ হালদার

২০১০ সালে অভিজিৎ বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, সেই সময় তিনি জানতেনই না কী হচ্ছে। তাঁরা ভেবেছিলেন কোনও হিন্দি সিনেমার শুটিং হচ্ছে। তথ্যচিত্রটিতে দেখানো হয়েছিল তাঁর বাবা একজন ড্রাগ অ্যাডিকটেড ব্যক্তি। তাঁর মাও খুব বেশিদিন বেঁচে ছিলেন না।

তথ্যচিত্রটি রিলিজ করার পর এই শিশুদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে ‘কিডস ওইথ ক্যামেরা’ নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাঁরা শিশুদের ফটোগ্রাফি শেখানোর পাশাপাশি তাঁদের পড়াশোনারও দায়িত্ব গ্রহণ করে। সেই সময় অভিজিতের তোলা ফটো সেই সময় খুব জনপ্রিয়তা পায় কলকাতা ও নিউ ইয়র্কে।

এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। এরপর আমস্টারডামের একটি ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতায় ডেকে পাঠানো হয় তাঁকে। ততক্ষণে ইংরেজি ভালই রপ্ত করে ফেলেছেন তিনি। এরপর ২০০৫ সাল নিজেই তিনি আমেরিকার নিউ হ্যাম্পায়ার স্কুলে পড়ার জন্য আবেদন জানান। সেই সময়ও তাঁর পড়াশোনার খরচ জোগায় ওই সংস্থা। ২০০৭ সালে অভিজিৎ হালদার পেশা হিসাবে সিনেমা পরিচালনাকেই বেছে নেন তিনি। তিনি বলেছেন, “সিনেমা পরিচলনা খুবই মজাদার” তবে তিনি নিশ্চিত ছিলেন না নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিল্ম স্টাডিজ এর পড়াশোনার অর্থবহন করতে পারবে কি না। তবে আর্শীবাদ হয়ে নেমে এল সেই ‘কিডস ওইথ ক্যামেরা’ নামক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তারাই অভিজিতের ডিগ্রি কোর্সের পড়াশোনার খরচ বহন করে। অভিজিৎ হালদারের শিক্ষক রিচার্ড লিটভিন জানিয়েছিলেন, যতজন পড়ুয়া এই কোর্সের জন্য ভর্তি হয়েছিল তাঁদের মধ্যে সব থেকে কৌতুহলী ছিলেন অভিজিৎ।

পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি স্প্যানিস ও ফরাসি ভাষা শেখা শুরু করেন। অর্থ উপার্জনের জন্য আমেরিকায় পার্ট টাইম চাকরি করাও শুরু করেন। এই টাকা দিয়ে বাবার চিকিৎসা, ঠাকুমার চিকিৎসা করাতে শুরু করেন অভিজিৎ। তিনি বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, “নিজের অভিনীত তথ্যচিত্রটি প্রথমবার তিনি দেখেছিলেন ২০০৫ সালে। তখনই বুঝেছি সাধারণ মানুষ আমাদের গল্প জানতে চায়।”

নিষিদ্ধ পল্লী থেকে বেরিয়ে সেই ছোট্ট ছেলেটি এখন পরিচালক। তিনি একটি সিনেমাও বানিয়েছেন। যার মধ্যে দেখানো হয়েছে নিষিদ্ধ পল্লী থেকে উঠে আসনা এক মেয়ের জীবন যুদ্ধের কাহিনি। যে কোনও মানুষের জীবনে শিক্ষা যে কতটা জরুরি তা তুলে ধরেছেন অভিজিৎ। তিনি বলেছেন, “ইস যদি নিউ ইয়র্কটাও কলকাতা হত। তাহলে আমিও হয়ত বাড়িতেই থাকতাম।”

(বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী)