Mamata Banerjee: ‘মেট্রোর কাজ চলছে, আগেই বলেছিলাম…’, সল্টলেকে জমা জল নিয়ে একডালিয়ার পুজোর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কী বললেন মমতা?
Mamata Banerjee On Salt Lake Water Log: তিনি বলেন, "সাত ঘণ্টার মধ্যে আমরা জল ক্লিয়ার করতে পেরেছি। এটাই অনেকটা। এটা মানুষের জন্যই সম্ভব হয়েছে। কাল রাত ২টো পর্যন্ত খবর নিয়েছি। আবার জল ঢুকছে কিনা দেখার জন্য। কলকাতার মেজর এলাকায় জল নামিয়ে দিয়েছি।"

কলকাতা: আজ তৃতীয়া। তৃতীয়াতে একডালিয়া থেকে উদ্বোধন শুরু করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন, ৪০টা পুজো উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন পুজোর উদ্বোধন করতে গিয়েও কলকাতার গতকালের দুর্যোগ, পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার রাতভর বৃষ্টিতে গতকাল শহর শহরতলির যে অবস্থা হয়েছিল, সাম্প্রতিক অতীতে শেষ কবে এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল শহরবাসী, তা স্মৃতি হাতড়েও ঠাওর করা যায় না। তবে এ বন্যা যেন স্মৃতি ফেরাল ‘৭৮ সালের দুর্যোগকেই। এদিন সেকথাই শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। বললেন, “বাঁধ ভাঙা বৃষ্টি, এই বৃষ্টি দীর্ঘদিন হয়নি। ১৯৭৮ সালেরও বেশি। ”
একডালিয়ার পুজোর উদ্বোধন করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ইশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, যাতে দুর্যোগ থেকে মুক্তি মেলে। কলকাতাটা বাংলার ঠিক নৌকার মতো।” তবে কলকাতার জল জমা নিয়ে এদিনও তিনি কেন্দ্রকেই দুষলেন তিনি। বললেন, ” বিহার-উত্তরপ্রদেশের গঙ্গার জল চলে আসছে আমাদের রাজ্যে। কিন্তপ ২০ বছর ধরে কোনও ড্রেজিং হয় না। ড্রেজিং আমাদের হাতে নেই। এটা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে। পাঞ্চেতের জল ঢোকে। আমি যখন নবান্নে যাই, গঙ্গা দেখতে দেখতে যাই, কতটা জল রয়েছে। ক’দিন আগে দেখেছিলাম, গঙ্গা টইটুম্বুর, আমি ভাবি, এত জল ছাড়ছে? ”
তবে খুব দ্রুত যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শহর থেকে জল নামানো হয়েছে বলেও দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “সাত ঘণ্টার মধ্যে আমরা জল ক্লিয়ার করতে পেরেছি। এটাই অনেকটা। এটা মানুষের জন্যই সম্ভব হয়েছে। কাল রাত ২টো পর্যন্ত খবর নিয়েছি। আবার জল ঢুকছে কিনা দেখার জন্য। কলকাতার মেজর এলাকায় জল নামিয়ে দিয়েছি।” তবে আজ সকালেও শহরের একাধিক জায়গায় এখনও জল জমে রয়েছে। বিশেষত ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি, কলেজ স্ট্রিট, বালিগঞ্জের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর।
মঙ্গলবার বিধাননগর, সল্টলেক, করুণাময়ী- গোটা অফিসপাড়ার পরিস্থিতি ছিল ভয়ঙ্কর। তবে এই এলাকায় জল জমা নিয়ে কিছুটা হলেও মেট্রোর গাফিলতিকেও টানেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “মেট্রো কাজ হচ্ছে। ফলে বালির বস্তা, পাইপ সব পড়ে রয়েছে। অফিস পাড়ার গিয়ে দেখলাম, সল্টলেক, বিধাননগরে প্রচুর জল। আগেও মেট্রোকে বলা হয়েছিল, গোটা এলাকার পরিস্কার করে দিতে। কোথাও তুলে নিয়ে রাবিশ ফেলতে। পুজোর সময়ে ওখানে ফেলে রাখা যাবে না। অনেক সময়েই নালাগুলো বন্ধ হয়ে যায়। প্রত্যেকটা পাড়ায় ডাস্টবিন করে দেওয়া হয়েছে, তারপরই বাড়ির ময়লা, ইট বালি, সিমেন্ট সব নালায় ফেলা হচ্ছে।”
জমা জলে কলকাতার বুকে ঘটে গিয়েছে মর্মান্তিক ঘটনাও। একদিনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৯ জনের। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তাঁদের পরিবারকে এককালীন ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের এক সদস্যকে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে CESC-রও পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি তুললেন মমতা। তিনি বললেন, “বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের পরিবারকে আমরা ২ লক্ষ টাকা করে দিচ্ছি। আমরা দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারি না। তাছাড়াও CESC কে বলেছি, পাঁচ লক্ষ টাকা করে দিতে, কারণ ওরাও দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারে না।”
