Kolkata Municipal Corporation: গত ৫ মাসে তিলজলা-তপসিয়া-রাজাবাজার থেকে গাদা-গাদা জন্ম-মৃত্যুর সার্টিফিকেট ইস্যু, রিপোর্ট দিল পুরসভা
Kolkata: তবে সেই রিপোর্টে উল্লেখযোগ্য ভাবে দেখা গেল মূলত যে এলাকাগুলি থেকে গেরুয়া শিবির অভিযোগ করছিল, সেই এলাকাগুলি যে বোরোর অন্তর্গত সেখানেই সব থেকে বেশি জন্ম এবং মৃত্যু সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে। অর্থাৎ গার্ডেনরিচ, রাজাবাজার, মেটিয়াবুরুজ, তপসিয়া, তিলজলার মত এলাকা রয়েছে বলেই রিপোর্ট নিয়ে দাবি বিজেপির।

কলকাতা: ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনী (এসআইআর)-এর আবহে কলকাতা পুরসভা লাগামহীন ভাবে জন্মমৃত্যুর শংসাপত্র দিচ্ছে। এই অভিযোগ বারবার তোলা হয়েছে গেরুয়া শিবিরের তরফে। কিন্তু কত পরিমাণ জন্ম এবং মৃত্যু সার্টিফিকেট ইস্যু করা হচ্ছে,তা নিয়ে উত্তর দিতে চায়নি কলকাতা পৌরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ। অবশেষে জন্ম এবং মৃত্যু শংসাপত্র কত দেওয়া হয়েছে,তার তথ্য প্রকাশ্যে আনতে বাধ্য হল কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ। বৃহস্পতিবার কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ সদস্য অতীন ঘোষ চলতি বছরের ১ আগস্ট থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত কত সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে তার রিপোর্ট পেশ করলেন।
কী রয়েছে রিপোর্টে?
তবে সেই রিপোর্টে উল্লেখযোগ্য ভাবে দেখা গেল মূলত যে এলাকাগুলি থেকে গেরুয়া শিবির অভিযোগ করছিল, সেই এলাকাগুলি যে বোরোর অন্তর্গত সেখানেই সব থেকে বেশি জন্ম এবং মৃত্যু সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে। অর্থাৎ গার্ডেনরিচ, রাজাবাজার, মেটিয়াবুরুজ, তপসিয়া, তিলজলার মত এলাকা রয়েছে বলেই রিপোর্ট নিয়ে দাবি বিজেপির।
পুরসভার রিপোর্ট অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে, বেশ কয়েকটি বরো সর্ম্পকে….
জানা যাচ্ছে, ৭ নম্বর বোরো থেকে জন্ম ও মৃত্যু শংসাপত্র ইস্যু করা হয়েছে যথাক্রমে-১৩০১টি এবং ২৩১টি। এই বোরোর অধীনেই পরে তিলজলা, তপসিয়া,পার্ক সার্কাস সহ বিস্তীর্ণ এলাকা।
১২ নম্বর বোরো থেকে জন্ম ও মৃত্যু শংসাপত্র ইস্যু করা হয়েছে যথাক্রমে — ৯৮৩টি এবং ৫৭৯টি। এই বোরোর অধীনে ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের দু’ধার সহ যাদবপুরের বিস্তীর্ণ অংশ পড়ে। যে এলাকাগুলিতে চিকিৎসার জন্য এসে বাড়ি ভাড়া করে এসে বাংলাদেশীদের বসবাস বলে অভিযোগ।
অপরদিকে, ১৫ নম্বর বোরো থেকে জন্ম ও মৃত্যু শংসাপত্র ইস্যু করা হয়েছে যথাক্রমে — ৫১৬টি এবং ২৮৪টি। এই বোরোর অধীনে গার্ডেনরিচ এবং মেটিয়াবুরুজ এলাকা সম্পূর্ণ পড়ে।
৩ নম্বর বোরো থেকে জন্ম শংসাপত্র ইস্যু করা হয়েছে-৯৪৬টি এবং ৩১৪টি। এই বোরোর অধীনে নারকেলডাঙা, রাজাবাজারের একাংশ পড়ছে।
এছাড়াও কলকাতা পুরসভার সদর দফতর। যেখান থেকে জন্ম এবং মৃত্যু শংসাপত্র ইস্যু করা হয়েছে যথাক্রমে-১৩২৬টি এবং ৭০১টি।
গেরুয়া শিবিরের দাবি, যে ধরনের অভিযোগ তোলা হয়েছিল, কাজে যথার্থ তা এই রিপোর্ট থেকেই প্রমাণিত। শুধুমাত্র এসআইআর আতঙ্কে নয়, ভোটার তালিকায় ভোটার নাম তুলতে এই ধরনের জন্মসংসাপত্র গুলোকে ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি করছে বিজেপি। সজল ঘোষ বলেন, “আমরা এটা দেখিয়ে দেব রাজাবাজারে আর বৌবাজারে কত জন্ম কত মৃত্যু। কলাবাগানে কত আর তালতলায় কত আমরা দেখাব। এগুলো পুরনো বার্থ সার্টিফিকেট। এসআইআর ডকুমেন্ট হিসাবে দেখা হল।”
যদিও জোড়াফুল শিবিরের দাবি, জন্ম এবং মৃত্যু শংসাপত্র যেই ধরনের আবেদন এসেছে, নথি সঠিক ভাবে খতিয়ে দেখে সেইমতে ইস্যু করা হয়েছে। এখানে ভুয়ো পরিচয় বা নথি জমা পড়ার কোনও প্রশ্নই উঠছে না। তবে এসআইআর আবহে যেভাবে জন্ম শংসাপত্র বা মৃত্যু শংসাপত্র নেওয়ার জন্য ভিড় দেখা গিয়েছিল, তা নিয়ে সন্দেহ যে অমূলক ছিল না, সেটা এই রিপোর্ট দেখেই পরিষ্কার, বলে দাবি বিভিন্ন মহলের।
