Jodhpur Park Coffee Shop Case: খাস কলকাতায় ক্যাফেতে তোলাবাজি, গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত-সহ ৫!
Kolkata: অভিযোগ, এরপরই বুধবার রাতে আচমকাই তাঁক যোধপুর পার্কের (Jodhpur Park) কফিশপে ১০-১২ জন যুবক এসে চড়াও হন। অভিযোগকারী জানান, প্রথমেই ওই যুবকরা তাঁর হাত থেকে মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন
কলকাতা: কফিশপের সামনে দাঁড়িয়ে আঙুল উঁচিয়ে দোকানের মালকিনকে শাসাচ্ছেন এক ব্যক্তি। সঙ্গে একাধিক সঙ্গীও রয়েছেন। না, কোনও প্রান্তিক এলাকার ছবি নয় এটিই! সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া এই ছবিটি খাস কলকাতার (Kolkata) একটি ক্যাফেটেরিয়ার। শহরে চাঁদার জুলুমবাজির শিকার তরুণী। একটি জলসার জন্য চাঁদা চাওয়াকে কেন্দ্র করে গোলমালের সূত্রপাত বলে জানা গিয়েছে। বুধবার রাতে লেক থানা (Lake Police) এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। জানা গিয়েছে ওই তরুণী একটি কফি শপের (Coffee Shop) মালিক। চাঁদার দাবিতে তাঁকে একদল যুবক হেনস্থা করে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত বিজয় দত্ত-সহ আরও পাঁচ জন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা এলাকায়। যোধপুর পার্কের ওই ক্যাফেটেরিয়ার মালকিনের অভিযোগ, বেশকিছু দিন ধরেই একদল যুবক জলসার চাঁদা বাবদ টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু ওই তরুণী সেই টাকা দিতে চাননি।
অভিযোগ, এরপরই বুধবার রাতে আচমকাই তাঁক যোধপুর পার্কের (Jodhpur Park) কফিশপে ১০-১২ জন যুবক এসে চড়াও হন। অভিযোগকারী জানান, প্রথমেই ওই যুবকরা তাঁর হাত থেকে মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন। শুরু হয় টাকার জন্য জোর জবরদস্তি। অভিযোগ, টাকা না দিলে কফি শপে ভাঙচুর চালানোর হুমকিও দেয় ওই যুবকরা। এমনকী অভিযোগকারী তরুণীকে প্রাণে মারার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ক্যাফের সিসিটিভি ফুটেজে ধরাও পড়ে সেই ছবি।
এরপরই বুধবার রাতে লেক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই তরুণী। এদিকে থানা থেকে বেরোতেই ওই তরুণীকে ফের ওই যুবকেরা ঘিরে ধরে। এরপর লেক থানায় ফোন করলে পুলিশ এসে ওই তরুণী ও তাঁর বন্ধুদের উদ্ধার করে। এরপরই মহিলা কমিশনের দ্বারস্থ হন অভিযোগকারী।
সূত্রের খবর, চাঁদা চাওয়ার ঘটনায় এলাকায় পরিচিত তৃণমূল নেতা বিজয় দত্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শোনা যাচ্ছে তিনিই মূল অভিযুক্ত। বাকিরা হলেন ভূপাল মণ্ডল, সনৎ নস্কর, ঝন্টু সিং, শত্রুঘ্ন মাহাতো।
ঘটনায়, ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মৌসুমী দাসের কথায়, “আমি বিষয়টা কিছুই জানতাম না। আমাকে এখানে জড়াবেন না। আমি কোনওরকম টাকা তোলাকে সমর্থন করি না। ওরা আমার অনুগামী নয়। আমি পার্টিতে নতুন, তাই আমার অনুগামী তৈরি হয়নি।” শেষে তৃণমূল কাউন্সিলর দাবি করেছেন, বিজয় দত্তকে তিনি পার্টির সিনিয়র লিডার হিসেবেই জানেন। স্বাভাবিকভাবেই খোদ তৃণমূল নেতার এই ঘটনায় নাম জড়ানোয় বেশ অস্বস্তিতে তৃণমূল।
এ প্রসঙ্গে রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “বুধবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ আমার কাছে একটা ফোন আসে। অভিযোগকারী জানান, কিছুক্ষণ আগে একদল ছেলে এসে তাঁকে হুমকি দিয়েছে, চাঁদা চেয়ে জুলুমবাজি করেছে। ওনাদের কথা অনুযায়ী, মনে হয় ৫০ হাজার টাকা চেয়েছে। কিন্তু সে টাকা তাঁরা দিতে পারেননি। ওনারা বলেছিলেন, লকডাউনে ব্যবসা মার খেয়েছে। এরপর ওই যুবকরা চলে যায়। পরে ফের সন্ধ্যাবেলায় আসে ওরা। এসে বাজে ব্যবহার করে এবং বলে যদি চাঁদা না দেয় তা হলে এখানে ব্যবসাই করতে দেবে না। দোকান ভেঙে দেবে। অন্যান্য ক্ষতিও করে দেবে বলে হুমকি দিয়েছে। এই ফোনটা আমার কাছে আসার পরই প্রথম কাজ হয় থানায় যোগাযোগ করা। আমি সরাসরি থানার ওসিকে ফোন করি। উনি ফোন ধরেন এবং বলেন ওনাদের থানায় আসতে বলুন, আমি আছি।”
লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জানান, প্রতি মুহূর্তের খবরাখবরই ওই তরুণী তাঁকে দিচ্ছিলেন। রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের কথায়, “আমি ওনাদের সঙ্গেই ছিলাম। ওনারা যখন যাদবপুর থানার কাছে পৌঁছন তখন জানান দু’জন বাইকে চেপে এসে তাঁদের রাস্তায় আটকান। এরপর ফের আমি থানায় যোগাযোগ করি। ওনারা নিশ্চিন্তেই বাড়িতে ফেরেন।” এই ঘটনায় স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে শহরের নিরাপত্তা নিয়ে। খাস কলকাতায় এধরনের ঘটনা, তাও সেখানে জড়িয়ে শাসক শিবিরের নাম জড়ানোয় উঠছে প্রশ্নও। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, গোটা ঘটনাই নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে দেখা হবে।
আরও পড়ুন: পড়ুয়াদের বিক্ষোভে প্রবল ধস্তাধস্তি সল্টলেকে, অসুস্থ এক ছাত্রী