প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করতে লালার মাসে খরচ হত ৪০ কোটি, ব্যাগে করে টাকা পৌঁছত দক্ষিণ কলকাতায়!
লালাকে মাসে ৪০ কোটি টাকারও বেশি খরচ করতে হত শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের খুশি রাখার জন্য।
কলকাতা: এক-দু’লাখ নয়। এক-দু’কোটিও নয়। কয়লা পাচারকারী অনুপ মাজি ওরফে লালা যে অঙ্কে টাকা পাঠাত প্রভাবশালীদের, তা শুনলে চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। লালার বাড়ি ও অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া খাতা ও তার সাগরেদদের জেরা করে সিবিআই গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, লালাকে মাসে ৪০ কোটি টাকারও বেশি খরচ করতে হত শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের খুশি রাখার জন্য।
চাঞ্চল্যকর বিষয় হল, এই পরিমাণ টাকার বেশিরভাগই এসে পৌঁছত কলকাতায় (Kolkata)। তদন্তে ‘মানি ট্রেল’ অর্থাৎ কাদের কাছে সেই টাকা পৌঁছত তাও জানতে পেরেছে সিবিআই। কয়লা পাচার কাণ্ডের তদন্তে ইতিমধ্যেই লালার এক ঘনিষ্ঠ সাগরেদ নীরজ সিংহকে জেরা করেছে সিবিআই। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, এই নীরজই টাকা পৌঁছে দিত প্রভাবশালীদের কাছে। ইতিমধ্যেই তাঁর বয়ান রেকর্ড করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা। তদন্তের শুরুতেই লালার অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া খাতা, ডায়েরি ও নথি ঘেঁটে দেখে গোয়েন্দারা ৪০ কোটি অঙ্কের কথা জানতে পেরেছেন।
কীভাবে টাকা পৌঁছত প্রভাবশালীদের কাছে?
সিবিআই গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, সব টাকা পৌঁছত নগদে। কিন্তু এত পরিমাণ টাকা তো একবারে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। পাশাপাশি সন্দেহও হতে পারে। তাই গোটা মাস জুড়ে দফায় দফায় ব্যাগভর্তি টাকা আসত লালার কাছ থেকে। সেই টাকা পাওয়ার পর ব্যাগে ভরে বাইকে দক্ষিণ কলকাতার বেশ কয়েকটি ঠিকানায় পৌঁছে দিত নীরজ। প্রভাবশালীদের প্রত্যেক মাসে টাকা পৌঁছে দেওয়াই কাজ ছিল তাঁর। এবার সেই প্রভাবশালীদের সম্পর্কেও খোঁজ নিচ্ছে গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন: কলকাতায় ফেজ-৩ ট্রায়াল হবে স্পুটনিক ভি-র! ছাড়পত্র দিল পিয়ারলেস
সিবিআই আরও জেনেছে, রাজনৈতিক প্রভাবশালী ছাড়াও পুলিসের একাংশের কাছে মোটা টাকা পৌঁছে দিত লালার সাগরেদরা। সেই টাকার পরিমাণও নেহাত কম নয়। কারা ছিল লালার ‘পে-রোলে’ গোয়েন্দারা ইতিমধ্যেই তা জানতে পেরেছেন। গরুপাচার কাণ্ডের মতো এক্ষেত্রেও পুলিসকর্মীদের জেরা করতে চায় গোয়েন্দারা। তবে আপাতত লালাকে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নেওয়াই লক্ষ্য গোয়েন্দাদের।