Tangra Fire: আগুন নিভেছে, আতঙ্ক এখনও পিছু ছাড়ছে না ট্যাংরাবাসীর
Tangra Fire: একটি বহুতলের একাংশেও আগুনের তীব্রতায় ফাটল ধরা পড়েছে। অনেকেই আতঙ্কে বাড়ির ছাদে রাত কাটিয়েছেন। যে ক্ষতি তাঁদের হয়েছে, তা কীভাবে সামাল দেবেন তা ভেবেই কূল-কিনারা করতে পারছেন না এলাকাবাসীরা।
কলকাতা : রবিবার দুপুরের আগুন যে কতটা ভয়ঙ্কর ছিল, তা ট্যাংরার ক্রিস্টোফার রোডের ওই মানুষগুলোর চোখমুখ দেখলেই বোঝা যায়। আগুন নিভেছে। রাত পেরিয়ে সকাল হয়েছে। কিন্তু আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না এলাকাবাসীদের। গতকাল দুপুরে নিজেদের শেষ সম্বলটুকু বাঁচানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা দেখা গিয়েছিল তাঁদের মধ্যে। দমকল ঢুকতে দেরি হওয়ায়, এলাকাবাসীরাই হাত লাগান আগুন নেভানোর কাজে। হাতের সামনে যে যা পেয়েছেন, তাই দিয়েই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছেন। এমনকী বহুতল এক বাড়ির ছাদের জলের ট্যাঙ্কের পাইপ ভেঙেও জল দিতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু কেন ট্যাংরার মানুষদের এই হয়রানি? কেন এক মাসের মধ্যে পর পর দুইবার আগুন লাগল ট্যাংরায়? ওই গ্যারেজগুলির অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই।
এদিকে একটি বহুতলের একাংশেও আগুনের তীব্রতায় ফাটল ধরা পড়েছে। অনেকেই আতঙ্কে বাড়ির ছাদে রাত কাটিয়েছেন। যে ক্ষতি তাঁদের হয়েছে, তা কীভাবে সামাল দেবেন তা ভেবেই কূল-কিনারা করতে পারছেন না এলাকাবাসীরা। স্থানীয় এক মহিলা বলেন, “দমকল দেরি করে এসেছিল। আমাদের ছেলেরাই সব আগুন নিভিয়েছে। এখানে প্রায়ই আগুন লাগে। এক বছরের মধ্যে দুই-তিন বার আগুন লেগেছে। সিলিন্ডার ফেটেছে। এখানে কোনও নিয়ম মানা হয় না। দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই কাজ হয়ে যাচ্ছে। মানুষ দুপুরে ঘুমায়, সেই উপায়ও নেই। আর এখন আগুন লাগার পর মালিক পালিয়ে গিয়েছে। আর এখন আমরা ভুগছি। ঘরে আমাদের এসি ফেটে গিয়েছে। বাচ্চা নিয়ে সারা রাত বাইরে ছিলাম। আমাদের কথা শোনার জন্য কেউ নেই।”
এলাকাবাসীদের কথায়, “রবিবার ছিল বলে পাড়াটা বেঁচে গিয়েছে। রবিবার না হলে আমাদের পুরো পাড়াটাই খাক হয়ে যেত।” উল্লেখ্য, রবিবার ছুটির দিন হওয়ার কারণে এলাকার বেশিরভাগ যুবকই বাড়িতে ছিল। আগুন লাগার পর সরু রাস্তা হওয়ার কারণে দমকলকে আগুন লাগার জায়গায় পৌঁছাতে সমস্যা হওয়ায় পাড়ার যুবকরাই আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। এলাকাবাসীদের অনেকেই বলছেন, ঘরের জিনিসপত্র পুড়ে তো গিয়েছেই, তার উপর অনেক জিনিস চুরিও হয়ে গিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, “এখানে আবার গ্যারেজ করবে বলছে। আমরা এখানে আর গ্যারেজ করতে দেব না। এবার গ্যারেজ করতে গেলে আমরা মামলা করব।”
এখন খোলা আকাশের নীচে এক চূড়ান্ত অসহায়তার মধ্যে রাত কাটিয়েছেন তাঁরা। এখন তাঁরা কী করবেন, কীভাবে সব সামাল দিয়ে উঠবেন? সরকারের থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি। এখন তাঁদের আশা, যদি তাঁদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে তাঁদের উপকার হয়।