Maldah: ভুল বুঝিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা টাকা, মেডিক্যাল কলেজে সক্রিয় চক্র
Maldah: একটি ল্যাবে রক্ত-সহ একাধিক পরীক্ষা করানো হয়। এর বিনিময় ৬৭০ টাকা নেওয়া হয় তাঁর কাছ থেকে। পরে বিষয়টি জানাজানি হতেই চক্ষুচড়কগাছ হয় ওই রোগীর আত্মীয়র। বিষয়টি লিখিত আকারে জানানো হয়। তিনি জানান, হাসপাতালের ভেতরেই এইভাবে দালাল চক্র গজিয়ে উঠলে গরিব মানুষগুলো যাবে কোথায়?
মালদহ: আবারও সরকারি হাসপাতালে দালাল চক্রের রমরমা। কখনও হাসপাতালে বিক্রি করা হচ্ছে সরকারি ওষুধ। কখনও বিভিন্ন পরীক্ষা করানোর নামে রোগীদের ভুল বুঝিয়ে বা হুমকি দিয়ে আদায় করা হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। মালদহের হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডী হাসপাতাল এবং মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অভিযোগ।
মালদহের হবিবপুর ব্লকের বুলবুল চণ্ডী গ্রামীণ হাসপাতালে রোগীর আত্মীয়দের ভুল বুঝিয়ে রক্ত-সহ একাধিক পরীক্ষা করানোর অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সুশান্ত সিংহ নামে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই রোগীর আত্মীয়র পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, মালদহের নয় মাইল এলাকার বাসিন্দা দময়ন্তী মণ্ডল তাঁর স্বামীর প্রচন্ড জ্বর হওয়ায় বুলবুলচণ্ডী গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন। অ্যাম্বুলেন্স থেকে নেমে হাসপাতালের ভিতরে ঢুকতেই দালাল চক্র ঘিরে ফেলে ওই রোগীর আত্মীয়কে। এরপরই তাড়াতাড়ি ভর্তি করে দেওয়া হবে এবং তাঁর স্বামীর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে একাধিক পরীক্ষার কথা বলা হয়।
একটি ল্যাবে রক্ত-সহ একাধিক পরীক্ষা করানো হয়। এর বিনিময় ৬৭০ টাকা নেওয়া হয় তাঁর কাছ থেকে। পরে বিষয়টি জানাজানি হতেই চক্ষুচড়কগাছ হয় ওই রোগীর আত্মীয়র। বিষয়টি লিখিত আকারে জানানো হয়। তিনি জানান, হাসপাতালের ভেতরেই এইভাবে দালাল চক্র গজিয়ে উঠলে গরিব মানুষগুলো যাবে কোথায়?
এদিকে বুলবুলচণ্ডী গ্রামীণ হাসপাতালের পাশাপাশি মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও দালাল চক্রের অভিযোগ উঠেছে। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনেই রোগীর আত্মীয়দের বেআইনিভাবে ওষুধ বিক্রির ভিডিয়ো সামনে এসেছে। যদিও বিষয়টি নিরাপত্তারক্ষীদের নজরে আসতেই ওই ব্যক্তির পিছু ধাওয়া করতেই ওষুধ ফেলে পালিয়ে যান ওই ব্যক্তি।
তবে দুটো ঘটনারই তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি। তিনি বলেন, “বুলবুলচণ্ডী গ্রামীণ হাসপাতালের বিষয়টি নিয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক খতিয়ে দেখছেন। সংশ্লিষ্ট গ্রামীণ হাসপাতালের রোগীর আত্মীয়রা ছাড়াও বহিরাগতরা প্রবেশ করছে। হাসপাতালে চারিদিকে বাউন্ডারি ওয়াল নেই, যার ফলে অনেকেরই আনাগোনা হচ্ছে।” অন্যদিকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওষুধ বিক্রির দালাল চক্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই দু’বার জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি বিষয়টি মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।
আর এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চর্চা। বিজেপির উত্তর মালদহের সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বলেন, “তৃণমূলের মদতে এই দালাল চক্রগুলি গজিয়ে উঠছে। সেক্ষেত্রে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনকে অবিলম্বে এই দালাল চক্র বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হবে।” পাল্টা রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী বলেন, “হাসপাতালগুলিতে দালাল চক্র গজিয়ে উঠতে দেওয়া যাবে না। আমাদের পুলিশ প্রশাসন যথেষ্ট সজাগ রয়েছে।”